ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে গিয়ে দূতাবাস কর্মকর্তারা যেন তাদের কর্মপরিধির সীমা লঙ্ঘন না করেন সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেছেন, ‘তারা যেন পর্যবেক্ষণের আন্তর্জাতিক বিধিবিধান মেনে চলেন। কোনো বিশেষ দেশের কেউ যেন বেশি মাতব্বরি না করেন।’ গতকাল ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে প্রচারের শেষ দিন আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্যান্য দেশে পর্যবেক্ষণে গেলেও তাদের ওপর অনেক রকম বিধিনিষেধ থাকে। অনেক নিয়ম-কানুন মানতে হয়। আমাদের দেশে অনেক সময় অনেকে অনেক কথা বলে ফেলেন, যেগুলো আমাদের সার্বভৌমত্বকে কটাক্ষ করার শামিল। আজকের বাংলাদেশ আর আগের বাংলাদেশ নেই। গণতন্ত্র সুসংহত, উন্নত বাংলাদেশ। আমরা কোন উচ্চতায় চলে গেছি সেটা গতকালের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনলেই বোঝা যাবে। আমরা চাই, তারা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করুক সেটা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোড অব কন্ডাক্ট মেনে।’ গত জাতীয় নির্বাচনে কোনো একটি দেশের রাষ্ট্রদূত ক্যামেরা নিয়ে বুথের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন জানিয়ে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ বি এম রিয়াজুল কবীর, সানজিদা খানমসহ বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন।
এইচ টি ইমাম বলেন, মান্যবর রাষ্ট্রদূতদের যথেষ্ট সম্মান করি। বাংলাদেশের মতো এত আদর-যত্ন কেউ করে না। সেটা তো অব্যাহত থাকবে। কিন্তু আতিথেয়তা মানে এই নয় যে কেউ সেটির সুযোগ নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করবে। ডিপ্লোম্যাটদের জন্য যে নিয়ম-কানুন, সেটা দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ‘প্রযোজ্য হতে পারে না’ বলে স্মরণ করিয়ে দেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এইচ টি ইমাম।
তিনি বলেন, তাদের কোনো কূটনৈতিক দায়মুক্তিও নেই। কাজেই তাদের বেলায় আইন-কানুন যেভাবে আছে সেভাবেই যেন পালন করা হয়। তারা অনেক কিছু করতে পারবে কিংবা যেখানে-সেখানে যেতে পারবে তা মনে করার সুযোগ নেই।নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও ভোটের দিন বিএনপি কর্মীরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে পারে বলে শঙ্কার কথা জানান এইচ টি ইমাম। তিনি বলেন, ভোট গ্রহণের আগমুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য এসেছি। কীভাবে তাদের সহযোগিতা করতে পারি, শান্তি-শৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে। সার্বিক অবস্থা ভালো, আমাদের সহযোগিতার জন্যই এমনটি হয়েছে। আমরা চাই নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়। ২০১৪ ও ২০১৫ সালের ‘অগ্নিসন্ত্রাসের হোতাদের’ ঢাকা শহরের অনেক জায়গায় আশ্রয় নেওয়ার তথ্য রয়েছে দাবি করে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘তাদের ওপরে কড়া নজর রাখতে হবে। প্রয়োজন হলে তাদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে কোনোভাবেই অবনতি না হয়। এখন যে সুন্দর পরিবেশ আছে তা বজায় রাখতে হবে। গত কয়েকটি নির্বাচনে মাঝপথে বিএনপির ভোট বর্জনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো- চেয়ারম্যান বলেন, অতীতে দেখেছি নির্বাচনে যখনই একটু পরাজয়ের ভাব দেখা দেয় তখন তারা বর্জনের কথা বলেছে। এ ধরনের সুযোগ আর দেওয়া ঠিক হবে না।