সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভারতের এনআরসি বাংলাদেশের জন্য আরেকটি রোহিঙ্গা সংকট : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতের বহুল আলোচিত জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনকে (এনআরসি) বাংলাদেশের জন্য আরেকটি রোহিঙ্গা সংকট হিসেবে দেখছে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই এনআরসি নিয়ে সরকার দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। গতকাল বিকালে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ অভিযোগ করেন।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, মূলত মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং ভারত থেকে সীমান্ত দিয়ে জোরপূর্বক ঢুকিয়ে দেওয়া ভারতীয় মুসলিমদের মধ্যে কোনো মৌলিক ব্যবধান নেই। এমনিতেই ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে বাংলাদেশ ভারাক্রান্ত। তার ওপর এনআরসি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার তাদের ব্যর্থ পররাষ্ট্রনীতির প্রমাণ হিসেবে যেভাবে নির্বিকার রয়েছে, তা স্পষ্টতই আমাদের জনগণ, সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, সারা ভারতে এখন এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছে।  কোথাও কোথাও এই প্রতিবাদ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। কেবলমাত্র সে দেশে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে টার্গেট করেই এই আইন প্রণীত হয়েছে বলে আজ জনমনে বিশ্বাস স্থাপিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিজেপি সভাপতি ও ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এনআরসির কারণে বাদপড়া ভারতীয়দের উঁইপোকা বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাদের প্রত্যেককে ভারত থেকে বের করে দেওয়ার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেছেন তিনি। আসামের গোয়ালপাড়ায় ইতিমধ্যেই ডিটেনশন সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। সারা ভারতে আরও অনেকগুলো ডিটেনশন সেন্টার নির্মাণ হওয়ার সংবাদও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি- বাংলাদেশের জন্য আরেকটি রোহিঙ্গা সংকটের সূত্রপাত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ভারতের এনআরসি। এই এনআরসি ও বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিলের দাবি জানান মির্জা ফখরুল। তিনি আরও বলেন, ভারত সম্প্রতি তাদের আইন সভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করেছে। যা ইতিমধ্যে আইনে পরিণত হয়েছে। বিতর্কিত এ বিলের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে অমিত শাহ বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন এখনো অব্যাহত আছে এবং সে কারণেই এ বিল আনা হয়েছে বলে ভারতীয় পার্লামেন্টে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করেছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, যা দুঃখজনকভাবে অসত্য অপব্যাখ্যামূলক একপক্ষীয় বৈষম্যমূলক বিভ্রান্তিকর এবং চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বক্তব্য আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা আশা করি, দুই দেশের জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সম্পর্কে ভারতীয় পার্লামেন্টে যে অসত্য বক্তব্য দেওয়া হয়েছে ভারত সরকার তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেবে এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা ও সহমর্মিতা রক্ষার্থে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য প্রদানে বিরত থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর