ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, সারা বিশ্বে মানুষ আজ পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে ভাঙার চেষ্টা করছে। এ সংগ্রামে আমরাও যুক্ত হতে চাই। ব্যক্তিগত সম্পত্তির বিশ্বকে বদলে দিয়ে নতুন এক বিশ্ব গড়ে তুলতে হবে; যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে সামাজিক মালিকানার বিশ্ব। অধ্যাপক চৌধুরী গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ভারতে এনআরসি-সিএএ, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব ও বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছিলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজক গণসংহতি আন্দোলন। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন এনআরসি-সিএএ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। অথচ এটি সারা বিশ্বের সমস্যা। প্রতিবেশীর ঘরে আগুন লাগলে আমাদের ঘরেও আগুন লাগবে। এর মধ্য দিয়ে জাতিগত সমস্যা বাড়বে। এ উপমহাদেশ বহুজাতির দেশ। এটি কখনোই এক জাতির ছিল না। ভারত এক জাতির দেশ নয়। এটি যে বহুজাতির দেশ সেটিই এখন প্রমাণিত হচ্ছে। কারাগার জাতিগুলো এখন কারাগার থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছে। এগুলো হচ্ছে অর্থনৈতিক কারণে। নানা সংকট আড়াল করতে ফ্যাসিস্ট আচরণ করছে তারা। গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। অনুষ্ঠানে আরও আলোচনা করেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, আলোকচিত্রী শহীদুল আলম, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ। বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, সাম্প্রদায়িক-ফ্যাসিবাদী এই বিপদ মোকাবিলার জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় মানুষের সংহতি গড়ে ওঠা দরকার।
শহীদুল আলম বলেন, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে আমার সাহসী ভূমিকা নিয়ে অনেকে বলেন, কিন্তু এটা এমন কিছু নয়। এ মুহূর্তে ভারতে যা হচ্ছে তার প্রতিবাদে এতটুকু দায়িত্ব সবার পালন করা উচিত। সভাপতির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশের সরকার ভারতের এনআরসি এবং সিএএ-কে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলছে। কিন্তু এটা কখনোই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। এ বিষয়ের অভিঘাত দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে, এমনকি বিশ্বব্যাপী, বাংলাদেশে এ অভিঘাত বেশি হবে। ভারতের সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প এ দেশে এলে এখানকার সংখ্যালঘুরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নিজেদের গদি রক্ষায় এ দেশের সরকার মানুষের স্বার্থ নিয়ে কথা বলছে না। কিন্তু সরকারকে এ নিয়ে কথা বলতে বাধ্য করতে হবে। হয় তারা কথা বলুক, নয় তো ক্ষমতা থেকে বিদায় নিক।