রবিবার, ৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

এক মাস আগে দুই মামলায় জামিন হয় জি কে শামীমের

নিজস্ব প্রতিবেদক

এক মাস আগে দুই মামলায় জামিন হয় জি কে শামীমের

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় গ্রেফতার হওয়া ঠিকাদারির মাফিয়া এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম দুই মামলায় হাই কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন এক মাস আগে।

জানা গেছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি মাদক মামলায় এক বছর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয় বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ। আর ৬ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মুজিবুর রহমানের বেঞ্চ অস্ত্র মামলায় জি কে শামীমকে ছয় মাস জামিন দেয়। গতকাল এই জামিনের বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা কিছুই জানেন না বলে জানান।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলদের কাছে বিষয়টি জিজ্ঞেস করেছিলাম। তারা রবিবার ফাইল দেখে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানিয়েছেন। যদি জামিন হয়ে থাকে তাহলে আমরা এ বিষয়ে আবেদন করব।’ এদিকে সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানিয়েছে হাই কোর্টে আরও দুটি মামলায় জামিন চেয়েছেন জি কে শামীম। এগুলো হলো অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা। এরই মধ্যে দুটি মামলার জামিন চেয়ে করা আবেদন হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় হলফনামা করে দাখিল করা হয়েছে।

জানা গেছে, জামিন পাওয়া দুই মামলায়ই জি কে শামীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে বিচারিক আদালত। এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। আর মাদক মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়ার পাশাপাশি জি কে শামীমকে কেন স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিবাদীদেরকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এক মাস আগে এই দুটি মামলায় হাই কোর্ট থেকে জামিন পেলেও এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই রাষ্ট্রপক্ষের কাছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান খান বলেন, ‘অস্ত্র মামলায় জি কে শামীমের জামিন হয়েছে কি-না সেটা জানি না। তবে গণমাধ্যমের মাধ্যমে জামিনের বিষয়টি জানতে পেরেছি। জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে জামিন হাসিল করা হয়েছে কি-না সেটা মামলার নথি দেখে আমরা বক্তব্য দেব।’ বিচারপতি মো. রেজাউল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌসী রূপা বলেন, ‘ওইদিন ওই মামলাটা ছিল একেবারেই শেষের দিকে। তাই বিষয়টা কী হয়েছে, সঠিক বলতে পারব না। রবিবার ফাইল দেখে বিস্তারিত জানাতে পারব।’

জানতে চাইলে জি কে শামীমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শওকত ওসমান বলেন, ‘আমরা কোনো ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় নেইনি। রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনেই আদালত দুটি মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছে।’

উল্লেখ্য, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র‌্যাব। ওই অভিযানে যুবলীগের শীর্ষ কয়েকজন নেতা ক্যাসিনোকান্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হন। আলোচিত ঠিকাদার জি কে শামীমকে ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরদিন তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় অস্ত্র, মাদক, অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চারটি মামলা করা হয়।

এই চারটি মামলার মধ্যে ২৭ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া জামিন নামঞ্জুরের আদেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে জামিন চান তিনি। মাদক মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের জামিন নামঞ্জুরের আদেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আসেন জি কে শামীম।

সর্বশেষ খবর