রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

লকডাউনের পরামর্শ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

বাংলাদেশে জরুরি অবস্থা নিয়ে আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাস ছড়ানোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনে লকডাউন কিংবা জরুরি অবস্থা জারির পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা। গতকাল দুপুরে ডব্লিউএইচওর একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের বনানীর বাসায় বৈঠককালে এ পরামর্শ দেওয়া হয়। বৈঠকে ছিলেন ঢাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আবাসিক প্রতিনিধি ড. বর্ধন জং রানা, হেল্থ ইমার্জেন্সি প্রধান ডা. ইআই সাক্কা হাম্মান, ইউএস সিডিসি কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মিহাল এ ফ্রাদমান এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাঈদ খোকন বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেশের যেসব স্থান ঝুঁকি বেশি সেসব স্থান লকডাউন করার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। প্রয়োজনে জরুরি অবস্থা জারিরও পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। তিনি বলেন, ঢাকা একটি জনবহুল শহর। বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এখানে সম্পূর্ণ লকডাউন করা কঠিন। তার পরও ঢাকা কিংবা অন্য কোনো এলাকা পার্শিয়াল (আংশিক) লকডাউন কিংবা ইমারজেন্সি (জরুরি অবস্থা) ঘোষণা করা যায় কিনা, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা। বিষয়টি আমরা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দেব।

সাঈদ খোকন বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে, বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি আগামী দিনে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। এটাকে প্রতিরোধের জন্য এখনই আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। একে মোকাবিলার দুটি পদ্ধতি রয়েছে। একটি সরকার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সম্ভাব্য সব করণীয় করে যাচ্ছে। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, আমাদের নাগরিকদের সচেতন ও সতর্ক করে তোলা। এই দুইয়ের সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব। তিনি বলেন, এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিছু কিছু এলাকা আংশিক লকডাউন হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও পুরোপুরি লকডাউন করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেক দেশেই এরই মধ্যে ইমারজেন্সি বা জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। লকডাউন এবং ইমার্জেন্সি ঘোষণা করার ফলে তারা ভালো ফলাফল পেয়েছে। ড. বর্ধন জং রানা বলেন, আমরা তো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারি না। এটা রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের বিষয়। আমরা কেউ ঝুঁকির বাইরে নেই। প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গা থেকে সতর্ক হতে হবে। আপনি আপনার জায়গা থেকে সতর্ক হবেন, আমি আমার জায়গা থেকে সতর্ক হবো। ভাইরাসের তো হাত পা নেই। সে তার মতো করে চলবে। আমরা পরামর্শ দিয়েছি বড় কোনো জনসমাগম যাতে না হয়। এরই মধ্যে সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। শুধু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নয়, বিশ্বের অন্যান্য সংস্থাও সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। ডা. এ বি এম আল্লাহ বলেন, এমন পরিস্থিতিতে লকডাউন এবং জরুরি অবস্থার বিষয়গুলো সামনে আসছে। এটা তো আমরা বললে হবে না। এখানে সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয় রয়েছে। সরকার যদি ভালো মনে করে তাহলে দেশ ও জনগণের স্বার্থে অবশ্যই এটা করতে পারে। তাই বলে সবাই যেন আতঙ্কগ্রস্ত না হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি খুব দ্রুত বদলাচ্ছে। জরুরি অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইছেন, এটা তো আসলে সরকারের সিদ্ধান্ত। তবে যদি জারি করতে পারেন, তবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যেতে পারে। সরকারের প্রতি এটা আমাদের পরামর্শ। 

সর্বশেষ খবর