শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

শীতে কাঁপছে দেশ

মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। কুয়াশার ঘন আস্তরণে ঢাকা পড়েছে সূর্য। হিমবুড়ির হাওয়ায় গরম পোশাকে উষ্ণতা খুঁজছে নগরবাসী। পৌষের শীতে হাড়ে কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার পর্যন্ত তা থাকবে এবং আরও বেশি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ঢাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা প্রায় তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গেছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ময়মনসিংহে ১২ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ১৬, সিলেটে ১৫ দশমিক ৮, রাজশাহীতে ৯ দশমিক ৪, রংপুরে ১১, খুলনায় ১২ এবং বরিশালে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, আগামীকাল থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাপমাত্রা আবার বাড়তে থাকবে। ২৭ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা কমতে পারে। জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।

শীতের শুরুতেই দেখা দিয়েছে শীতকালীন রোগের প্রকোপ। গত এক মাসে সারা দেশে জ্বর, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন রোগে আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার ২২১ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৪৯ জন। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শীতের প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে। ডিসেম্বরের ১৮ দিনেই শীতকালীন রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৬২ হাজার মানুষ। এর মধ্যে মারা গেছে ৫ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সারা দেশে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের তথ্য সংরক্ষণ করে। ৬৪ জেলার গত ১ নভেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই সময়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৯৩ হাজার ৪২৩ জন। এর পরই শ্বাসতন্ত্রের  বিভিন্ন সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে ৩৬ হাজার ৪৯৩ জন। এ ছাড়া জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ ও জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ৯৬ হাজার ৩০৫ জন। এবার পঞ্জিকা মেনেই শীত নেমেছে দেশে। পৌষের শুরুতেই নামতে শুরু করেছে থার্মোমিটারের পারদ। গতকাল সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়। শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণে নি¤œ আয়ের মানুষেরা বিপাকে পড়েছেন। শ্রমজীবী মানুষেরা কর্মক্ষেত্রে যেতে পারছেন না। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, শিরশির বাতাসের কারণে কাঁপছে দিনাজপুরবাসী। টানা ৩-৪ দিনের কুয়াশা ও মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে ছিন্নমূল মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি বেড়েছে শীতের তীব্রতা। গত দুই দিন ধরে শীত ব্যাপকহারে বেড়েছে।

এদিকে পদ্মায় কুয়াশার ঘনত্ব হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ফেরির সংকেত আলো অস্পষ্ট হয়। এজন্য  দুর্ঘটনা এড়াতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে গতরাত ১১টা থেকে ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

 

কিন্তু এই কয়দিনে রাজশাহীর ছিন্নমূল মানুষদের মাঝে কোনোরকম শীতবস্ত্র বিতরণ করতে দেখা যায়নি প্রশাসন বা কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে। তীব্র শীতে কাঁপছে রংপুর অঞ্চলের জনজীবন। কাহিল হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষের জীবন। সড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহন দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।

গত দুই দিনে শৈত্যপ্রবাহের দাপটে ঘর থেকে বের হতে পারছে না শিশুসহ বয়োবৃদ্ধরা।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর