শিরোনাম
শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

সিঙ্গাপুরে চার বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত

১০ জন পর্যবেক্ষণে, শাহজালালে ফেরতদের আলাদা ইমিগ্রেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিঙ্গাপুরে আরও দুই বাংলাদেশি অভিবাসী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে দুজন বাংলাদেশি একই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিঙ্গাপুর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ নিয়ে মোট চারজন আক্রান্ত হলেন এবং আরও আট বাংলাদেশি পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

সিঙ্গাপুরের কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, ১০ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একজন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করা হয়। তাকে দ্রুত সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজ বা এনসিআইডির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। তার সঙ্গে বসবাসকারী ১৯ জনকে কোয়ারেনটাইন (পর্যবেক্ষণ) করে রাখা হয়। এর মধ্যে ১০ জন ছিলেন বাংলাদেশি। কোয়ারেনটাইনে অবস্থানকারীদের মধ্যে দুজন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বাকি দুজনের শারীরিক পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি বলে সূত্র নিশ্চিত করেছেন। সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, এ পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে ৫৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত চার বাংলাদেশির চীন ভ্রমণের ইতিহাস নেই।

সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাড়ায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীনের মতো সিঙ্গাপুরের যাত্রীদেরও পৃথক ইমিগ্রেশন ও স্ক্রিনিং (স্বাস্থ্য পরীক্ষা) করা হচ্ছে। সিঙ্গাপুর বিমানবন্দরেও নেওয়া হয়েছে একই ব্যবস্থা। বাংলাদেশি যাত্রীদের আলাদা ইমিগ্রেশনে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব ফ্লাইটের যাত্রীর স্বাস্থ্য স্ক্রিনিং করা হলেও সিঙ্গাপুরফেরত যাত্রীদের ক্ষেত্রে পৃথক লাইনে দাঁড় করিয়ে ইমিগ্রেশন ও স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মরত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে দুজন বাংলাদেশি নাগরিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় অধিকতর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিমানবন্দরে চীনফেরত যাত্রীদের মতো সিঙ্গাপুরের যাত্রীদেরও পৃথক লাইনে দাঁড় করিয়ে ইমিগ্রেশন ও স্ক্রিনিং করা হচ্ছে।’ ২১ জানুয়ারি থেকে গত বুধবার পর্যন্ত আকাশ, স্থল ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে মোট ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৯৩ যাত্রীর স্ক্রিনিং করা হয়েছে। বিদেশফেরত মোট যাত্রীর মধ্যে ৪৯ হাজার ১১০ জনই শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে প্রবেশ করেন। সিঙ্গাপুর থেকে প্রতিদিন চারটি ফ্লাইট যাতায়াত করে।

উহানফেরত ৩১২ জন বাড়ি ফিরবেন আগামীকাল : চীনের উহান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা ৩১২ বাংলাদেশি দুই সপ্তাহের পর্যবেক্ষণ শেষে আগামীকাল বাড়ি ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. জাহিদ মালেক। গতকাল রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘চীনফেরত বাংলাদেশিরা কোয়ারেনটাইনের (পর্যবেক্ষণ) শেষ পর্যায়ে আছেন। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমরা তাদের ছেড়ে দেব। এখানে আর কোনো সমস্যা নেই। তাদের সবাই ভালো আছেন।’ করোনাভাইরাস নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে জানিয়ে তা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রমাণ হওয়ার আগে এ ধরনের কথা ছড়ানো ঠিক নয়। আমরা দু-একটি ঘটনা শুনছি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। রংপুরে একজন ভর্তি হয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় নানা অসুখ নিয়ে লোকজন ভর্তি হয়। আমাদের কখনোই মনে করা উচিত না তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এ ধরনের কথা আতঙ্ক ছড়ায়।’ করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ইতিমধ্যে ১ হাজার ৩৫০ ছাড়িয়ে গেছে। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬০ হাজার। এ পর্যন্ত আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে ২৪টি দেশে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর