শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

হাসপাতালে ভর্তি কাদের, ভিড় না করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাসপাতালে ভর্তি কাদের, ভিড় না করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাকে পর্যবেক্ষণের জন্য করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছে। তার অবস্থা  স্থিতিশীল। দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন। কাদেরের সুস্থতায় দেশবাসীর কাছে দলের পক্ষ থেকে দোয়া চাওয়া হয়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের হাসপাতালে ভিড় না করতে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। অতিরিক্ত ভিড় ঠেকাতে আজ তাকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হতে পারে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, ওবায়দুল কাদের শুক্রবার দলের সম্পাদকম-লীর সভায় যোগ দিতে সকাল ১০টায় ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসেন। এ সময় শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তিনি ধানমন্ডিতে তার নিজ বাড়িতে যান। এরপর বাড়ি থেকে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিএসএমএমইউর একাধিক চিকিৎসক জানান, সকালে কাদেরের ‘একিউট হার্ট ফেইলিউর’ হয়েছিল। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা করায় তার হার্ট আবার সচল হয়। এখন তার অবস্থা সকালের চেয়ে ভালো। তবে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর অবস্থা যখন-তখন খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কয়েক দিন ধরে ঠা-াজনিত সমস্যায় পানি জমে তার হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা কমে যায়। এ ছাড়া ডায়াবেটিসও বেড়ে গিয়েছিল। বিএসএমএমইউর কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক আলী আহসান বলেন, ওবায়দুল কাদেরের শ্বাসকষ্ট হয়েছিল, প্রেসার বেড়ে গিয়েছিল, ওষুধ দিয়ে এখন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তিনি (ওবায়দুল কাদের) ভালো অবস্থায় ছিলেন। কর্ম অবস্থায় থাকলে স্ট্রেস হয়। এ পরিস্থিতি হয়েছে স্ট্রেসের কারণে। তিনি আশঙ্কামুক্ত। তবে চিকিৎসার জন্য লম্বা সময় এখানে থাকতে হতে পারে। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, জনাব কাদেরকে বিদেশে নেওয়ার অথরিটি আমরা না। তার পরিবার আছে, প্রধানমন্ত্রী আছেন। এ ব্যাপারে তিনি সব উদ্যোগ নিয়ে রেখেছেন। ব্রিফিংকালে বিএসএমএমইউর প্রো-ভিসি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ সিকদারসহ কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ওবায়দুল কাদেরের এখন যে অবস্থা তাতে এখানেই চিকিৎসা হবে। তবে প্রয়োজনে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হবে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে অযথা ভিড় না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন নেতা-কর্মী ও শুভাকাক্সক্ষীদের প্রতি। অন্য রোগীদের যাতে সমস্যা না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সবার কাছে ওবায়দুল কাদেরের জন্য দোয়া চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখানকার চিকিৎসক এবং আমরা যারা আছি, তাদের সবার সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন। এ বিষয়ে প্রতি মুহূর্তে রিপোর্ট তিনি পাচ্ছেন। কাদের ভাই সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত বলে আমাদের জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ওবায়দুল কাদেরকে হাসপাতালে দেখতে আসেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. আবদুস সবুর, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, দলের আইন সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য রিয়াজুল কবির কাওছার, আনিসুর রহমান, সানজিদা খানম, সাহাবুদ্দিন ফরাজি, ঢাকা উত্তর সিটির আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রিসভার সদস্যগণ, এমপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর