শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বৃষ্টির সম্ভাবনা, থাকবে কুয়াশা

রাতে কমবে তাপমাত্রা, তেঁতুলিয়ায় ৯.২

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলমান শৈত্যপ্রবাহ আরও বিস্তার লাভ করবে আজ। দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বৃষ্টির সম্ভাবনাও। আজ দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে, কমবে রাতের তাপমাত্রা। আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন গত সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান। গতকালও উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতের তীব্রতা, শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে গতকাল বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় নাকাল দিনমজুর ও চাষিরা। ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপে শ্বাসকষ্টসহ ডায়রিয়ায় ভুগছে শিশু ও বৃদ্ধরা। তীব্র শীতের কারণে ফসলহানির আশঙ্কা করছেন কৃষক। আবহাওয়া অধিদফতরের আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা অথবা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও নীলফামারী অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে। শৈত্যপ্রবাহ ও তীব্র শীত থাকা এলাকাগুলোয় হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করলেও গৃহপালিত পশুর অবস্থা নাজুক। ঘন কুয়াশায় দুর্ঘটনা এড়াতে দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন।

রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগে হালকা ও ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সকাল ৮টায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর থেকেও গভীর রাত পর্যন্ত গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়। আকস্মিক বৃষ্টিতে চরম বিড়ম্বনার শিকার হয় জনসাধারণ। বিশেষ করে গতকাল সকালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা পড়েন মারাত্মক দুর্ভোগে। অনেকে যথাসময়ে কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি। টানা ১০ দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় শীতের তীব্রতা অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। গতকালও বৃষ্টি হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলেও কমেনি শীতের তীব্রতা। দিনাজপুরে জেঁকে বসেছে শীত। কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা। বিকালের পর শুরু হয় আরও কনকনে ঠান্ডা। শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনদুর্ভোগও। হিমেল হাওয়ায় তীব্র ঠান্ডার কারণে খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে চরম দুশ্চিন্তায়। ঝিনাইদহে বিভিন্ন স্থানে তিন শতাধিক ছিন্নমূল মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। খুলনায় শীতের তীব্রতায় ঠান্ডাজনিত রোগ বেড়েছে। বিশেষ করে শিশুরা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন খুলনা শিশু হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত অনেক শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পাশাপাশি বয়স্করাও ডায়রিয়া, সর্দি-কাশিসহ নানা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শেরপুরের নকলায় অসহায় সহায়তা সংস্থার উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। সকালে উপজেলার জালালপুর পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ২০০ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে কয়েক দিন ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে পঞ্চগড়। এতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষ। মানবেতন জীবন যাপন করছে এসব মানুষ। প্রচন্ড  শীতে চরম দুর্ভোগে রয়েছে রাজবাড়ীর পদ্মা নদী ভাঙনকবলিত মানুষ। অনেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। শীতের মধ্যে গৃহপালিত গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে রয়েছে সাধারণ মানুষ। রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম জানান, তাঁর জেলার পাঁচ উপজেলায় ২৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর