সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
২০ দেশের কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠক

ভোটের পরিবেশ না থাকার অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের পদে পদে আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ নানা ঘটনা কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেছে বিএনপি। গতকাল বিকালে ঢাকায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আবদুল আউয়াল, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা শামা ওবায়েদ, অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, জেবা খান, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, মীর  হেলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপির এক নেতা জানান, বৈঠকে সরকারি দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকার অভিযোগ আনা হয়। এ জন্য বিএনপি সরকার, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই দায়ী করে।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিকাল ৪টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা, ভারত, ফ্রান্স,  তুরস্ক, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ২০ দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপিদলীয় প্রার্থীদের ওপর সরকারি দলের হামলা, হয়রানি, মামলা ও গ্রেফতারসহ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ কূটনীতিকদের ব্রিফিং করা হয়।

বৈঠকের পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে যা চলছে, সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মানুষ অধিকারহীন অবস্থায় আছে। ভোটের অধিকার এবং ভোটের প্রক্রিয়া সুষ্ঠু হবে কি না তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সরকারি দলের প্রার্থীরা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনে করে রাস্তার ফুটপাথে নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন, বড় বড় পোস্টার ছাপানো, সময়-অসময়ে মাইক ব্যবহার ইত্যাদি কাজ করে যাচ্ছে। এগুলোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিগোচরও হচ্ছে না। এ নিয়েও কথা হয়েছে। তিনি বলেন, এ রকম অবস্থায় নির্বাচনে কোনো  লেভেল  প্লেয়িং ফিল্ড নেই। যেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না সেখানে নির্বাচনের ওপর মানুষের ভরসা  কোত্থেকে আসবে? যত ধরনের বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি করে একপক্ষকে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে এবং আরেক পক্ষ সব আইনভঙ্গ করে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে। ঢাকার উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণের প্রার্থী ইশরাক হোসেনের ওপর হামলার ঘটনা এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দেওয়ার বিষয়টিও কূটনীতিকদের অবহিত করা হয়েছে বলে জানান আমীর খসরু। ইভিএমে ভোটের বিষয়টিও কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইভিএম ব্যবহার করার অর্থ হচ্ছে যে, প্রোগ্রামিংটা যারা করবে তাদের পক্ষে যাবে। প্রোগ্রামে যা থাকবে তাই রেজাল্ট হবে- এটা পরিষ্কার। বেশির ভাগ দেশে ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে না। দুই-চারটা দেশে যারা ব্যবহার করছে  সেখানে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ সারা জীবন ব্যালট পেপারে ভোট দিয়ে আসছে কোনো সমস্যা নেই। সেখানে ৪ হাজার কোটি টাকায় ইভিএম এনে ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করে মানুষের ভোটাধিকার  কেড়ে নেওয়ার যে প্রক্রিয়া এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

সর্বশেষ খবর