শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

সুসংগঠিত দল সরকারের বড় সহায়ক শক্তি

আওয়ামী লীগের যৌথসভায় প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুসংগঠিত দল সরকারের বড় সহায়ক শক্তি

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটা সরকার সফলভাবে কাজ করতে পারবে তখনই যখন তার দল সুসংগঠিত থাকে। কারণ, দল সুসংগঠিত থাকলে এটা সরকারের জন্য বিরাট শক্তি। দেশকে উন্নত করতে এই শক্তিটাই সব থেকে বেশি কাজে লাগে। যেটা আমি নিজে উপলব্ধি করি। যে কারণে আমি সবসময় সংগঠনের ওপর গুরুত্ব দিই। গতকাল বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম যৌথসভায় তিনি এ কথা বলেন। বক্তব্যের শুরুতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কথা স্মরণ করেন। এ যৌথ সভা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রতি উৎসর্গ করা হয়। বিভিন্ন সময় দলের ক্রান্তিলগ্নে তৃণমূল আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়। নিজেদের জীবন পণ করেই তারা এই সংগঠনকে ধরে রেখেছে। আজকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ একটা শক্তিশালী সংগঠন। এদেশের রাজনীতিতে কেউ যদি কিছু শিখিয়ে থাকে সেটা আওয়ামী লীগই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে করে যাচ্ছে। এই ঐতিহ্যটা আমাদের ধরে রাখতে হবে।

১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, উদ্দেশ্য ছিল এমনভাবে আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেওয়া কোনো দিন যেন এই সংগঠনটা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে না পারে। শেখ হাসিনা বলেন, অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্য দিয়েও কিন্তু আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে পারেনি। উদ্দেশ্যই ছিল আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেওয়া। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নামে অপবাদ ছিল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশ বেঁচে দেবে। কেউ কেউ বলেছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মসজিদে উলুধ্বনি শোনা যাবে। নানা ধরনের অপপ্রচার তখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ছড়ানো হতো। দুর্ভাগ্যবশত, তখন ওইভাবে প্রতিবাদ করা যায়নি। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে জনগণ ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছে। এরপর ক্ষমতায় ১০ বছর পেরিয়ে ১১ বছর পূর্ণ হলো। আজ আমরা বলতে পারি, আমরা মানুষের আস্থা-বিশ্বাস-সমর্থন পেয়েছি। এখন মানুষ জানে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়। আজকের বাংলাদেশকে আর কেউ তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ বলতে পারবে না। এখন বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারা বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে এসেছি। ছোটবেলা থেকেই রাজনীতি করতাম। কিন্তু দলের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম কাজ ছিল দলকে সুসংগঠিত করা। অনেকবার দল ভেঙেছে, আবার নতুন করে গড়তে হয়েছে সব। মার্শাল ল, ইমার্জেন্সি এগুলোও মোকাবিলা করতে হয়েছে। কিন্তু সবসময় আমাদের তৃণমূল সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে সংগঠনকে সবসময় ধরে রেখেছে। তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের তিন বছর মেয়াদি কমিটি করেছি। কারণ, এখন লোকসংখ্যা বেড়েছে। আমাদের জেলা বেড়ে গেছে। আমাদের কার্যপরিধি বেড়েছে। এখন পরিকল্পনা নিয়ে যেসব জেলার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি আছে সেগুলোর কাউন্সিল করে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ২১তম জাতীয় সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করার প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, এটা আমাদের আওয়ামী লীগ অফিস। আমরা বিল্ডিংটাও তৈরি করেছি। কাজেই আমি চাইছি, আমাদের প্রথম সভা আমাদের নিজের অফিসেই শুরু করব। এখানে আমরা করতে পারি। তবে এখানে সমস্যা হলো যে, বিভিন্ন অফিস, তারপর অনেক হকার থাকে। বিভিন্ন জীবন-জীবিকার লোক থাকে। আমি এলে সিকিউরিটির কারণে তাদের এই জীবন-জীবিকা ব্যাহত হয়। সেজন্য শুক্রবার আমরা এখানে শুরু করে দিচ্ছি। পরবর্তীতে আবার মুলতবি করে আরেকটা তারিখ ও সময়টা ঠিক করে সভাটা করব। কিন্তু আমার ইচ্ছা ছিল, আমরা প্রথম সভাটা আমাদের অফিসে করি। এ জন্য শুক্রবার যেহেতু ছুটির দিন সেজন্য এটা আমরা বেছে নিয়েছি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ যৌথসভায় দলটির কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রায় সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভা শুরু হয়ে কিছুক্ষণ চলার পর মুলতবি ঘোষণা করা হয়। মুলতবি সভা আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সিটি নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।

সর্বশেষ খবর