সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

শেখ হাসিনার সরকার ভিন্নধর্মী সরকার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

শেখ হাসিনার সরকার ভিন্নধর্মী সরকার

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকার একটি ভিন্নধর্মী সরকার। এ সরকারের সঙ্গে পূর্বের কোনো সরকারের তুলনা করা যাবে না। যারা আমাদের সঙ্গে একমত নয়, যারা পছন্দ করে না তারাও স্বীকার করবে এ সরকার আগের সরকারের চেয়ে আলাদা। আমরা বাংলাদেশকে বদলে দেওয়ার কাজে হাত দিয়েছি। দেশকে অন্ধকার কুয়ো থেকে টেনে বের করে এনে একুশ শতকের উপযোগী দেশ হিসেবে গড়ে তুলছি। আমরা বাংলাদেশের মানসিকতা থেকে দাসত্ববোধ পরিষ্কার করতে চাই। বাঙালিরা মনেপ্রাণে দাস হয়ে আছে। অন্যের দাস। আমরা নিজের দেশকে অন্য দেশের নিচে জায়গা দিই। অনেকে দেয়, সবাই নয়। নিরক্ষর বাঙালি যারা আছে, গ্রামেগঞ্জের মানুষ, তারা দেশকে বাংলাদেশ হিসেবেই চেনে। তথাকথিত কিছু শিক্ষিত বাঙালি আছে যারা প্রকৃত শিক্ষিত নয় তারা বাংলাদেশকে বাংলাদেশ হিসেবে মানে না। তারা মাতৃভূমিকে, বালুর দেশে, উটের দেশে খোঁজে। আমাদের পূর্বপুরুষরা এখানেই ছিলেন। আমরা এখান থেকে বড় হয়েছি। আমাদের মন থেকে দাসত্ব দূর করে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। যে শিক্ষা মানুষকে উদার করে। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে। মানবিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। যা সব মানুষকে সমান চোখে দেখায়। সব ধর্ম-মত সমান মর্যাদার অধিকারী মানে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমাদের সরকার বারবার এসব কথা বলে আসছেন।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী মেকি বাঙালি নন। তিনি খাঁটি বাঙালি। বাংলা ভাষা, বাঙালি খাদ্য, পোশাক ও সংস্কৃতি লালন করেন তিনি।

গতকাল সকালে সুনামগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নাসিমা রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলের হুইপ ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. শরিফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, পৌর মেয়র নাদের বখত, জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান পীর, জেলা মাধ্যমিক অফিসার জাহাঙ্গীর আলম, বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হোসেন আহমদ রাসেল প্রমুখ।

পরিকল্পনামন্ত্রী ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হও। মিথ্যা নয়, সত্য বলবে। ভাগ্য সম্পর্কে জানবে। ভালোকেই গ্রহণ করবে। মন্দকে নয়। পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, হাওরভাটির জেলা সুনামগঞ্জ একটি পিছিয়ে পড়া এলাকা। আমাদের পরিবেশ জলমগ্ন। একসময় আমাদের চলাফেরা কষ্টের ছিল। মহান স্বাধীনতা আমাদের উন্নয়নের অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। এখন আমরা সব জেলার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হয়েছে। আমরা অচিরেই ছাতক থেকে সুনামগঞ্জে রেল নিয়ে আসব। অবশ্যই আগামী দুই-চার বছরের মধ্যে রেল আসবে। উড়াল সড়কের মাধ্যমে দুই-তিন বছরের মধ্যে নেত্রকোনার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। জেলায় মেডিকেল কলেজ নির্মাণের কাজ চলছে। মন্ত্রিসভায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন হয়েছে। আমরা টেক্সটাইল ও নার্সিং ইনস্টিটিউট পেয়েছি। এখন আমাদের দরকার কৃষি কলেজের। এর জন্য আমরা চিন্তাভাবনা শুরু করেছি। আমরা এই কৃষি প্রধান দেশে একটি বড় কৃষি কলেজ স্থাপন করব। সুনামগঞ্জ ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জের মাঝামাঝি হাওরের খোলা বাতাস ও ঢেউ লাগে এমন জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।

সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, বর্তমান মেয়াদে শিক্ষা খাতে ১০০ কোটি টাকার কাজ চলছে আমার নির্বাচনী এলাকায়। একাডেমিক ভবন ও আবাসন সমস্যা দূর করার সঙ্গে শিক্ষার মান বাড়াতে আন্দোলন হিসেবে নিয়েছি। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ভবনের পাশাপাশি শিক্ষক সংকট দূর করা না গেলে মানসম্মত শিক্ষাদান সম্ভব নয়। শিক্ষক সংকট দূর করতে হবে। পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ দুপুরে ঐতিহ্যবাহী এইচএমপি স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। স্কুলে একটি চারতলা ও একটি পাঁচতলা ভবন বরাদ্দ দেওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সংসদ সদস্যকে কৃতজ্ঞতা জানান। এদিকে বেলা ২টায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ভৈষারপাড়ে আলহাজ মতিউর রহমান কলেজে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ ও শামীমা শাহরিয়ার এমপি। এ কলেজে পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ দুটি একাডেমিক ভবন বরাদ্দ দিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর