বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভা বৈঠক

ইরান-মার্কিন যুদ্ধে অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা

নিজামুল হক বিপুল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-মার্কিন যুদ্ধের যে দামামা বাজছে, যদি তা যুদ্ধে রূপ নেয় তাহলে আমাদের অর্থনীতিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তেলের দাম বাড়তে পারে, ডলারের দামে তারতম্য ঘটতে পারে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তিনি অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন। মন্ত্রিসভা বৈঠকসূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিজনেস পত্রিকা ‘দ্য ব্যাংকারে’ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অর্থমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে অভিনন্দন জানায় মন্ত্রিসভা। এ সময় একজন মন্ত্রী অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি এক বছরেই যে অর্জন করলেন... এ কথা বলতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই মন্ত্রীকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, এ অর্জনের পেছনে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতেরও অবদান আছে। তিনি বলেন, এ অর্জন কোনো ব্যক্তির নয়, সবার। এটি গত ১১ বছরের সরকারের অর্জন। এর সঙ্গে যারা কাজ করেছেন তাদের সবাই এ সাফল্যের দাবিদার। সূত্র জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী গত এক বছরে মন্ত্রিসভার কর্মকান্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি মন্ত্রিসভার সদস্যদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, অতীতের মন্ত্রীদের কাজের কথা মাথায় রাখবেন। আগামীতে আরও ভালোভাবে কাজ করারও পরামর্শ দেন তিনি। মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য জানান, বৈঠকে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এটি যুদ্ধে রূপ নিলে বাংলাদেশেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগারও শঙ্কা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে মন্ত্রিসভা ভোটার (সংশোধন) আইন, ২০১৯-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। একই সঙ্গে জাতীয় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালা, ২০১৯-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে বিকালে সচিবালয়ে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব জানিয়ে বলেন, ভোটার তালিকা আইনের ১১ উপধারা অনুযায়ী কম্পিউটার ডাটাবেজে সংরক্ষিত বিদ্যমান ভোটার তালিকা প্রতি বছর হালনাগাদ করা হয় ২ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে। কিন্তু মাত্র ২৯ দিন সময়ে এটি হালনাগাদ করা খুবই কঠিন কাজ। এর জন্য সময় বাড়ানো প্রয়োজন। যেহেতু বিষয়টি আইন আকারে তাই আইনে কিছুটা সংশোধন এনে সময় বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে প্রতি বছর ২ জানুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা যাবে। আর ২ মার্চ জাতীয় ভোটার দিবস পালন হবে। মন্ত্রিসভা এটি অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রতি বছর ১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস পালন ও একে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত পরিপত্রের মাধ্যমে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রিসভা ১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস পালনের বিষয়ে অনুমোদন দিলেও একে ‘ক’ করার বিষয়ে সম্মতি দেয়নি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ১ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বীমা কেম্পানিতে যোগদান করেছিলেন। তাঁকে স্মরণ রেখেইে প্রতি বছর ১ মার্চকে ‘বীমা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা এবং দিবসটি উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সর্বশেষ খবর