মার্কিন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং বলেছেন, রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র অর্থ-সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। মানবিক কারণে এ নিয়ে আমরা সবাই সজাগ রয়েছি। বিরাট রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য তিনি বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে পাশে থাকবে। সোমবার মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের হাল ধরার অনুরোধ জানানো হলে কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং এ সময় প্রতিনিধি দলকে এ কথা বলেন। খবর এনআরবি নিউজের।

উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে কংগ্রেসম্যান যোসেফ ক্রাউলি জয়ী হতে না পারায় বাংলাদেশ ককাস অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস-ব্রঙ্কস এলাকার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কংগ্রেসম্যান ক্রাউলি। চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হওয়ার পরিপেক্ষিতে ককাসের সাংগঠনিক স্থবিরতা চরমে উঠেছে। এর ফলে বাংলাদেশি-আমেরিকানদের পক্ষে তথা বাংলাদেশের যে কোনো ইস্যুতে কংগ্রেসে সোচ্চার হওয়ার কেউ নেই। এমন পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে নিউইয়র্ক সিটির ফ্লাশিং-জ্যামাইকা এলাকার বাংলাদেশি-আমেরিকানদের অকুণ্ঠ সমর্থনে বারবার নির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান (ডেমোক্র্যাট) গ্রেস মেং-এর বিকল্প নেই বলে প্রবাসীরা মনে করছেন। সে তাগিদেই ৬ জানুয়ারি এই কংগ্রেসওম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশি আমেরিকান ডেমোক্র্যাটিক লীগের এক প্রতিনিধি দল। ডেমোক্র্যাটিক লীগের প্রেসিডেন্ট খোরশেদ খন্দকারের নেতৃত্বে এই দলে ছিলেন সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি আতাউল গনি আসাদ এবং প্রধান উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার। এ সময় প্রতিনিধি দলের নেতা খোরশেদ খন্দকার তাকে জানান যে, রোহিঙ্গা ইস্যুর স্থায়ী নিষ্পত্তির জন্য কংগ্রেসের জোরালো ভূমিকার বিকল্প নেই। ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীর ভারে বাংলাদেশ জর্জরিত। এ অবস্থার দ্রুত সমাধান করা সম্ভব না হলে আঞ্চলিক শান্তি-স্থিতি বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কংগ্রেসওম্যান জানান যে, রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র অর্থ-সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। মানবিক কারণে আমরা সবাই সজাগ রয়েছি। গ্রেস মেং এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিরাট এই জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য।  রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করার পাশাপাশি বসতভিটা ছাড়তে কেন তারা বাধ্য হয়েছেন সে সব ধারাবিবরণী জানতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানানো হয় হাউসে অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন (বাজেট বরাদ্দ) কমিটির প্রভাবশালী সদস্য গ্রেস মেং-কে। আরও কয়েকজন সহকর্মী নিয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির একটি টিম গঠন এবং তাদেরকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান খোরশেদ খন্দকার। গ্রেস মেং ২০১৩ সাল থেকেই কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের সদস্যা। ইতিপূর্বে বেশ কিছু ইস্যুতে তিনি জোরালো ভূমিকা রেখেছেন। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সারা যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালনের জন্য গত কয়েক বছর ধরেই কংগ্রেসে বিল উত্থাপন করছেন গ্রেস মেং। শুধু তাই নয় গার্মেন্ট শ্রমিকদের সমস্যার সময়েও পাশে দাঁড়িয়েছেন। এসব প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ককাসের নেতৃত্ব গ্রহণের অনুরোধ জানালে কংগ্রেসওম্যান বলেন, আমি তো সব সময়ই সোচ্চার রয়েছি বাংলাদেশিদের যে কোনো ব্যাপারে। এর বাইরে চেয়ারম্যানশিপ নিতে হলে কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলসির সঙ্গে আলাপ করতে হবে। তিনি সম্মতি দিলে এ দায়িত্ব নিতে কালক্ষেপণ করব না। কংগ্রেসে উভয় দলের ৩৪ জন সদস্য ছিলেন এই ককাসে।