রবিবার, ৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

মোট বিচারকের ২৫ শতাংশ নারী

আরাফাত মুন্না

দেশের অন্য খাতগুলোর মতো বিচার কাজেও নারীরা এগিয়েছেন অনেক। সর্বোচ্চ আদালত সুুপ্রিম কোর্ট এবং অধস্তন আদালতের বিচারক হিসেবে বর্তমানে নিয়োজিত রয়েছেন ৫২৭ জন নারী। যা মোট বিচারকের ২৫ শতাংশের বেশি। ১৯৭৫ সালে একজন নারী বিচারক অধস্তন আদালতে নিয়োগের মধ্য দিয়ে এই অগ্রযাত্রা শুরু হয়। বিচার বিভাগে কর্মরত নারী বিচারকদের সবাই যে শুধু বিচারিক দায়িত্ব পালন করছেন তাও নয়, বিচার বিভাগ থেকে প্রেষণে আসা অনেক নারী বিচারক সাফল্যের সঙ্গেই প্রশাসনিক দায়িত্বও পালন করছেন। এদের অনেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন, আইন মন্ত্রণালয়, আইন কমিশন, লিগ্যাল এইডসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত। সুপ্রিম কোর্টের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে (আপিল ও হাই কোর্ট) ১০৩ জন বিচারপতি কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে আপিল বিভাগে একজন ও হাই কোর্ট বিভাগে ছয়জন নারী বিচারপতি কর্মরত রয়েছেন। এরা হলেন- আপিল বিভাগের বিচারপতি জিনাত আরা এবং হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, বিচারপতি নাঈমা হায়দার, বিচারপতি কাশেফা হোসেন, বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি কাজী জিনাত হক। সুপ্রিম কোর্ট সূত্র আরও জানায়, ২০০০ সালের আগে উচ্চ আদালতে কোনো নারী বিচারপতিই ছিলেন না। বর্তমানে অধস্তন আদালতে প্রায় এক হাজার ৯০০ বিচারক নিয়োজিত রয়েছেন। এর মধ্যে ৫২০ জন নারী। যা মোট বিচারকের ২৫ শতাংশেরও বেশি। দেশের ইতিহাসের প্রথম নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। অবসরে যাওয়া এই বিচারপতি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমিই প্রথম নারী বিচারক হিসেবে যোগদান করি। এখন অনেকেই আসছে। খুবই ভালো লাগে। আমাদের নারী বিচারকরা অনেক সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, আমাদের এখন পাঁচ শতাধিক নারী বিচারক দায়িত্ব পালন করছেন। হয়তো প্রথম নারী বিচারক হিসেবে ব্যর্থ হলে আজ এত নারী বিচারক হতো না। দেশের অন্য বিভাগের তুলনায় বিচার বিভাগে নারীরা বেশি এগিয়ে বলেও মনে করেন তিনি। বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ১৯৭৫ সালের শেষের দিকে দেশের প্রথম নারী বিচারক হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০০০ সালে প্রথমবারের মতো হাই কোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি পদে নিয়োগ পান তিনি। ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তিনি বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০১৭ সালের ৬ জুলাই তিনি অবসরে যান। নারী বিচারকদের সুবিধা-অসুবিধা-বিপদ-সংকট ইত্যাদি কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার জন্য ১৯৮৯ সালে কিছু নারী সহকর্মীর সহযোগিতায় গঠন করা হয় বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশন। এটি এখন সারা বিশ্বের নারী বিচারকদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সুপরিচিত সংগঠন। নারী বিচারকদের সমস্যা ও সুযোগ-সুবিধা প্রসঙ্গে বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা বলেন, সহকর্মীদের উৎসাহ ও সাহায্য না পেলে বিচারক হিসেবে টিকে থাকাই সম্ভব নয়।

সর্বশেষ খবর