বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

কেরানীগঞ্জে কারখানায় ভয়াবহ আগুন

একজনের মৃত্যু, দগ্ধ ৪০ জন হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক

কেরানীগঞ্জে কারখানায় ভয়াবহ আগুন

হাসপাতালে গতকাল দগ্ধ কয়েকজন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ায় প্লাস্টিকের থালা তৈরির কারখানায় ভয়াবহ আগুনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।  ‘প্রাইম প্লেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ নামের ওই কারখানায় আগুন দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা তাৎক্ষণিক বের হতে পারেননি। এতে কারখানার ভিতর আটকে পড়ে থাকা এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া দ্বগ্ধ হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। এদের মধ্যে ২৮ জনকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অনেকের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিটের এক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্লাস্টিকের কারখানায় বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ থাকার অল্প সময়ের মধ্যেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে।

গতকাল বিকাল ৪টায় ওই কারখানায় আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় শ্রমিকরা কাজে ব্যস্ত ছিলেন। কারখানার একজন শ্রমিক জানান, গ্যাস লাইনে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। শ্রমিকরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমিকরা তখন প্রাণভয়ে  ছোটাছুটি করতে থাকেন। আগুনের তীব্রতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, কারখানা থেকে বের হতে পারলেও উত্তাপে প্রায় সবাই দ্বগ্ধ হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে নেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিস জানায়, তাদের সন্দেহ গ্যাস লিকেজের কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই কারখানায় একবার (ওয়ান টাইম) ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের গ্লাস ও প্লেট তৈরি করা হতো বলে জানা গেছে। একতলা টিনশেড এই কারখানার মালিক নজরুল ইসলাম। গত ফেব্রুয়ারি মাসেও একই কারখানায় আগুনের ঘটনা ঘটেছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। বিকালে সরেজমিন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্বগ্ধদের আনতে ঢাকা মেডিকেল থেকে ঘটনাস্থলে ১৫ থেকে ২০টি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়।

হাসপাতাল সূত্র জনায়, দগ্ধ সবাই ওই কারখানার শ্রমিক। এরা হলেন- লাল মিয়া, মেহেদী, দুর্জয়, সুজন, ওমর ফারুক, এহসান, রিয়াজ, জাকির, সোহাগ, মফিজুল, মোস্তাকিম, সালাউদ্দিন, আলম, সজল, ফিরোজ, আসলাম, ইমরান, দিদারুল, জিসান, রাজ্জাক, সোহান, ফয়সাল, বাবুল, জাহাঙ্গীর, বশির, খালেদ, শাখাওয়াত ও আবু সাঈদ। এদের বয়স ২০ থেকে ৩৮ বছরের মধ্যে। বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পার্থ শঙ্কর পাল জানান, এখন সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কে কত শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন তা পরে বলা যাবে।

ক্যাজুয়ালটি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আলাউদ্দিন বলেন, আমাদের সবার ছুটি বাতিল করে রোগীদের সেবার জন্য আসতে বলা হয়। আগুনের খবরে দগ্ধদের চিকিৎসা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়। 

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ওই কারখানা থেকে একজনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি জানিয়েছেন র?্যাব ১০-এর কর্মকর্তা মেজর শাহরিয়ার।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন।

সর্বশেষ খবর