বুধবার, ১১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

নীতি-আদর্শ ধ্বংস হলে তা ফিরিয়ে আনা যায় না

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

নীতি-আদর্শ ধ্বংস হলে তা ফিরিয়ে আনা যায় না

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, দেশটাকে অর্ধেক ধ্বংস করে গেছে বিএনপি-জামায়াত আর ওয়ান ইলেভেন সরকার। বাকি অর্ধেকটা ধ্বংসের শেষ কিনারায় নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ সরকার। একটা বিল্ডিং ভেঙে গেলে সেখানে আবার বিল্ডিং তৈরি করা যায়, কিন্তু একটা জাতির নীতি আদর্শ ধ্বংস হয়ে গেলে দুই-চার প্রজন্মেও সেই নীতি আদর্শ আর ফিরিয়ে আনা যায় না।  গতকাল বিকালে বরিশাল নগরীর সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে কমিউনিস্ট পার্টির বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। কমিউনিস্ট পার্টির ‘দেশরক্ষা অভিযাত্রা সমাবেশ’ কর্মসূচি উপলক্ষে বিভাগের ৬ জেলার নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কমরেড সেলিম আরও বলেন, আমরা স্বপ্ন দেখতাম- এই মুক্ত এলাকার মতো সুন্দর ফুলের বাগানের মতো স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার। আমরা গান গাইতাম- একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি, একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি। ফুলের বাগান নির্মাণের স্বপ্ন ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এখন চতুর্দিকে শুধু ক্যাসিনোর বাগান আর পাপিয়ার বাগান। এই বাংলাদেশ ধ্বংসের প্রান্তে এসে গেছে এবং এর জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ সরকার। দেশ বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগের সরকারকে অপসারণ করতে হবে এবং এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার হটিয়ে বাম শক্তিকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সব বাম রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। সিপিবির বিভাগীয় সমন্বয়ক ও পটুয়াখালী জেলা কমিটির সভাপতি মো. মোতালেব মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সিপিবি সভাপতি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার লুটপাটে স্বাধীনতাপূর্ব পাকিস্তান সরকারকেও হার মানিয়েছে। পাকিস্তানের ২৩ বছরের শাসনামলে পূর্ব পাকিস্তানের ২২ পরিবারের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ ছিল। এ সরকারের আমলে গত ১০ বছরে পাকিস্তানের ২২ পরিবারের চেয়ে দশগুণ বেশি টাকা বিদেশে পাচার করেছে এদেশের লুটেরারা। এ টাকা হচ্ছে গরিবের টাকা, ব্যাংক লুটের টাকা। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সরকার উন্নয়নের যে ব্যাখ্যা দিচ্ছে সেটা ভুল পথের উন্নয়ন। এ ধরনের উন্নয়নে উপরে চাকচিক্য দেখা যায় এবং ভিতরটা অন্তসার শূন্য। এই উন্নয়নের নামে লুটেরাদের পকেটে হাজার হাজার কোটি টাকা চলে যায়। যা পরবর্তীতে বিদেশে পাচার হয়। দেশে এখন সে ধরনের উন্নয়নই চলছে। সরকার সবকিছু বুঝলেও ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয় না।  ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকার ছদ্মবেশে ভারতের একটি সাম্প্রদায়িক সরকারের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করেছে বলে অভিযোগ কমরেড সেলিমের। সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বরিশাল জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদসহ বিভাগের ছয় জেলার নেতারা। সমাবেশ শেষে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের নেতৃত্বে একটি লাল পতাকা মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর