রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের তিন নেতা কারাগারে

নূর ও রাশেদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় উসকানির অভিযোগ ডিজিটাল আইনে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নূরের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খানকেও আসামি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় ঢাবি ছাত্রলীগের জগন্নাথ হল শাখার প্রচার সম্পাদক অর্ণব বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা (আইসিটি) আইনে মামলাটি করেন। এর আগে বুধবার ভিপি নূরসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ডিএম সাব্বির হোসেন মামলাটি করেন। এতে বহিরাগতদের নিয়ে ডাকসু ভবনে প্রবেশ করে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর ও চুরির অভিযোগ আনা হয়। মামলায় ২৯ জন ছাড়াও ১৫-২০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আবদুল্লাহিল কাফী জানান, নূর ও রাশেদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় উসকানি ও অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে ধানমন্ডি থানায় মামলা হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের ২৫, ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগটি এনেছেন ঢাবির এক শিক্ষার্থী।

নূরকে হামলার প্রতিবাদে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ গণপদযাত্রা : ডাকসু ভবনে ভিপি নুরুল হক ও তার সহযোগীদের ওপর হামলার বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ গণপদযাত্রা করেছে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ১২টি ছাত্রসংগঠনের জোট ‘সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্রঐক্য’।

গতকাল বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে গণপদযাত্রা শুরু করেন জোটের নেতারা। পদযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, নীলক্ষেত ও কাঁটাবন হয়ে শাহবাগ মোড় প্রদক্ষিণ করে আবার রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদি হাসান নোবেল, স্বতন্ত্র জোটের শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, বিপ্লবী ছাত্র যুব-আন্দোলনের সভাপতি আতিফ অনিক, ছাত্র ফেডারেশনের গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবীর প্রমুখ। গণপদযাত্রা থেকে ডাকসু ভিপি নুরুল হকসহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী সবাইকে স্থায়ী বহিষ্কার ও আইনানুগ বিচার, ব্যর্থতার দায়ে প্রক্টরের অপসারণ, আহতদের বিরুদ্ধে করা ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার ও তাদের চিকিৎসার ব্যয়ভার প্রশাসনের বহন এবং ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হলে হলে দখলদারি ও গেস্টরুম-গণরুম নির্যাতন বন্ধ করা প্রভৃতি দাবি জানানো হয়।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, সেদিন আমাদের ওপর দুই দফায় হামলা চালানো হয়েছে। প্রথম দফা হামলা করেছে তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। দ্বিতীয় ধাপে হামলা চালিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। সে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে সনজিত এবং সাদ্দাম। তাদের এখনো আইনের আওতায় আনা হয়নি। তিনি বলেন, মার খেয়েছি, হাসপাতালে গিয়েছি, আইসিইউতে গিয়েছি আবার মামলা করা হয়েছে। পুলিশের মামলার উদ্দেশ্য সনজিত, সাদ্দাম এবং  ছাত্রলীগকে রক্ষা করা।

রিমান্ড শেষে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের তিন নেতা কারাগারে : রাজধানীর শাহবাগ থানায় করা হত্যাচেষ্টা মামলায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদকসহ তিন নেতাকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান শুনানি শেষে জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন। আসামিরা হলেন- মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, দফতর সম্পাদক মেহেদী হাসান শান্ত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তুর্য। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার তিন দিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাগর মিয়া। গত ২৪ ডিসেম্বর আসামিদের তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেয় আদালত।

সর্বশেষ খবর