সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
ঢাকা-১০ আসনে উপনির্বাচন

লেমিনেটেড পোস্টারে মানা মাইকে কড়াকড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা-১০ আসনে উপনির্বাচনে প্রার্থীরা জনসভা করতে পারবেন না, তবে তারা পাঁচটি পথসভা করতে পারবেন। অলিগলি ও রাস্তাঘাটে পোস্টার ঝোলানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশন নির্ধারিত ২১টি জায়গায় পোস্টার ঝোলানো যাবে। পলিথিনে মোড়ানো (লেমিনেটেড) পোস্টার টানানো যাবে না। মাইকিং করা যাবে নির্বাচনী ক্যাম্প ও নির্দিষ্ট জায়গায়। এ উদ্যোগ সফল হলে আগামীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই পদ্ধতি চালু করতে বিধিবিধান সংশোধন করবে কমিশন।

নির্বাচনী প্রচারের দুর্ভোগ ও দূষণ কমাতে এ আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে বেশকিছু বিষয়ে ইসির সমঝোতা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ঢাকা-১০ আসনের ছয় প্রার্থীর সঙ্গে মতবিনিময় করে ইসি। মতবিনিময় শেষে ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে ইসির সমঝোতা স্মারক সই হয়। মতবিনিময়ে প্রার্থীদের কেউ কেউ ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আনা, এজেন্টদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরলেও সেগুলো আমলে নেওয়া হয়নি।

ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ছয় প্রার্থী ও ইসির কর্মকর্তারা। পরে সিইসি বলেন, এই উপনির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দল সুবিধা মতো জায়গায় পাঁচটি করে পথসভা করতে পারবে। যেখানে এক দল পথসভা করবে, সেখানে আরেক দল করবে না। জনসভা করা যাবে না। ভোটের দিন গাড়ি চলবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে নির্বাচনী ক্যাম্পে মাইক ব্যবহার করা যাবে। এর বাইরে প্রার্থীরা একেবারেই মাইক বাজাতে পারবেন না। নির্ধারিত ২১ জায়গায় পোস্টার টানানো যাবে। এর বাইরে কোথাও বা রাস্তা বা অলি-গলিতে প্রার্থীরা পোস্টার টানাতে পারবেন না। আর লেমিনেটেড পোস্টার টানানো যাবে না। সিইসি বলেন, ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনের প্রচারের জন্য এ সমঝোতা সফল হলে জাতীয় পর্যায়ে আচরণ বিধিমালা পরিবর্তন করা হবে। তবে সিইসির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান প্রার্থীদের কেউ কেউ। তারা নির্বাচন ব্যবস্থা, ভোটে ভোটারদের অনীহা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ সময় পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়। পরে সিইসি বলেন, এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে নেওয়ার দায়িত্ব ইসির নয়। এটা রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব। তবে কেন্দ্রে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব প্রিসাইডিং কর্মকর্তার। কেউ নিরাপত্তা না দেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করলে ইসি ব্যবস্থা নেবে। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে তারা এ ধরনের অভিযোগ পাননি।

মতবিনিময় সভার শুরুতে কে এম নূরুল হুদা বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৫ টন পোস্টার এমনভাবে ঝোলানো হয়েছিল যে আকাশের চাঁদ-সূর্য পর্যন্ত দেখা যায়নি। এসব পোস্টার ড্রেনসহ বিভিন্ন জায়গায় গেছে। এতে পরিবেশ নষ্ট হয়। এ ছাড়া মাইকিংয়ের কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ক্ষতি হয়।

সভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ভোটের দিন ভোটারদের সুবিধার্থে গণপরিবহন সচল রাখার অনুরোধ জানান। এ ছাড়া বিলবোর্ডে প্রচারের সুযোগ এবং ভোটের আগে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দেখার সুযোগ দেওয়ারও দাবি জানান তিনি। বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম বলেন, ভোটের দিন এজেন্টদের নিরাপত্তা দেওয়া হয় না। এজেন্টদের ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। হয় এজেন্টদের কেন্দ্রে যাওয়া, অবস্থান ও বাড়িতে ফেরার নিরাপত্তা দিতে হবে, না হলে নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে এজেন্ট তুলে দিতে হবে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. শাহজাহান বলেন, নির্দিষ্ট জায়গায় প্রচার চালালে সব ভোটার প্রার্থী সম্পর্কে জানতে পারবেন না। ভোটার উপস্থিতি কীভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে চিন্তা করারও পরামর্শ দেন তিনি।

ছয় প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ : ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ছয়জন প্রার্থীর দাখিল করা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করে সবাইকেই বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন। ইটিআই ভবনে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে এ বৈধতা ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বৈধ প্রার্থীরা হলেন আওয়াগী লীগের মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিএনপির শেখ রবিউল আলম, জাতীয় পার্টির হাজী মো. শাহজাহান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের নবাব খাজা আলী হাসান আসকারী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মিজানুর রহমান চৌধুরী এবং প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) আবদুর রহীম। তফসিল অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ ফেব্রুয়ারি। এরপর ভোট হবে ২১ মার্চ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ভোট করতে শেখ ফজলে নূর তাপসের পদত্যাগে ঢাকা-১০ আসনটি শূন্য হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর