রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
ঢাকায় সমাবেশে বিএনপি নেতারা

খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে

বেগম জিয়ার কারাগারে যাওয়ার দুই বছর পূর্তিতে তার মুক্তির দাবিতে গতকাল নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশের একাংশ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার আবারও ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করল বিএনপি। বেগম জিয়ার কারাগারে যাওয়ার দুই বছর পূর্তিতে তার মুক্তির দাবিতে গতকাল নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে। আমাদের একজন নেতা-কর্মীও ঘরে বসে নেই। তারা লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে। বিজয়ের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া মুক্ত হবে। গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম জিয়াকে মুক্তি দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে। সমাবেশে ঢাকা সিটি উত্তর এবং দক্ষিণে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনও বক্তব্য দেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সহ প্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম খান আলিম। সমাবেশে উপস্থিত থাকলেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় শারীরিক অসুস্থতার কারণে বক্তব্য দেননি। এ দিকে নয়াপল্টনে সমাবেশকে ঘিরে সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দিকে জড়ো হতে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নয়াপল্টনে নেতা-কর্মীদের ঢল নামে। নির্ধারিত সময়ের আগেই নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়মুখী সড়কের একপাশ পূর্ণ হয়। নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত ছিল বিএনপি নেতা-কর্মীদের দখলে। একপর্যায়ে পুলিশ রাস্তার একপাশ যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। এ দিকে সমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সমাবেশ শেষ হয়।

সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে আটক করে রাখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। ডায়াবেটিস বেড়ে গেছে। ঠিক মতো হাঁটতে পারেন না। কারও সাহায্য নিয়ে তাঁকে চলতে হয়। তিনি কিছুই খেতে পারেন না। তার ওজন কমে গেছে কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ পাউন্ড। বর্তমান সরকার আইনে ও সংবিধানে বিশ্বাস করে না বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা নিজেরাই এই সংবিধানকে কেটে-কুটে তছনছ করে দিয়েছে। তারা আজকে জনগণের কোনো ম্যান্ডেট ছাড়াই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। এরা জনগণের সরকার নয়।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া যে মামলায় আজ কারাগারে সে মামলার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাকে কারাগারে রাখার কারণ বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার তাকে ভয় পায়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য গায়ের জোরে তাকে কারাগারে রাখা হয়েছে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এই অবস্থা চিরদিন থাকবে না। কারণ দেশের মানুষ মুক্তিকামী। তারা গণতন্ত্রকে ভালোবাসে। তারা অতীতে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, এখনো করবে। আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তিও আসবে। মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের যার যার এলাকায় কোন্দল আছে তা ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তা হলেই বেগম জিয়া মুক্ত হবেন। সেভাবে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি একটি কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের অবস্থা আরও করুণ। তারা এখন পুলিশ প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। কেন্দ্র দখল করে, ইভিএমে ভোট কারচুপি করে নির্বাচিত হতে হচ্ছে। সমাবেশে সভাপত্বি করেন মির্জা ফখরুল। অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন- ড. আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কেন্দ্রীয় নেতা বরকতউল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, ফজলুর রহমান, মিজানুর রহমান মিনু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুুলু, সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আফরোজা আব্বাস, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, আনোয়ার হোসেইন, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর