সোমবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

নবজাগরণের উদ্দীপনা দেশে : পরিকল্পনামন্ত্রী

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘দেশের সর্বত্র একটি নবজাগরণের উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। বাঙালি, বাংলার পরিচয় নিয়ে এখন আর লজ্জা পাওয়ার, মুখ লুকানোর কোনো প্রয়োজন নেই। এটা সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে। আমরা তার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ, তাকে ধন্যবাদ দিয়ে শেষ হবে না।’ সুনামগঞ্জ জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়টি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন উপলক্ষে গতকাল জেলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়টি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও তাকে অভিনন্দন জানাতে আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রায় নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে। গতকাল সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত হাওরের রাজধানী খ্যাত সুনামগঞ্জ উচ্ছ্বসিত মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে। খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে আসা জনতার পদভারে টইটম্বুর হয়ে যায় গোটা স্টেডিয়াম। বিশাল আনন্দ শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন হাওর অঞ্চলের উন্নয়নের রূপকার খ্যাত পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। হুডখোলা গাড়িতে লাল-সবুজের পতাকা হাতে হাজার হাজার জনতাকে সঙ্গে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা এগিয়ে যায় জেলা স্টেডিয়ামের দিকে। জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী, প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র-শিক্ষক, ব্যবসায়ী, উন্নয়ন সংস্থার কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেতে অংশ নেন আনন্দ শোভাযাত্রায়। রংবেরঙের ব্যানার-ফেস্টুনে সজ্জিত জনতার মিছিলে মিছিলে একাকার হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত তিন দীর্ঘ সড়ক। বিশ্ববিদ্যালয় পাওয়ার আনন্দে উচ্ছ্বসিত সাধারণ মানুষ রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থেকে করতালি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে অভিনন্দন জানান।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিবর্তনের নায়ক বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা আমাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয় উপহার দিয়েছেন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাতে আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। এমন হাজারো কারণ রয়েছে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের। সব বলার প্রয়োজন নেই। শুধু একটি কথা বলতে চাই, আমাদের জন্য তার মনে একটি বিশেষ স্থান রয়েছে।’

সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, ‘এই জেলার মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে।’ সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের প্রচেষ্টায় আমরা অনেক উন্নয়ন পাচ্ছি। কিন্তু শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি খাতে জনবল সংকটের কারণে সাধারণ মানুষ সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালে ৬২ জন ডাক্তারের মধ্যে ১২ জন দিয়ে চলছে। একযোগে ২২ জন নার্সকে বদলি করে নেওয়া হয়েছে। কার্ডিওলজিস্টসহ টেকনিক্যাল পদগুলো বছরের পর বছর ধরে শূন্য। আমরা স্বাস্থ্য খাতে জনবলের দেওয়ার জন্য সংসদের কথা বলি, মন্ত্রীর কাছে ডিও লেটার দিই। কিন্তু এভাবে নিয়ে যাওয়া হলে স্বাস্থসেবা ভেঙে পড়বে। জেলার অনেক স্কুল-কলেজে শিক্ষকের পদগুলো খালি।’ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য জয়া সেনগুপ্তা, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, পৌর মেয়র নাদের বখত, সাবেক এমপি শাহানা রব্বানী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির ইমন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী প্রমুখ। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এমদাদ রেজা চৌধুরী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

সর্বশেষ খবর