শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল রাজ্যসভায়ও পাস, ভারতজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত

সংখ্যালঘুর সম্মান রক্ষায় বঙ্গবন্ধু সচেষ্ট ছিলেন : অমিত সাহা

নয়াদিল্লি প্রতিনিধি

বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল রাজ্যসভায়ও পাস, ভারতজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত

আসামে গতকাল টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ

ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল পাস হওয়ার পর থেকেই উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশটির উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের একাংশ। বুধবার সকাল থেকেই আসামের ধুবড়ি, বঙ্গাইগাঁও, নওগাঁ, গুয়াহাটি এবং আরও কিছু জায়গায় সড়ক অবরোধ শুরু করে। বঙ্গাইগাঁওয়ের ৩১ নম্বর জাতীয় ছাত্র সংগঠনগুলো সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ চালায়। বিক্ষোভকারীরা হুঁশিয়ারি  দেয় যে, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল অবিলম্বে বাতিল না করলে তারা সারাভারতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। এই অবস্থার মধ্যেই গতকাল সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় সাত ঘণ্টা বিতর্কের পর বিলটি ভোটাভুটিতে অনুমোদিত হয়েছে। এখন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এতে স্বাক্ষর করলেই আইনে পরিণত হবে। বিরোধীদলীয় এমপিরা বলছেন, এই বিল সংবিধানবিরোধী। সুপ্রিম কোর্টে গেলেই এটা খারিজ হয়ে যাবে। এই বিলের প্রতিবাদে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে দূরপাল্লার তিনটি ট্রেন- কলকাতা-ডিব্রুগড় সাপ্তাহিক সুপারফাস্ট, আপ কামরূপ ও কাঞ্চনজঙ্গা এক্সপ্রেস, হামসফর এক্সপ্রেস চলবে ত্রিপুরার ধর্মনগর পর্যন্ত। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বাতিল করা হয়েছে গুয়াহাটি ও কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা।

নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে ত্রিপুরা রাজ্যেও। ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর ও মনু এলাকায় ২ কলাম (৭০ জন) সেনা এবং আমাদের বঙ্গাইগাঁও এক কলাম সেনা মোতায়েন করা হয়। আগরতলায় সড়ক আটকে বিক্ষোভ করে উত্তরপূর্ব শিক্ষার্থী সংগঠনের যৌথ মোর্চা। আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ইন্টারনেট পরিষেবা ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলাতেও এই বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস ও কিছু সংগঠন। মোদি-অমিত শাহের কুশপুতুলও পোড়ানো হয়। রাজ্যসভায় বিলটি উত্থাপনের আগে বুধবার সকালে দিল্লিতে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী।

সংখ্যালঘুর সম্মান রক্ষায় বঙ্গবন্ধু সচেষ্ট ছিলেন- অমিত সাহা : ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের সম্মান রক্ষায় সে দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাকে খুন হতে হয়। তিনি বুধবার রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল উত্থাপনের সময় এই মন্তব্য করেন। অমিত শাহ বলেন, ‘এই বিলের মূল লক্ষ্য হলো যে লাখ লাখ মানুষ অসহ্য, না নারকীয় জীবন-যাপন করে চলেছেন-তাদের জীবনে নতুন আশা নিয়ে আসা।

দেশ ভাগের পর আমাদের কল্পনা ছিল যে প্রতিবেশী দেশগুলোতে সব ধর্মের নাগরিক তাদের অধিকারের সঙ্গে, সম্মানজনকভাবে বসবাস করবেন এবং পরিবারের স্ত্রী-নারীদের সম্মান রক্ষা করা হবে ও তাদের রক্ষা করার অধিকার থাকবে।  কিন্তু কয়েক দশক বাদে পেছনের দিকে তাকালে এক কঠোর বাস্তব সত্য সামনে আসবে। তা হলো পাকিস্তান, আফগানিস্তান বা বাংলাদেশ-এ যে অল্পসংখ্যক মানুষ (হিন্দুসহ অন্য সংখ্যালঘু) রয়েছেন-তাদের অধিকার রক্ষা বা তাদের সবার সমান অধিকার দেওয়া হয়নি।

সর্বশেষ খবর