মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইভিএমে আপত্তি বিএনপির নৌকার প্রত্যাশায় দুই মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার দুই সিটি ভোটে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নিয়ে দলটির আপত্তি রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিটি ভোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে এ নিয়ে সাংবাদিকদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ঢাকা সিটির নির্বাচনের তড়িঘড়ি করে তফসিলের পেছনে নির্বাচন কমিশনের “সরকারি দলের প্রার্থীকেই জেতানোর পুরনো কৌশলের” আশঙ্কা করছি।’ এদিকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন ও উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম দাবি করেছেন, তাঁরা সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে দুজনই আশাবাদী। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। হঠাৎ তড়িঘড়ি করে ঘোষণা করা হলো। এর পেছনে ইসির যে মূল উদ্দেশ্যটা থাকে সেই উদ্দেশ্যটাই আছে বলে আমরা আবারও আশঙ্কা করছি, তারা সরকারি দলকে জেতানোর জন্যই এ ধরনের তাড়াহুড়া করে একটা তফসিল ঘোষণা করেছে। আমাদের আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোয় অংশ নেব এবং আমরা নিচ্ছি। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা এই নির্বাচনেও অংশ নেব। তবে সেটা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে যে পরিবেশ-পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে।’

ইভিএমে সিটি নির্বাচনের বিরোধিতা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলেছে, পুরো নির্বাচনটা ইভিএমে হবে। এটা অত্যন্ত আপত্তিকর এবং আমরা এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা বলতে চাই, ইভিএমে যথেষ্ট সুযোগ থাকবে ভোটের ফলকে মেনুপুলেট করার, তাকে নিয়ন্ত্রণ করার। সেজন্য আমরা এ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করছি।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে ২৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এটি জমা নেওয়া হবে ২৭ ডিসেম্বর বিকাল ৪টা পর্যন্ত। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার হবে ২৮ ডিসেম্বর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে।’ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হচ্ছে না বলে এটা দলীয়ভাবে ঠিক করা হবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

নৌকা প্রতীক পাওয়ার প্রত্যাশা দুই মেয়রের : দায়িত্ব পালনে নিজেদের সফল দাবি করে আবারও মনোনয়ন প্রত্যাশা ঢাকার বর্তমান দুই মেয়রের। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছি ৫২ বাজার ৫৩ গলির এই দক্ষিণ সিটিতে।’ গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে সংবর্ধনা এবং পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সাঈদ খোকন বলেন, ‘আমরা আশা করি, একটা প্রতিযোগিতামূলক অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। আমি নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানাব, আমার শুরু করা উন্নয়নকর্ম অব্যাহত রাখতে আমাকে পুনরায় নির্বাচিত করবেন। যে মৌলিক সমস্যা ছিল তা প্রাথমিকভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছি। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ আমারা রেখে যাওয়ার জন্য কাজ করছি। আশা করছি আপনারা সবাই পাশে থাকবেন। নির্বাচন কমিশন ইভিএমে ভোট নেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছেন এবং পদত্যাগের বিষয়ে যে আইন থাকবে সেসব মেনেই নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। এমন কোনো অলিগলি নাই যেখানে আমি উন্নয়নের ছোঁয়া লাগাতে পারিনি। আমি আশাবাদী দল থেকে মনোনয়ন পাব।’

উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হয়েছি নয় মাস। আগামীতে নির্বাচিত হলে এই অল্প সময়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যানজট সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসব। আমি যেদিন দায়িত্ব পেয়েছি সেদিনই কাজ শুরু করেছি। একটি দিনও বসে থাকিনি। আমার অল্প সময়ের এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামীতে আরও সফলতা আনতে পারব। আশা করি আওয়ামী লীগ আবারও আমাকে সুযোগ দেবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর