বৃহস্পতিবার, ১৯ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে উন্নত বিশ্ব

জাপানি ওষুধ অ্যাভিগন সাফল্য চীনে, আলোচনায় কিউবার ওষুধ

তানভীর আহমেদ

করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছেন উন্নত বিশ্বের চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। চীনের তৈরি ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাচ্ছে। কিউবার ইন্টারফেরন আলফা টু-বি নামে পরিচিত এক ওষুধ কভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীদের ওপর প্রয়োগে সফলতা নিয়ে চলছে আলোচনা। ভ্যাকসিনের কয়েকটি প্রটোটাইপ পরীক্ষা করা হচ্ছে রাশিয়ার গবেষণাগারে। ইতিমধ্যে তারা এসব পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছেন। আগামী জুনেই তারা করোনার ভ্যাকসিন বাজারে আনা সম্ভব হতে পারে বলে আশা করছেন। আশার কথা শুনিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরাও। ভ্যাকসিন তৈরির শীর্ষ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও কয়েক মাসের মধ্যেই করোনার টিকা বাজারে আনার ব্যাপারে আশাবাদী। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম মানুষের শরীরে টিকা দিয়েছে। করোনা চিকিৎসায় জাপানি ওষুধ অ্যাভিগন বিস্ময়কর ফল দিচ্ছে চীনে। দ্য গার্ডিয়ান গতকাল এ খবর প্রকাশের পরই তোলপাড় শুরু হয়। জাপানে তৈরি ওষুধ অ্যাভিগন চীনে করোনা আক্রান্ত ৮০ জনের শরীরে ব্যবহার করা হয়। কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ওষুধটি দারুণ কাজ করছে। সুস্থ হয়ে উঠছেন রোগীরা। তয়োমা কেমিক্যালের অর্থায়নে অ্যাভিগন নামক ওষুধটি ২০১৪ সালে উদ্ভাবন করা হয়। এরপর থেকে আরএনএ ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসায় এটি ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার একদল বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছেন কভিড-১৯ এর সঙ্গে মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কীভাবে লড়াই করছে। এ গবেষণার ফলাফল করোনার ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়াকে অনেকটা এগিয়ে নিল বলে মত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, অ্যান্টি-ম্যালেরিয়াল ওষুধ ক্লোরোকুইন অথবা এইচআইভি দমনের মিশ্র ওষুধ রিটোনাভি কিংবা উভয় ওষুধের সংমিশ্রণ করোনাভাইরাস নিরাময়ে সাফল্য এনে দেবে। প্রযুক্তিবিদ ইলন মাস্ক গতকাল একটি গবেষণাপত্র উদ্ধৃত করে জানান, ক্লোরোকুইন নামের ওষুধ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে পারে এবং এটি  কভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীন থেকে সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের নির্দেশিকা বলছে, ক্লোরোকুইন সেবনে রোগী দ্রুত সেরে উঠছে এবং হাসপাতালে কম সময় থাকতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) গবেষণায় দেখা গেছে, পরীক্ষাগারে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে  প্রোফিল্যাকটিক (প্রতিরোধমূলক) ব্যবস্থা হিসেবে ক্লোরোকুইনের শক্তিশালী সম্ভাবনা রয়েছে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও ভারতসহ বেশ কয়েকটি উন্নত দেশ করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেছে। কিছু কিছু গবেষণা এখনো ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা পর্যায়ে রয়েছে। এসব পরীক্ষায় সাফল্যের দেখা পাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে বাজারজাত করার আগে আরও বিশদ পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা।

সর্বশেষ খবর