রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ভোট শেষে রণক্ষেত্র নয়াপল্টন, পোলিং এজেন্ট নিহত মোহাম্মদপুরে

আজ ঢাকায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোট শেষে রণক্ষেত্র নয়াপল্টন, পোলিং এজেন্ট নিহত মোহাম্মদপুরে

গতকাল নয়াপল্টনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষ থামাতে তৎপর পুলিশ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভোট শেষে গতকাল সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে রূপ নেয় রাজধানীর নয়াপল্টন। অন্যদিকে মোহাম্মদপুরে নিহত হয়েছেন এক পোলিং এজেন্ট।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন শেষ হওয়ার মাত্র দেড় ঘণ্টা পর নয়াপল্টনে আধা ঘণ্টাব্যাপী বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে নয়াপল্টনসহ আশপাশ এলাকায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই প্রথমে হামলা চালায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। অন্যদিকে নির্বাচন চলাকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে সংঘর্ষ বাধে কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে। আজিমপুরের একটি ভোট কেন্দ্রে পর পর ছয়টি বোমার বিস্ফোরণে প্রকম্পিত হয় গোটা এলাকা। দিনভর সহিংসতা এবং পল্টনের সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী বিএনপি মহাসচিবের ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও ঢিল ছোড়ে। তবে এতে কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। হামলার সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কার্যালয়ের ভিতরে অবস্থান করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকার দুই সিটির ভোট শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক বাবুলের সমর্থকরা একটি মিছিল নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যান। তখন বিএনপির নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের মিছিলকে লক্ষ্য করে ‘ভোট চোর’, ‘ভোট চোর’ স্লোগান দিয়ে তাদের ধাওয়া করেন। এরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে বেলা সাড়ে ৫টার দিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আরও সংগঠিত হয়ে আবারও মিছিল নিয়ে এসে বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালান। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী চলতে থাকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা। মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে যায় রাস্তাঘাট। এ ঘটনায় নয়াপল্টনসহ আশপাশ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত ৯টায় নয়াপল্টন এলাকায় এ প্রতিবেদন তৈরি পর্যন্ত থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার জামিল আহমেদ বলেন, নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে একটু উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এদিকে ভোট শেষ হওয়ার কিছু সময় আগে বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল বাশার ও বিদ্রোহী প্রার্থী মুন্সী কামরুজ্জামান কাজলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আবুল বাশারের লোকজন কামরুজ্জামানকে মারধর করেন। পরে তাকে পুলিশের গাড়িতে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পুলিশর রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ভোট গ্রহণ শেষে দুই পক্ষের প্রার্থীর মধ্যে উচ্চবাচ্য হয়। একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এতে কামরুজ্জামান আহত হলে তাকে পুলিশ হাসপাতালে পাঠায়। অন্য পক্ষকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে পল্লবী বাউনিয়া বাঁধ এলাকায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুর রউফ নান্নু ও বিদ্রোহী প্রার্থী জুয়েল রানার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় এ সময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের ৯-১০ জন আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আহতদের হাসপাতালে আনা হয়। তাদের বেশির ভাগই ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। এ ছাড়া দুজন আহত হয়েছেন ছুরিকাঘাতে। তাদের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।

শুক্রবার রাতে ডেমরা কোনাপাড়ার ৬৪, ৬৫ ও ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে আনারস মার্কার প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মনিরা চৌধুরী, তার স্বামী আতিকুর রহমান, ছোট ভাই মাসুম চৌধুরী ও তার সমর্থক রাসেলকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নিলুফার ইসলামের (মোবাইল মার্কা) সমর্থকরা কিল-ঘুষি মেরে আহত করেন। রাত আড়াইটার দিকে তাদের ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। পরে চিকিৎসা শেষে রাতেই তারা হাসপাতাল থেকে চলে যান। গতকাল সকালে তেজগাঁও নাখালপাড়ার শাহিনবাগ সিভিল এভিয়েশন স্কুল কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মঞ্জুর সমর্থকের ইটপাটকেলের আঘাতে ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন কাঞ্চনের সমর্থক সাখাওয়াত হোসেন খোকন (৪৫) মাথায় আঘাত পেয়েছেন। একই ঘটনায় মঞ্জুর সমর্থক আবদুল মালেকও (৬২) আহত হন। সাখাওয়াত হোসেনের অভিযোগ, কেন্দ্রে ঢুকতে চাইলে তাদের ওপর ইটপাটকেল ছোড়া হয়। কাঁঠালবাগান এলাকার খান হাসান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মারধরের শিকার হয়ে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীর দুজন সমর্থক আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আহতরা হলেন আতিক (৩৫)। তার মাথায় আঘাত লেগেছে। এ ছাড়া নাসির উদ্দিন (৩৩) নামে একজনের শরীরে কিল-ঘুষির আঘাত রয়েছে। সেগুনবাগিচা আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্ট খলিলুর রহমানকে (৩২) ঢুকতে না দিয়ে মারধরের অভিযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া লালমাটিয়া মহিলা উচ্চবিদ্যালয়ের পেছনে ভোর ৪টার দিকে মোহাম্মদপুর ২৯, ৩০ ও ৩২ নম্বর মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রুজি জয়ীতার (হেলিকপ্টার মার্কা) পোস্টার লাগানোর কাজ করার সময় ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের হাসানুল ইসলাম রাষ্ট্রনের (ঠেলাগাড়ী মার্কা) লোকজনের ছুরিকাঘাতে রনি (১৭) ও শিপন (১৯) নামে দুজন আহত হন। তাদের বাঁ হাতে এবং মুখমন্ডলে ছুরির আঘাতের জখম রয়েছে। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মোহাম্মদপুর এলাকায় নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের সময় আহত হন সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমন (৩২)। তার মাথায় আঘাত লেগেছে। তিনি ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টর এলাকায় ভোট কেন্দ্রে দুজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন মিরাজ (৩৫) ও সাদ্দাম হোসেন (২৫)। যাত্রাবাড়ীতে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে ইদ্রিস আলী (৩০) নামের একজন আহত হয়েছেন। তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগ সমর্থক বলে দাবি করেছেন। যাত্রাবাড়ীতে ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে আহত হয়েছেন সাগর (২৩) নামের এক যুবক। তিনি নিজেকে জাতীয় পার্টির সমর্থক বলে দাবি করেন। দুপুরে আজিমপুর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচন কেন্দ্রে আহত হয়েছেন ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি জুবায়ের হোসেন শ্যামল (২৫)। তার দাবি, বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাকে মারধর করেছেন।

নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত ১ : রাজধানীর মোহাম্মদপুরে  নির্বাচনী সহিংসতায় সুমন সিকদার (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল রাতে রায়েরবাজার রহিম বেপারী ঘাট এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। রাত ১টার দিকে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী  হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সুমন সিকদারের বাবার নাম আনোয়ার আহমেদ সিকদার। বাসা ৪/২ ব্লক এফ লালমাটিয়া। তিনি লালমাটিয়া মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট ছিলেন। ফল ঘোষণার পর দুই কাউ?ন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সুমন নিহত হন। এ ঘটনায় অপর পাঁচজন আহত হয়েছেন।

আইজিপি যা বললেন : পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, ‘ভোটে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। দুই সিটিতেই সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটার ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে আমরা এমন চিত্রই পেয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’ গতকাল বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে আইজিপি এ কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গণমাধ্যমের কর্মীরা হামলার শিকার হলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ মোহাম্মদপুরে সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের ওপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছেই শুনলাম। অবশ্যই বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন, তাদের খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ আরও কিছু কেন্দ্র ঘুরে দেখেন ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। ব্রিফিংয়ে আইজিপির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম ও ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

র‌্যাব ডিজি : বেলা ২টার দিকে বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অসাধারণ আছে। যারা এখনো ভোট দেননি, তাদের শীতের আড়মোড়া ভেঙে এসে ভোট দেওয়া উচিত।’ জয়ের পর যেন আতিশয্য না হয়, সে বিষয়ে প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আজ ঢাকায় হরতাল ডাকল বিএনপি : ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে আজ রবিবার ঢাকায় হরতাল ডেকেছে বিএনপি। গতকাল ভোট শেষে রাতে ফল ঘোষণার মধ্যে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। রাত ৮টার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যখন এই সংবাদ সম্মেলন করেন, ওই সময় দুই সিটিতেই ভোটের ফলে আওয়ামী লীগের দুই মেয়র প্রার্থী বিরাট ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। এ সময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এই নির্বাচনকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। এর প্রতিবাদে রবিবার ঢাকায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করা হবে।’ ঢাকায় হরতাল আহ্বান করে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল বলেন, আমরা আশা করব, ঢাকাবাসী তাদের অধিকার রক্ষার জন্য এবং গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সহযোগিতা করবে। আমরা এই নির্বাচন সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। উত্তর ও দক্ষিণের ফলাফলে সরকারি মদদ স্পষ্ট। আমাদের আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। এই নির্বাচনেও সরকার আগের নির্বাচনের মতোই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেছে। নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে তাদের মতো করে জয় দখল করেছে। এই সরকার সচেতনভাবে গণতন্ত্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন কখনো সুষ্ঠু হতে পারে না। নির্বাচন কমিশন অযোগ্য একটি প্রতিষ্ঠান। জবরদস্তি করে নির্বাচন করে এবং জনগণের রায়কে পদদলিত করে, দলীয়করণ করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করে ভোট লুট করা হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ করছি।

 অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, সংবাদপত্রসহ সব মিডিয়ার যানবাহন, ওষুধের দোকান, খাবার দোকান প্রভৃতি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন যেভাবে গঠন করা হয়েছে তাদের ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগের অধীনে কখনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। নির্বাচন কমিশন সরকার ‘বংশবদ’ কমিশন হিসেবে কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ  হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর