বুধবার, ১১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে বাসের ধাক্কা, হাত গেল শিক্ষিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে বাসের ধাক্কা, হাত গেল শিক্ষিকার

শিক্ষাসফরে যাওয়ার সময় দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেওয়া বাসের আরোহী এক শিক্ষিকার বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পরে তাকে ঢাকায় এনে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে অস্ত্রোপচার করে হাত জোড়া লাগানোর চেষ্টা করছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। হাত হারানো ফাহিমা বেগম (৫০) রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক। এ সময় ওই বাসে থাকা অন্তত ১৪ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।

গতকাল দুপুর ১টায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে গোপালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়। হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ওই শিক্ষিকাকে গুরুতর অবস্থায় গতকাল বিকালে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় এনে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। এখানকার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আনার পরই তাকে দ্রুত অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পার্থ শংকর পাল জানান, বিচ্ছিন্ন হওয়া হাতটি সংযোজন করার চেষ্টা চলছে। ইনস্টিটিউটের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালামের নেতৃত্বে অর্থোপেডিক, প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সার্জনসহ কয়েকটি বিভাগের চিকিৎসকের সমন্বয়ে ওই শিক্ষিকার অস্ত্রোপচার শুরু হয়। দুর্ঘটনায় আহতরা সবাই রাজধানীর কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ শাখার শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ১০ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক অসিত কুমার মল্লিক বলেন, দুর্ঘটনার পর ১৫ জনকে তাদের হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে শিক্ষিকা ফাহমিদার একটি হাত কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার নুর মোহাম্মদ সিকদার জানান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শিক্ষাসফরে যাচ্ছিলেন। পথে ঘোনাপাড়া এলাকায় বাসচালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেন। এতে শিক্ষক ফাহিমা বেগমের বাঁ হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান এবং হাসপাতালের আহতদের খোঁজখবর নেন। উইলস লিটল কলেজ শাখার শিক্ষক গাজী আবুল বাশার বলেন, তারা ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছিলেন। চারটি মিনিবাস ও দুটি মাইক্রোবাসে ১২৫ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারী ছিলেন। বেলা ১টার দিকে একটি বাস গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাথালিয়া এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়ে। বাসটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে গেলে ফাহিমা বেগমের একটি হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জানা গেছে, ওই শিক্ষিকার স্বামী সিনিয়র এএসপি শফিকুল ইসলাম পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে কর্মরত। তিনি থাকতেন রাজধানীর শান্তিনগরে। তাদের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর