বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রয়োজনে খালেদার জামিনেও লড়বেন ড. কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রয়োজনে খালেদার জামিনেও লড়বেন ড. কামাল

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য আদালতে যাবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, অবশ্যই পেশাগত কারণে আমি কোর্টে যাব। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে নিজের চেম্বারে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন এ কথা জানান। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ড. কামাল বলেন, বেগম জিয়ার ক্ষেত্রে কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটলে এর সম্পূর্ণ দায় সরকারকেই নিতে হবে। আপিল বিভাগে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন খারিজ করে দেওয়ার পর আবারও তার জামিনের জন্য আবেদন করা হবে কিনা জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। জামিন যতবার প্রয়োজন ততবারই চাওয়া যাবে। তিনি বলেন, মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের আলোকে আমরা জানতে পারি, তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তার স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতির কারণে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে গভীর উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছি।

খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছি। অন্যথায় যে কোনো অনভিপ্রেত ঘটনার দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে সরকারকে বহন করতে হবে। ড. কামাল হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে টালবাহানা চলছে। আমরা এর নিন্দা প্রকাশ করছি। আমরা তার উন্নত চিকিৎসার যে দাবি করছি, সরকার যদি তা না মেনে নেয়, তাহলে এটি হবে সংবিধান লঙ্ঘন করার শামিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে গণফোরাম সভাপতি বলেন, এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ান দাবি দেশের ১৬ কোটি মানুষের দাবি। বিএনপি নেত্রীর মেডিকেল রিপোর্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, বিচারকরা মূল একটা জিনিসকে মিস করেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে আদালতে যে মেডিকেল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, সেটা অসম্পূর্ণ রিপোর্ট। কারণ, এই রিপোর্ট তৈরিতে কোনো মানসিক বিশেষজ্ঞ ছিল না। খালেদা জিয়ার মূল চিকিৎসা হচ্ছে ফিজিওথেরাপি। এ বিষয়ে কোনো বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টে তার যতগুলো রোগের কথা বলা হয়েছে, সেগুলোর কোনো একটি রিপোর্টও আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনের সঙ্গে দেওয়া হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমাদের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, প্রয়োজন হলে তিনি খালেদা জিয়ার মামলায় আদালতে যাবেন। কিন্তু বিচারপতিরা যদি পাথরের মতো বিবেকহীন হয়ে থাকেন, তাহলে আন্দোলন ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ নেই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে তার সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এটা আজকের ফ্রন্টের সভায় সবাই একমত হয়েছেন। তিনি তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এটি বাদ দিলেও একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে তার জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সরকার তা থেকে তাকে বঞ্চিত করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, জেএসডি নেতা শফিউদ্দিন স্বপন প্রমুখ। এর আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ড. কামাল হোসেন।

সর্বশেষ খবর