রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভোটের পর লন্ডনে বিক্ষোভ ঐক্যের ডাক দিলেন জনসন

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

ভোটের পর লন্ডনে বিক্ষোভ ঐক্যের ডাক দিলেন জনসন

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কয়েকশ মানুষ। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে প্রতিবাদকারীরা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে থেকে মিছিল নিয়ে ট্রাফালগার স্কয়ার ও থিয়েটার ডিস্ট্রিক্টের সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় ‘বরিস জনসন, নট মাই প্রাইম মিনিস্টার’ এবং ‘বরিস, বরিস, বরিস, আউট, আউট, আউট’ স্লোগানে আশপাশ প্রকম্পিত করে তোলেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের হাতে থাকা প্লাকার্ডে ‘টোরি শাসন প্রত্যাখ্যান করুন’, ‘অভিবাসীরা স্বাগত’ লেখা ছিল বলে বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে। বিক্ষোভের কারণে ওই সময় লন্ডনের বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চারপাশে ছিল বিপুল পুলিশের উপস্থিতি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, লন্ডনের বাইরে গ্লাসগোতেও ‘জনসন, আমার প্রধানমন্ত্রী নন’ স্লোগানে বিক্ষোভ হয়েছে। রাজধানীর রাস্তায় বিক্ষোভ হলেও আগের দিনের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফল করে পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন দেশবাসীকে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জনসন বলেন, তার সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) কার্যকর করা। তবে যারা ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং প্রতিবেশী ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখতে চান, তাদের অনুভূতিও তিনি বুঝতে পারেন। ইইউর সঙ্গে সম্পর্ক নবায়নের ক্ষেত্রে বিষয়টিকে তিনি গুরুত্ব দেবেন বলে জানান। ব্রেক্সিটের পক্ষের-বিপক্ষের সবাইকে বিভক্তি ভুলে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কাজে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান জনসন। যারা লেবার দলের ভোটার এবং প্রথমবারের মতো কনজারভেটিভ দলকে সমর্থন দিয়ে বিশাল জয় এনে দিয়েছেন, তাদের প্রতি বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়ে জনসন বলেন, তার সরকার সাবেক এই লেবার ভোটারদের আশাহত করবে না। ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার পর জনসন ছুটে গেছেন উত্তর ইংল্যান্ডে। সেখানে লেবারের দুর্গ বলে পরিচিত অনেকগুলো আসনে এবার কনজারভেটিভ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। তিন বছর ধরে যারা পার্লামেন্টে ব্রেক্সিটের বিরোধিতা করেছেন তাদের বেশির ভাগই এ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। এদের মধ্যে আলোচিত অ্যানা সোবরি, ডোমিনিক গ্রিভ, চুকা উমুন্না, লুসিয়ানা বার্জার, স্যাম গিমা ও স্যারা উইলসটন। তারা দলের ব্রেক্সিট নীতির বিরোধিতা করে ভিন্ন ব্যানারে নির্বাচন করেছিলেন। অন্যদিকে স্কটল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী এসএনপি নেতা নিকোলা স্টারজিয়নের সঙ্গে শুক্রবার টেলিফোনে কথা বলেছেন বরিস জনসন। স্কটল্যান্ডের ৫৯ আসনের মধ্যে ৪৮টি এসএনপি জিতে নেওয়ার পর নিকোলা বলেছিলেন, ইংল্যান্ডের মানুষ ব্রেক্সিট কার্যকরে জনসনকে সমর্থন দিয়েছেন। কিন্তু স্কটল্যান্ডে তিনি পরাজিত নেতা। স্কটল্যান্ডকে ইইউ থেকে বের করে আনার ক্ষমতা স্কটিশরা তাকে দেননি। স্বাধীনতাকামী এসএনপি নেতা বলেন, স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোট আয়োজনে জনসনের বাধা দেওয়া ঠিক হবে না। স্টারজিয়নের এমন বক্তব্যের পর জনসন তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। আগামীকাল জনসন তার মন্ত্রিসভায় কিছু রদবদল করবেন। পরে মঙ্গলবার থেকে পার্লামেন্টে যোগ দেবেন এমপিরা। শুক্রবারের মধ্যে ব্রেক্সিট চুক্তি পাসের জন্য পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হবে। আগামী ৩১ জানুয়ারি ব্রেক্সিট কার্যকর করতে চান জনসন।

সর্বশেষ খবর