রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

মামলা ১৯২ প্রার্থীর বিরুদ্ধে

♦ বিএনপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর-সহিংসতা, বিনা অনুমতিতে সভা-সমাবেশ করা, সরকারি কাজে বাধার মামলা ♦ বিপরীতে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-নারী নির্যাতন মামলা

গোলাম রাব্বানী

ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটির সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ১৯২ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১৮ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে আছে ভাঙচুরের মামলাও। তবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতি এবং নারী নির্যাতনের মামলা। আর বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের নামে রয়েছে ভাঙচুর-সহিংসতা ও সরকারি কাজে বাধাদানের মামলা।

ঢাকা উত্তরের ৩২৮ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে মামলা আছে ৮৭ জনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ১০ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থীও আছেন। দক্ষিণের ৪১৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এর মধ্যে সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৮ জন।  নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তরে সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের ৫৪টি পদে ২৫১ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১৮টি পদে ৭৭ জন ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন। আর দক্ষিণে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৭৫টি পদে প্রার্থী হয়েছেন ৩৩৫ জন। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ২৫টি পদে মোট ৮২ জন এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দক্ষিণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ৪ কাউন্সিলর প্রার্থী।

হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী মমিনুল হক সাঈদ। ক্যাসিনোকান্ডের অন্যতম পুরোধা তিনি। এবার তিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়েছেন। তার নামে দুদকের মামলা চলছে। দক্ষিণের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি প্রার্থী মাসুদ চৌধুরী। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির প্রার্থী মনোয়ার হোসেন মানু। শাহবাগ থানায় তার নামে মামলা রয়েছে। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী আশরাফ আলী আজম। তার নামে মামলা রয়েছে ৪৫টি। এ ছাড়া ৮টি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি। দক্ষিণের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সৈয়দ রফিকুল ইসলাম স্বপন হলফনামায় রাজনৈতিক মামলা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। ১৫টি মামলার তালিকা তিনি দিয়েছেন।

ঢাকা দক্ষিণের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আওয়াল হোসেন। তার নামে আগে ছয়টি মামলা ছিল। বর্তমানে তার নামে বাংলাদেশ দন্ডবিধির ১৪৩/৩৪২/৩২৩/৩০৪ক/৫০৬/১০৯/৩৪ ধারায়  একটি মামলা রয়েছে, যা বর্তমানে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে। আগের ছয়টি মামলা থেকেই তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইন ভঙ্গের দায়ে একটি মামলা হয়। অপহরণ, হত্যাচেষ্টা, সম্পত্তি আত্মসাৎ ও বিস্ফোরক রাখার দায়ে বাকি মামলাগুলো হয়েছিল ২০০১ থেকে ২০০৭ এর মধ্যে। আবুল কালাম আওয়ামী লীগের সমর্থনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার নামে পাঁচটি মামলা হয় ২০০৫ থেকে ২০০৮ এর মধ্যে। সম্পত্তি আত্মসাৎ, সহিংসতা, অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরক রাখার দায়ে তার বিরুদ্ধে এসব মামলা হয়। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে মামলা প্রত্যাহারের তারিখ নেই। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম। তিনি বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি। বিনা অনুমতিতে সভা, ভাঙচুর এবং সরকারি কাজে বাধাদান করায় সর্বোচ্চ ৬৩টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ৪০টি মামলা হয় ২০১৭ ও ২০১৮ সালে এবং বাকিগুলো ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় রাজনীতির মাঠ গরম ছিল। এ সময় বিএনপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা বেশি হয়েছে। বেশির ভাগ মামলার কারণ ছিল, ভাঙচুর-সহিংসতা, বিনা অনুমতিতে সভা-সমাবেশ করা, সরকারি কাজে বাধাদানের। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতি এবং অবহেলাজনিত হত্যা ও নারী নির্যাতনের মামলা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর