শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ভারতে নাগরিকত্ব আইন

পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল, উত্তাল দিল্লি পশ্চিমবঙ্গ

নয়াদিল্লি ও কলকাতা প্রতিনিধি

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে উত্তাল ভারতের দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি রাজ্য। প্রবল শীত উপেক্ষা করে বিভিন্ন জায়গায় একাধিক সংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। দিল্লির জামে মসজিদের সামনে বিক্ষোভ করেছেন আইনের বিরোধীরা। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে এসব আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে বিজেপিবিরোধীরা। অন্যদিকে আইনের সমর্থনে অভিনন্দন মিছিল করেছে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি। কোনো রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংবেদনশীল জায়গাগুলোতে টহল দিচ্ছে পুলিশ। দিল্লি জামে মসজিদের সামনে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা অলকা লাম্বা ও দিল্লির সাবেক বিধায়ক  শোয়েব ইকবাল। নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে লাম্বা বলেন, ‘দেশে এই মুহূর্তে বেকারি একটা বড় সমস্যা। কিন্তু আপনি নাগরিক সংশোধন আইনের জন্য মানুষকে লাইনে দাঁড় করাচ্ছেন। যেমনটা করেছিলেন  নোট নিয়ে।’ দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ ভবন, সিলামপুর এবং জাফরাবাদ। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই বিক্ষোভকারীরা রাস্তায়  নেমেছেন। উত্তরপ্রদেশ ভবনের সামনে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছেন। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ ভবন। ১৫ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী  মোতায়েন করা হয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। ড্রোনের সাহায্যেও নজরদারি করা হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা এগোনোর চেষ্টা করলে তাদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অন্য দিকে, ভিম আমির প্রধান চন্দ্র শেখর আজাদের মুক্তির দাবিতে কয়েকশো বিক্ষোভকারী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে এগোনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকায় বিক্ষোভকারীরা এগোতে পারেননি। জোরবাগেও আজাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ চলছে।

এদিকে, কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কয়ার থেকে মিছিল শুরু হয়ে শেষ হয় মহাজাতি সদনে। মিছিলে ছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, বাম পরিষদীয় দলের  নেতা সুজন চক্রবর্তী, রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি  সোমেন মিত্র, সাবেক সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য প্রমুখ।

সমাবেশে তারা ঘোষণা দেন, জীবন দিয়ে লড়াই করে এই রাজ্যের অসাম্প্রদায়িক নীতিকে জাগ্রত রাখা হবে। জাতিতে জাতিতে, ধর্মে ধর্মে বিভাজনকে বন্ধ করা হবে।

বিজেপির ষড়যন্ত্রের জবাব দেবেন মমতা : উত্তর চব্বিশ পরগনার নৈহাটিতে নাগরিক সংশোধনী আইন বিরোধী সমাবেশে যোগ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এ রাজ্যের সবাই এ দেশের নাগরিক। কেন আবার তাদের নতুন করে নাগরিকত্ব নিতে হবে? আমরা বিজেপির এই ষড়যন্ত্রের জবাব দেব। অন্যদিকে পূর্ব  মেদিনীপুরের কাঁথিতে নাগরিক সংশোধনী আইনকে অভিনন্দন জানিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ  ঘোষের নেতৃত্বে মিছিল বের করে। এ সময় তিনি বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস হয়েছে। এবার এই রাজ্যে নিগৃহীত হয়ে আসা বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের উদ্বাস্তু ও শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আনা হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন।

সর্বশেষ খবর