শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে দুই কাউন্সিলর সমর্থকদের সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে দুই কাউন্সিলর সমর্থকদের সংঘর্ষ

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটা থেকে গতকাল বিকাল ৩টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইদুর রহমান রতনের  সমর্থকদের মধ্যে দুই দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্বতন্ত্র প্রার্থী রতনের অভিযোগ, ‘আমি কামরাঙ্গীরচর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আমার লোকজনের সবাই আওয়ামী লীগের। তাদের ওপর নির্বিচারে হামলা করেছে হোসেনের লোকজন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সবাই চিকিৎসা নিয়েছেন। আমি প্রতিটি ঘটনা থানার ওসিকে অবগত করেছি। উনার পরামর্শ মোতাবেক আজ (শুক্রবার) সাড়ে তিনটায় মিছিলের রুটও পরিবর্তন করেছিলাম। এরপরও আমার লোকজনের ওপর হামলা হয়েছে। নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা করে আগুন জ্বালিয়ে সবকিছু ল-ভ- করে দিয়েছে ওরা।’ অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে অপর কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘আমি দল মনোনীত প্রার্থী। রতন আমার কাছে বিএনপির মতোই একজন প্রার্থী। তবে আমার ওপর সে একের পর এক পরিকল্পিত অভিযোগ করে যাচ্ছে। হামলার কোনো কিছুই আমি জানি না।’ এ বিষয়ে লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার মুনতাসির রনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। সবকিছু খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। সব থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া আছে যেন প্রচারণায় মেয়র প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ব্যবস্থা নেন।’

ভয়ভীতি ও হুমকির অভিযোগ : বিএনপি অভিযোগ করেছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদিনই হামলার শিকার হচ্ছেন বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা। গতকালও গণসংযোগ চলার সময় হামলার শিকার হয়েছেন ডিএনসিসির ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী শরিফউদ্দিন জুয়েলের দুই কর্মী। এ সময় দুর্বৃত্তরা দুই প্রচার কর্মীকে ব্যাপক মারধর করেছে। তবে সব বাধা উপেক্ষা করে মাঠে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী শরিফউদ্দিন জুয়েল জানিয়েছেন, দুর্বৃত্তরা তার প্রচারণায় নিয়োজিত থাকা কর্মী ফয়সাল ও মিজানকে ব্যাপক মারধর করে। এক পর্যায়ে মিজানকে ছেড়ে দিলেও ফয়সালকে আটকে রাখে। তিনি জানান, জুমার নামাজের পর প্রায় সব মসজিদের মুসল্লিদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করছিলেন কর্মীরা। এ সময় কালাচাঁদপুর হাইস্কুল সংলগ্ন জামে মসজিদে নামাজ আদায়ের পর প্রচার চালাতে গেলে তার কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে একজনকে আটকে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ডিএনসিসির ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকে কাউন্সিলর প্রার্থী আতাউর রহমান আতা গতকাল রাজধানীর বারিধারা-জে ব্লকের বিভিন্ন রোডে গণসংযোগ করেন। এ সময় সহস্রাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, তার কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নজরুল ইসলাম ঢালী নিজেই। এ ছাড়া নজরুলের কর্মীরা আমার সব পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে। ওই প্রার্থী হুমকি দিচ্ছেন, জনগণ টিফিন ক্যারিয়ারে ভোট দিলেও তা পড়বে নৌকা মার্কায়। তিনি ৫০০ ভোট পেলেই নাকি বিজয়ী হবেন। তবে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও জনগণ ভোটকেন্দ্রে গেলে টিফিন ক্যারিয়ার মার্কায় আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হব বলে জানান আতাউর রহমান আতা। ডিএনসিসির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মাহফুজ হোসাইন খান সুমন। তিনি জানান, তার ওয়ার্ডের বেডমিন্টন মার্কার পক্ষে রয়েছেন। গণসংযোগে ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। কিন্তু নানাভাবে কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। তবে মানুষ ভোট দিতে পারলে আমি জয়ী হব। ঢাকা উত্তর সিটির ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কাজল। তিনি বলেন, গণসংযোগে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তবে এলাকায় ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছে। লাটিম মার্কার পক্ষে রয়েছে এই এলাকার মানুষ।

লালমাটিয়ায় বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর গণসংযোগে হামলা : ঢাকা উত্তর সিটির ৩২নং ওয়ার্ডের লালমাটিয়া এলাকায় বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর গণসংযোগে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত সন্ধ্যায় লালমাটিয়ার সি ব্লকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আতিকুল ইসলাম মতিনের মিছিলে হামলা করে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। এতে আহত হয় অন্তত ১০ জন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

সর্বশেষ খবর