রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

চীন থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ৩১৬ জনকে

আটজনকে হাসপাতালে ভর্তি বাকিরা হজ ক্যাম্পে

নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা ও চট্টগ্রাম

চীন থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ৩১৬ জনকে

গতকাল চীন থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের বিমানবন্দর থেকে বিশেষ নিরাপত্তায় বের করে নেওয়া হচ্ছে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাভাইরাস আক্রান্ত চীনের উহান থেকে ফেরত আসা ৩১৬ বাংলাদেশিকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে হজ ক্যাম্পে ‘কোয়ারেনটাইন’ করে রাখা হয়েছে। তার মধ্যে আটজনের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি থাকায় সাতজনকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে এবং একজনকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। গতকাল বেলা ১২টার দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তারা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। যে ৩১৬ বাংলাদেশি ফিরেছেন, তার মধ্যে তিনটি শিশু রয়েছে। তাদের কারও সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হবে না। ‘কোয়ারেনটাইন’ অবস্থায় সেনাবাহিনী ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মেডিকেল টিম তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা, চিকিৎসাসহ সব ধরনের খরচ বহন করবে বাংলাদেশ সরকার। ক্যাম্পে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দেবে। চীনের উহান থেকে ফেরা শিক্ষার্থীদের আশকোনা হজ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হজ ক্যাম্পের একেকটি ফ্লোরের মেঝেতে তাদের অনেককে একসঙ্গে পাশাপাশি বিছানা দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চীনফেরত নাগরিকদের আত্মীয়স্বজন যেন ক্যাম্পে ভিড় না করেন। ক্যাম্পে অবস্থানরত নাগরিকদের পরিস্থিতি নিয়মিত জানানোর আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা থাকবে। প্রয়োজনে তারা এসব নম্বরে ফোন করে খবর জানতে পারবেন- ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশে চীনা নাগরিক বা চীনফেরত বাংলাদেশি নাগরিকের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা। প্রতিষ্ঠানটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আটজনের লালা সংগ্রহ করা হয়েছে। টেস্ট করলে তাদের শারীরিক পরিস্থিতি জানা যাবে। সমুদ্রগামী জাহাজের মাধ্যমে যাতে ‘করোনাভাইরাস’ ছড়াতে না পারে, সেই লক্ষ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স শিপসহ একটি বিশেষ মেডিকেল টিম। চট্টগ্রাম বন্দরসূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নাবিকের পরিচর্যায় বন্দর মেডিকেল বিভাগের বিশেষ টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে মৌলিক সুস্থতা অনুশীলনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বন্দরে আসা জাহাজের মাস্টারকে পোর্ট লিমিটে আসার সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা দিতে হবে ওই জাহাজে করোনাভাইরাস আক্রান্ত নাবিক আছে কিনা। এ ছাড়া পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে আসা জাহাজগুলোয় শতভাগ নাবিকের পোর্ট হেলথ অফিসার কর্তৃক স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে নিরাপদ ঘোষণা করলেই বন্দরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৯ জানুয়ারি চীনের উহানে প্রথম এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। গতকাল পর্যন্ত মারা গেছেন ২৫৯ জন। আক্রান্ত প্রায় ১২ হাজার। এরই মধ্যে ভাইরাসটি চীন ছাড়াও এ পর্যন্ত ২৬টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ খবর