কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবিলম্বে জামিন ও মুক্তি দাবি করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার অবশ্যই সুযোগ আছে। সম্পূর্ণ জামিনযোগ্য মামলায় তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে। এটা হতে পারে না। বন্দী অবস্থায় তাঁর কিছু হয়ে গেলে এর সব দায় এ সরকারকে নিতে হবে। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে তাঁর চেম্বারে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাঈদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারার অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী, জেএসডির মো. সিরাজ মিয়া, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন। আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার মামলার যে শুনানি চলছে, এরকম মামলায় তাঁর জামিন পাওয়ার সুযোগ আছে কিনা? সে প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, সুযোগ অবশ্যই আছে। আমি বলছি, সুযোগ অবশ্যই আছে। এর থেকে পরিষ্কার করে আর কী বলব। তাছাড়া মানবিক কারণেও এ মামলায় তিনি জামিন পাওয়ার যোগ্য।  সেটাও আজকের সভার সিদ্ধান্তে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। বৈঠকে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। বক্তব্যে বলা হয়, সভা মনে করে- বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিগত ৬৬৪ দিন ধরে বন্দী করে রাখা হয়েছে। যে মামলায় তাঁকে সাজা দেওয়া হয়েছে- তা তাঁর সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার বিবেচনায় আমরা তাঁর আশু মুক্তি দাবি করছি। এ দাবি মানবিক এবং তিনি জামিন পাওয়ার অধিকার রাখেন। অন্যথায় তার দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে সরকারের ওপর বর্তাবে।

যদি কোনো কারণে তার প্রতি সুবিচার না করা হয়, অবিচার করা হয়, জামিন দেওয়া না হয়, মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে সেজন্য এ সরকার সর্বোতভাবে দায়ী থাকবে। এ ব্যাপারে আমরা সরকারকে সতর্ক করছি। খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সাক্ষাতের বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে জেএসডি সভাপতি আ স ম রব বলেন, আমরা গত ২২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তিনি অত্যন্ত সরল মনে আমাদের বলেন, অবশ্যই আপনারা দেখা করতে পারবেন। তার অর্থ নীতিগতভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের দেখা করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছেন। বললেন যে, শুধু আইজি প্রিজনের কাছে আমি দায়িত্বটা দিচ্ছি, যাতে ‘অফিশিয়াল ফরমালিটিজটা মেনটেইন’ করা হয়। কিন্তু এই পর্যন্ত আইজি প্রিজন কোনো উত্তর আমাদের দেননি। তার অর্থ হলো তারা আমাদের দেখা করার সুযোগ দিচ্ছেন না। অর্থাৎ সরকার আমাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে টালবাহানা করছে।