শুক্রবার, ৬ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
উচ্চ শুল্ক নিয়ে অসন্তোষ যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে দিল বাংলাদেশ

টিকফা চুক্তির উদ্দেশ্য সফল হয়নি

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

টিকফা চুক্তির উদ্দেশ্য সফল হয়নি

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে টিকফা চুক্তি করা হলেও এ চুক্তির উদ্দেশ্য সফল হয়নি। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আশানুরূপ অগ্রগতিও অর্জিত হয়নি। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত টিকফার পঞ্চম বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ১৮ সদস্যের দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্রিস্টোফার উইলসন এবং ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার। বৈঠকের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে ড. জাফর উদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধি টিকফার উদ্দেশ্য হলেও এ ক্ষেত্রে আশানুরূপ অগ্রগতি অর্জিত হয়নি। সে কারণে এবারের সভাটি নিয়ে বেসরকারি খাত খুব আশাবাদী। তারা আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

বৈঠকসূত্র জানান, ডব্লিউটিওর বিধান অনুযায়ী উন্নত দেশগুলোয় স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) পণ্য রপ্তানি করলে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা পায়। তবে এলডিসি হওয়ার পরও বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে সে সুবিধা পায় না। উচ্চহারে শুল্ক দিয়ে দেশটিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে হয়। শুধু তাই নয়, শ্রম খাতে সংস্কারের শর্ত দিয়ে বাংলাদেশের প্রাপ্য জিএসপি সুবিধাও স্থগিত করেছে দেশটি। এ অবস্থায় ঢাকার এ বৈঠকে এসব ইস্যুতে জোরেশোরেই কথা ওঠে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্টরা জানান, রানা প্লাজা ধসের পর ২০১৩ সালে শ্রম ইস্যুতে জিএসপি সুবিধা স্থগিতের সময় বলা হয়েছিল, ছয় মাসের মধ্যে তারা ওই বিষয়টি মূল্যায়ন করবে। এরপর প্রায় সাত বছর চলে গেছে। বাংলাদেশ শ্রম আইন সংস্কারসহ শ্রমিকের নিরাপত্তা বিষয়ে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করে, যেটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেক সময় প্রশংসাও করেছে। তবে এর পরও তারা জিএসপি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেনি। বৈঠকসূত্র জানান, জিএসপি স্থগিতাদেশের ওই বছরই বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত টিকফা চুক্তিতে সই করে, যে চুক্তিতে দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে মোট ১৬টি প্রস্তাব ও সাতটি অনুচ্ছেদ রয়েছে। এরপর ঢাকা ও ওয়াশিংটন মিলিয়ে চার দফা বৈঠক হয়েছে দুটি দেশের। তবে বাণিজ্য-বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বলার মতো অগ্রগতি সামান্যই। গতকাল পঞ্চম বৈঠকের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা বিবেচনার দাবি করলে ইউএসটিআরের প্রতিনিধি দলের নেতা দেশটির রাজনৈতিক, অভ্যন্তরীণ ও ডব্লিউটিওর বিধিবিধানের বিষয় উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে ইবিএ (অস্ত্র ছাড়া সব পণ্যে শুল্ক সুবিধা) দিয়ে আসছে। সেই যুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকেও বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়। ইউ এস প্রতিনিধি দলের নেতা বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার আশ্বাস দেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর