দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্যানিক সৃষ্টি করবেন না। শক্ত থাকুন। সচেতন হোন। রেডিও টেলিভিশনসহ অন্যান্য মিডিয়ার মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা বাড়ান।
গতকাল শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এসব নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বৈঠকের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সভায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধের পাশাপাশি স্বাভাবিক কাজ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, করোনার দোহাই দিয়ে আমরা কাজ কমিয়ে দেব, তা হবে না। এটা বৈশ্বিক সমস্যা, প্রতিরোধে যা যা করার তা করতে হবে। এ ছাড়া সবাইকে সেলফ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন প্রযুক্তির সময়। তাই প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক কাজই করা যায়। তবে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সতর্কভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। করোনাভাইরাসের বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় এবং মসজিদের ইমামদের দিয়ে প্রচারের উদ্যোগ নিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া বিভাগীয় পর্যায়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার যন্ত্রপাতি দ্রুত পৌঁছানোরও নির্দেশ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এসব নির্দেশনা সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মূল বার্তা হলো, প্রতিরোধ করতে হবে, কাজও করতে হবে। করোনা বৈশ্বিক সমস্যা, আমরা স্বীকার করি। বিশ্ব যেদিকে যাচ্ছে, আমরাও সেদিকেই যাচ্ছি। আমাদের নিজেদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তার মানে এই নয় যে আতঙ্ক ছড়িয়ে, কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে বসে থাকব। এতে সার্বিক অর্থনীতির ক্ষতি হবে। যেমন জাতীয় আয়ে প্রভাব পড়তে পারে। পরিবহন খাতের ওপরও প্রভাব আসতে পারে। এনইসি শুরুর প্রথম এক ঘণ্টা করোনা নিয়ে আলোচনা হয় বলে তথ্য দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে ব্রিফ করেছেন। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রবাসীদের মাধ্যমে ভাইরাসটি যাতে সারা দেশে ছড়িয়ে না যায়, সে লক্ষ্যে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হাতে অমোচনীয় সিল দেওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এনইসি সভাটি ছিল মূলত চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-এর চূড়ান্ত অনুমোদন উপলক্ষে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকার সংশোধিত এডিপির অনুমোদন দেওয়া হয়। এবারের মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার। এর মধ্যে বৈদেশিক সহায়তার ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা কমানো হয়েছে।