বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজধানীতে বিজয় শোভাযাত্রা বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা করেছে বিএনপি। গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিকাল ৩টায় শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শান্তিনগর মোড় ঘুরে আবার পল্টনের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রা বিভিন্ন রাস্তা অতিক্রমকালে নয়াপল্টন, মোড়ে মোড়ে ব্যাপক পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের অবস্থান দেখা যায়। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, প্রকৃত রাজাকারদের বাদ দিতেই সরকার পাকিস্তানিদের তৈরি করা রাজাকারের  তালিকা প্রকাশ করেছে। ঠিক ৪৮ বছর পর কী প্রয়োজন হলো তালিকা তৈরি করার। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় ব্যানার-ফেস্টুন-জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা, জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতিকৃতি নিয়ে হাজার হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন। এতে বড় আকারের জাতীয় পতাকা এবং দলীয় পতাকা ও ব্যান্ড সংগীতের দলও ছিল। কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে যখন শোভাযাত্রা শুরু হয়, তখন নয়াপল্টন থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত সড়কে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ঢল নামে। নয়াপল্টন থেকে শুরু হওয়ার পর এর অগ্রভাগ ছিল শান্তিনগর মোড়ে। শোভাযাত্রার কারণে বিজয়নগরসহ বিভিন্ন সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এই তালিকা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশে করা হচ্ছে। তালিকার দৃষ্টিভঙ্গিটা রাজনৈতিক। তারা মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক একটা প্রোডাক্ট হিসেবে ব্যবহার করে। রাজাকারের তালিকা, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা এসব তৈরি করে আসল মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে, প্রকৃত রাজাকার যারা তাদেরকে বাদ দিয়ে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে পারে, সেই ধরনের তালিকা প্রস্তুত করতে চায়। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। এই রাষ্ট্রকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে, তারা বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করেছে। মিডিয়াকে পর্যন্ত তারা আজকে নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে দেশের কোথাও গণতন্ত্রের কোনো সুযোগ নেই। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গণতন্ত্র আওয়ামী লীগের বাক্সে বন্দী। এই একটি সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্য সারা দেশের মানুষ শান্তিতে নেই। এই অন্যায়-অত্যাচার, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে না পারলে আমরা আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারব না, এ দেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারব না, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারব না। মির্জা আব্বাস বলেন, এই বিজয় দিবসে আমাদের নেত্রী জেলে বন্দী। আমরা তাকে আইনি প্রক্রিয়ায় আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করতে পারি নাই-এটা আমাদের ব্যর্থতা। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়ায় যদি আমরা ব্যর্থ হয়ে থাকি, ইনশাআল্লাহ আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে আমরা মুক্ত করব। প্রস্তুত হোন, আমরা সব ব্যারিকেড ভেঙে আন্দোলনের মাধ্যমে দেশনেত্রীকে জেলের তালা ভেঙে মুক্ত করব। স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজ আমাদের উল্লাসের দিন নয়। গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলখানায় আবদ্ধ  রেখে আমাদের এই উল্লাস কতটুকু মানানসই। আসুন আমরা মরি বাঁচি, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করি, বাংলাদেশকে মুক্ত করি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমের পরিচালনায় শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সেলিমা রহমান। সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর শোভাযাত্রা শুরু হয়। বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটি সদস্যরা পায়ে হেঁটে এতে অংশ নেন। শোভাযাত্রায় দলীয় নেতাদের মধ্যে মো. শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শামা ওবায়েদ, কামরুজ্জামান রতন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, শিরিন সুলতানা, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, সেলিম রেজা হাবিব, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আবদুস সালাম আজাদ, শামীমুর রহমান শামীম, আবদুল আউয়াল খান, হারুনুর রশীদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, মাশুকুর রহমান, আমিরুজ্জামান শিমুল, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান, নিপুণ রায় চৌধুরী, মারুফ হোসেন, অঙ্গ-সংগঠনের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, কাজী আবুল বাশার, বজলুল বাসিত আনজু, সাইফুল ইসলাম নীরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর