শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

নির্বাচনী ফলাফলের সব তথ্য প্রকাশের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনী ফলাফলের সব তথ্য প্রকাশের দাবি

দুই সিটি ভোটের সব ফলাফল প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির দুই পরাজিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। গতকাল গুলশানে ইমানুয়্যেল ব্যাংকুয়েট হলে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ধানের শীষের দুই মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনোত্তর এ সংবাদ সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন পৃথকভাবে ভিডিও তথ্য চিত্র উপস্থাপনের মাধ্যমে ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের ক্ষমতাসীন দলের লোকজন যেতে না দেওয়া, ইভিএমে ভোট কারচুপিসহ সন্ত্রাসীদের হামলার নানা ঘটনা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে দুই প্রার্থীই সিটি নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন।

এ সময় তাবিথ আউয়াল বলেন, আমাদের প্রতিপক্ষের মূল কৌশলই ছিল ভোটাররা যেন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে আর পারলেও যেন কেন্দ্রের ভিতরে গিয়ে ভোট দিতে না পারে। উদ্দেশ্যটাই ছিল ভোটাররা যাতে ভোট দিতে না পারেন। বিভিন্ন কেন্দ্রে ফেইক লাইন করা হয়েছে। যাতে তারা কেন্দ্রে না যেতে পারে। ভিতরে কেন্দ্রে খালি কিন্তু বাইরে একই দলের একই কর্মী বাহিনী জড়ো হয়ে আছে এরকম চিত্র দেখা গেছে বিভিন্ন জায়গায়। শুধু ধানের শীষ নয়, অন্যান্য দলের প্রার্থীদের ভোটাররাও কেন্দ্রের ভিতরে যাতে ঢুকতে না পারে তার পরিকল্পনা আগে থেকেই ক্ষমতাসীন দল করেছে। তিনি বলেন, এখানে পরিকল্পিত প্ল্যান ছিল যাতে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে না আসতে পারে। নির্বাচন কমিশন সব নির্বাচনী আইন নিজেরা ভঙ্গ করেছে। অন্যদের ওইসব আইন ভঙ্গ করার জন্য তারা উৎসাহ দিয়েছে। অবিলম্বে এ ফলাফল স্থগিত করার দাবি জানাচ্ছি আমি। আমাদের সামনে ফলাফলের সব তথ্য পেশ করা হোক। সব কাগজ পেশ করা হোক। ইশরাক হোসেন বলেন, ভোটের দিন নগরবাসীর সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। তাদের হক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ধানের শীষের পক্ষে একটি ব্যাপক গণজোয়ার সৃষ্টি করতে পেরেছিলাম আমরা। এগুলো দেখে ক্ষমতাসীনরা নানা কূটকৌশল প্রয়োগের চেষ্টা করেছে। সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে নির্বাচনের দিন তারা ভোট কেন্দ্রগুলো সকাল সকাল দখল করার পাঁয়তারা করেছে।  কেন্দ্র দখল করে চলে জাল ভোটের মহোৎসব। তিনি বলেন, বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং নির্বাচনী সহায়তাকারী অন্যান্য সংস্থার সদস্যদের মধ্যে অসহায়ত্ব ও হতাশা দেখতে পেয়েছি। তাদের কিছুই করার ছিল না। কারণ ওপর থেকে নির্দেশ এসেছে। দেশের সব রাষ্ট্রযন্ত্রকে দলীয় আজ্ঞাবহ হতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসাররা অসহায় হয়ে আমাদের বলেছেন, তাদের কিছুই করার নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নির্বাক হয়ে তাকিয়ে থাকে একে অপরের দিকে। ইভিএম সম্পর্কে ইশরাক বলেন, এই ত্রুটিপূর্ণ মেশিনগুলো সম্পূর্ণ অকার্যকর। ধীরে ধীরে ভোটার উপস্থিতি একেবারে কমে যাওয়ায় আমি মনে করি টোটাল কাস্টের ভোট ১০ শতাংশের অনেক কম হয়েছে। যার কারণে পরবর্তীতে বিশেষ কোড ব্যবহার করে প্রিসাইডিং অফিসারদের ব্যালট ওপেন করে ভোট দিতে বাধ্য করা হয়। তার পরেও ভোটগ্রহণ শেষে আমরা বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে রেজাল্ট সংগ্রহ করতে থাকি। সেখানেও আমরা দেখতে পাই, ধানের শীষ এগিয়ে ছিল। সন্ধ্যার পরে শিল্পকলা একাডেমি থেকে ভোটের ফলাফল ঘোষণা সন্ধ্যা ৭টা পর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে নৌকাকে বিজয়ী করে সম্পূর্ণ একটা মনগড়া ফলাফল ঘোষণা করা হয়। পুরান ঢাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগের ভিডিও চিত্র উপস্থাপন করেন ইশরাক। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, মো. শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, সাখাওয়াত হোসেন জীবন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আফরোজা আব্বাস, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আবদুল আউয়াল খান, সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, এলডিপির একাংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর