সোমবার, ২ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
দিলু রোডে আগুন

মাকে বাঁচানো গেল না, বাবাও আশঙ্কাজনক

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের দিলু রোডে আগুনের ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছিল ৫ বছরের শিশু একেএম রুশদি। ৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মেয়ে রুশদির কাছেই পাড়ি জমিয়েছেন মা জান্নাতুল ফেরদৌস। গতকাল সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর আগে রুশদিকে এক পলক দেখতে ছটফট করছিলেন জান্নাতুল। কিন্তু মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া ছাড়া কোনো উপায়ই ছিল না স্বজনদের কাছে।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শঙ্কর পাল  জানিয়েছেন, জান্নাতুলের শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। প্রথম থেকেই তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল। এ নিয়ে দিলু রোডের আগুনের ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল চারজনে। জান্নাতুলের স্বামী শহিদুল কিরমানীর শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক। রবিবার সকালে তাকে আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে। জান্নাতুলের ননদ শেখ রেশমা বলেন, শ্বাসকষ্ট অবস্থায় জান্নাতুল বারবার বলছিলেন রুশদি কোথায়? তাকে আমি একটু দেখতে চাই। তাকে বলা হয়নি যে আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা গেছে রুশদি। জান্নাতুলকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম রুশদি ভালো আছে। চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে আসতে দেবে না। এখানে এলে রুশদির ক্ষতি হবে। এর উত্তরে জান্নাতুল অনেক কষ্ট করে বলছিলেন, তাহলে আমাকে নিয়ে চলো আমার সন্তানের কাছে। দুই চোখ মুছতে মুছতে রেশমা বলেন, জান্নাতুলের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। তিনি তার সন্তান রুশদির কাছে একেবারেই চলে গেলেন। জান্নাতুলের ভাই শাহাদাত হোসেন বিপ্লব জানান, জান্নাতুলের স্বামী পুলিশ প্লাজায় ভিআইভিপি এস্টেট ম্যানেজমেন্ট নামে একটি কোম্পানির ফাইন্যান্স ম্যানেজার। আর জান্নাতুল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের অর্থ বিভাগে চাকরি করতেন। গতকাল দুপুরে ঢামেক মর্গে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার লাশ কর্মস্থলে নেওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে তার মরদেহ নরসিংদীর মনোহরদীতে নেওয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তার সন্তান রুশদির পাশেই তাকে দাফন করা হবে। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নিউ ইস্কাটনের দিলু রোডের ৪৫/এ নম্বর বাড়িতে আগুনের ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ খবর