শুক্রবার, ২০ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

সেনাবাহিনীর দায়িত্বে দুটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার

সব ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তৃতির আশঙ্কায় সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারা দেশে সব ধরনের ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অবস্থিত ‘প্রধানমন্ত্রীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় ও ত্রাণ তৎপরতা মনিটরিং সেল’ সার্বক্ষণিক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইএসপিআর জানায়, বিমানবন্দর-সংলগ্ন আশকোনার হজক্যাম্প ও উত্তরা দিয়াবাড়ী (সেক্টর-১৮)-সংলগ্ন রাজউক অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দুটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের প্রয়োজনীয় স্ক্রিনিং করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্বাচিত ব্যক্তিদের বিমানবন্দরে প্রয়োজনীয় ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে। হস্তান্তরের পর সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এসব যাত্রীকে বিমানবন্দর থেকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে স্থানান্তর, ডিজিটাল ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রম সম্পন্ন, কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকার সময় খাবার, বাসস্থান, চিকিৎসাসহ আনুষঙ্গিক সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়, সংস্থা, অধিদফতর, বাহিনী প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। আশকোনা হজক্যাম্প ও উত্তরা দিয়াবাড়ী কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে দুটি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সবাইকে নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। আশকোনা হজক্যাম্প কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের টেলিফোন নম্বর : ০১৭৬৯০১৩৪২০, ০১৭৬৯০১৩৩৫০ এবং উত্তরা দিয়াবাড়ী কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের টেলিফোন নম্বর : ০১৭৬৯০১৩০৯০, ০১৭৬৯০১৩০৬২। এদিকে গতকাল বিকালে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি যথেষ্ট। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেনাবাহিনীকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যতটুকু সম্ভব সেনাবাহিনী পরিচালিত কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে সব ধরনের ব্যবস্থা থাকবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতির অবনতি হলে প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক লকডাউন করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে। জাহিদ মালেক বলেন, ‘মাদারীপুর, ফরিদপুর ও শিবচরের পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। অন্যান্য জেলায় যতটুকু লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি, ওইসব জায়গায় তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। এসব এলাকায় করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে বেশি মানুষ এসেছে। সেখানেই বেশি নজরদারি করা হচ্ছে। ১৭ জন যে আক্রান্ত হয়েছেন, এর বেশির ভাগ অংশ ওখানকার। এ কারণে ওই এরিয়াকে ভারনারেবল, ক্রিটিক্যাল মনে করছি।’

সব ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারা দেশে সব ধরনের ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। গতকাল বিকালে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মাঠ প্রশাসনকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে সব ধরনের ওয়াজ মাহফিল ও তীর্থযাত্রা বন্ধ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মনিটরিং সেল : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অবস্থিত ‘প্রধানমন্ত্রীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় ও ত্রাণ তৎপরতা মনিটরিং সেল’ সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে। করোনাভাইরাস (কভিড-১৯)-সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য তৎক্ষণাৎ জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে। মোবাইল নম্বর : ০১৭৬৯০১০৯৮৬, টেলিফোন : ০২৫৫০২৯৫৫০ ও ০২৫৮১৫৩০২২, ফ্যাক্স : ০২৯১০২৪৬৯ এবং ইমেইল : [email protected]

সর্বশেষ খবর