রবিবার, ২২ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

এক লাখ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতির আশঙ্কা সিপিডির

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা হবে বলে আশঙ্কা করছে বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি। সংস্থাটি বলেছে, করোনাভাইরাসের কারণে অতিরিক্ত অর্থের যোগ করলে এ রাজস্ব ঘাটতি আরও বেড়ে যেতে পারে। এ মহামারীর ফলে তৈরি পোশাক খাত, চামড়াশিল্প, পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়া শুরু হয়েছে। এসব খাতের উদ্ভূত ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ বিবেচনা করা উচিত। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে সিপিডি।

গতকাল ‘করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মূল বক্তব্যে এসব কথা বলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। আরও বক্তব্য দেন সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

ব্রিফিংয়ে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, এ রকম একটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সব সরকারেরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। কারণ এর জন্য যে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সবার আগে স্বাস্থ্য, তারপর অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, আমাদের সম্পদ, রাজস্ব ও মুদ্রানীতির ওপর স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি নানা প্রতিঘাত-অভিঘাত থাকবে। এর জন্য আমাদের সম্পদের পুনর্বণ্টন, রাজস্ব বাড়ানো ও মুদ্রানীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ফাহমিদা খাতুন বলেন, যেহেতু আমদানি, রপ্তানি, রেমিট্যান্স, বৈদেশিক বিনিয়োগ, বৈদেশিক সাহায্য ইত্যাদির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, সুতরাং একটা বৈশ্বিক পর্যায় থেকে অর্থনীতির ওপর একটা অভিঘাত আসবে। আরেকটা হবে দেশের ভিতরে। বিশ্বব্যাপী সরবরাহব্যবস্থা বিঘিœত হওয়ায় একটা প্রতিঘাত আসবে। এ ছাড়া বিশ্ববাণিজ্যে যে শ্লথগতি, তার কারণেও একটা প্রতিঘাত আসবে, যার ফলে দেশগুলো কমপিটিটিভনেস হারাবে। আর যেহেতু বিশ্বের চাহিদাও কমে যাবে, তাই বাণিজ্য সংকুচিত হয়ে আসবে।

তিনি বলেন, সরকারি ব্যয়ের ওপরও একটা চাপ পড়বে, কেননা সরকারকে স্বাস্থ্য ও প্রণোদনা খাতে ব্যয় করতে হবে, অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। সরকারের রাজস্বও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিক খাতের ওপর বিরাট চাপ পড়তে পারে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বড় বড় খাতে অর্থ বরাদ্দ না দিয়ে ছোট ছোট খাতে, বিশেষ করে যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তাদের প্রণোদনা দিতে অর্থ বরাদ্দ করা প্রয়োজন- এ কথা উল্লেখ করে ফাহমিদা খাতুন বলেন, রাজস্ব আহরণের বর্তমান যে হার তাতে চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব কম আহরণ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের সংকটের সময় যখন চাহিদা দ্রুত কমে যায়, কর্মসংস্থান হারানোর প্রবণতা বাড়ে ও মানুষের আয় কমে যায়, তখন বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে অর্থনীতিতে তারল্য বাড়ানো। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় কীভাবে তারল্য বাড়ানো যায় তার একটা ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর