মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

চীনে যাওয়া পাইলট ক্রুদের অন্য দেশ ঢুকতে দিচ্ছে না

চীন ফেরতদের শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি আরও ১৭১ জন ফিরতে চান

নিজস্ব প্রতিবেদক

চীনের উহান থেকে বাংলাদেশিদের আনতে বাংলাদেশ বিমানের যে উড়োজাহাজটি গিয়েছিল, তার পাইলট ও ক্রুদের অন্য কোনো দেশে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে তারা আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারছেন না। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় এ বিষয় উঠে আসে। দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে  বলা হয়, চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে আরও ১৭১ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসতে চাইছেন। কিন্তু বাংলাদেশ বিমানে তাদের আনতে সমস্যা হচ্ছে। কেননা, এর আগে ৩১৪ জন বাংলাদেশিকে আনতে যে ফ্লাইট গিয়েছিল, সেটির পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত পাইলট ও ক্রুদের অন্য দেশে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে নতুন করে যারা আসতে চাইছেন, তাদের চীনের কোনো এয়ারলাইনসের ভাড়া করা বিমানে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে যারাই বাংলাদেশে আসবেন, তাদের ‘কোয়ারেন্টাইন’ পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। চীন থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে কারও শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া উহানে বা চীনে এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে (২০১৯ এন সিওভি) আক্রান্ত হননি। গতকাল দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান। এ সময় আরও জানানো হয়, আইইডিসিআর এ পর্যন্ত ৩৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছে। লক্ষণ ও উপসর্গ দেখে এবং উহান থেকে আসার কারণে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু কারও মধ্যে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, চীন থেকে আগত আটজনের নমুনার পরীক্ষার ফলাফল হাতে পেয়েছি। তাতে কারোর শরীরে করোনাভাইরাস পাইনি। তাদের মধ্যে যে সাতজন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ছিলেন, তাদের আগের রাতেই আশকোনায় হজক্যাম্পে পাঠিয়ে দিয়েছি। এদের মধ্যেই একজনের শরীরের তাপমাত্রা বেশি পাওয়ায় তাকে পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য আবার কুর্মিটোলায় পাঠিয়েছি। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) থাকা অপর চীনফেরত নারী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় করোনাভাইরাস না পাওয়া গেলেও তাকে সেখানেই রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস উপদ্রুত উহান থেকে গত শনিবার বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ৩১২ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়। বিমানবন্দরে পরীক্ষা করে তাদের মধ্যে আটজনের শরীরে জ্বর পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে সাতজনকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে এবং আরেক নার্সকে সিএমএইচে পাঠানো হয়।

পিরোজপুরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা : পিরোজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পিরোজপুরের কচা নদীর ওপর বেকুটিয়ায় ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ করছে চায়না রেলওয়ে ১৭ ব্রিজ গ্রুপ কো. লি.। গতকাল এ প্রতিষ্ঠানের ৫৭ জন চীনা নাগিরকের ডাক্তারি পরীক্ষা করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে দুজন ডাক্তারের একটি মেডিকেল টিম তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। এ সময় কারও শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি।

বেনাপোলে যন্ত্রপাতি নেই : বেনাপোল প্রতিনিধি জানান, দেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোল চেকপোস্টে ‘করোনাভাইরাস’ নির্ণয়ে চিকিৎসকদের একমাত্র ভরসা থার্মোমিটার। এর জন্য নেই পোর্টেবল লেজার ডিটেক্টর, ইনফারেন্স থার্মোমিটার ও ইলেকট্রনিকস অণুবীক্ষণ যন্ত্র। সোয়াইন ফ্লুর সময় যে থার্মাল স্ক্যানার বেনাপোল চেকপোস্টে স্থাপন করা হয়েছিল সেটি দিয়েই চলছে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ।

সর্বশেষ খবর