ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুর্নামের একটা ধারা ছাত্রলীগের নামের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এটা আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ। গতকাল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রলীগের ওরিয়েন্টেশন কোর্সের সূচনা পর্বে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগের যে বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই জরুরি সেটা হচ্ছে আচরণ। আমাদের মনে রাখতে হবে যত ভালোই উন্নয়ন হোক, আচরণ খারাপ হলে ভালো উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। একটা খারাপ আচরণ ১০টা ভালো উন্নয়ন-অর্জনকে ঢেকে দিতে পারে। আমাদের নেত্রীর কোনো একটা অর্জন সারা জাতি প্রশংসার চোখে দেখছে। সারা দেশে আলোচনা হচ্ছে। ঠিক তখনই এমন একটা কা , একটা আচরণ বাস্তবে দেখতে পাই, যেটা আমাদের নেত্রীর সোনালি অর্জন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ম্লান হয়ে যাচ্ছে। আমরা তখন খুব কষ্ট পাই। আমরা মর্মাহত হই, আমরা যারা ছাত্রলীগ করেছি, আমাদের মন বিষাদে ভরে যায়। এটা আমরা আশা করি না। ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে ছাত্রলীগের ওরিয়েন্টেশন কোর্সের অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদের বলেন, বুয়েটে যারা ছাত্রলীগের পরিচয়ে আবরারকে হত্যা করে এ ধরনের কর্মী আমাদের প্রয়োজন নেই। রাজশাহীতে পলিট্যাকনিকের অধ্যক্ষকে যারা ছাত্রলীগের পরিচয়ে অপমান করল এ ধরনের নেতা আমাদের প্রয়োজন নেই। গুটি কয়েকের জন্য গোটা পার্টি দুর্নামের ভাগিদার হতে পারে না। গুটি কয়েকের অপকর্মের জন্য গোটা সরকার দায়ভার নিতে পারে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অপ্রিয় হলেও কিছু সত্যি কথা বলছি। আজকে অনেক ছাত্রনেতা ১২টার আগে ঘুম থেকে ওঠে না। তারা সারা রাত জেগে জেগে কী করে আল্লাহই ভালো জানে। ছাত্রনেতার সামনে ২০, ৩০, ৫০টা হোন্ডা। আর হোন্ডায় আরোহীদের কারও মাথায় হেলমেট নেই। এতে আমরা লজ্জা পাই। সেতুমন্ত্রী বলেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হলেই ৫০টা হোন্ডা তাদের নিয়ে যাবে এমন নেতার দরকার নেই। ওরিয়েন্টেশনের মূল বিষয় হচ্ছে আচরণ। ইতিহাস বেশি জানার দরকার, ভালো আচরণ দরকার।
ছাত্রলীগকে বঙ্গবন্ধুর পরিবার থেকে শিক্ষা নিতে হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি আজ একটা কথা বলি, এ দেশে সবাই আমরা হারিয়ে যাব। দুটি অর্জন কখনো মুছে যাবে না, একটা হলো বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার সংগ্রাম। স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর এ জনপদে মৃত্যু হবে না। আর এ জনপদে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য শেখ হাসিনার অর্জনের মৃত্যু হবে না। উত্তরাধিকার হিসেবে এ দুটি অর্জন এ দেশে থেকে যাবে। এ জনপদ যতদিন থাকবে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সবার দিকে একে একে তাকাও। আমাদের আদর্শ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পরিবার। সততার রাজনীতি, মেধার রাজনীতির প্রতীক হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পরিবার।
