সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
ওষুধ উৎপাদন করতে যাচ্ছে ইরান

দ্রুত ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা

প্রতিদিন ডেস্ক

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিজ্ঞানীরা অবিরাম কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে তারা বেশ কিছু ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন। এখন চলছে ভ্যাকসিন তৈরি ও বাজারজাত করার কাজ। কিউবা, চীন, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে গবেষণা করছেন।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট ও চায়না ডেইলির খবর অনুযায়ী, মার্কিন গবেষকরাও করোনাভাইরাসের একটি প্রতিষেধক আবিষ্কার করেছেন। আবিষ্কৃত এ ওষুধ প্রয়োগ করে করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন। ওষুধটি প্রাথমিক ব্যবহারের অনুমতিও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসন। অন্যদিকে ফ্যাপিলাভির নামে আরেকটি অ্যান্টিভাইরাল নভেল করোনাভাইরাসের চিকিৎসা করতে সক্ষম হয়েছে চীন। ঝেঝিয়াং প্রদেশের সরকার ফ্যাপিলাভির অ্যান্টিভাইরালটি বাজারজাতকরণের অনুমতি দিয়েছে। করোনাভাইরাসের এটিই প্রথম কোনো প্রতিষেধক যা দেশটির ন্যাশনাল মেডিকেল প্রোডাক্টস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনেরও অনুমোদন পেয়েছে। এক খবরে বলা হয়েছে, গত ১৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। আক্রান্ত ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়। তবে তার চিকিৎসা শুরু হয় স্নোহোমিশ হেলথ ডিস্ট্রিক্টে। ওই হাসপাতালে অ্যাডিসন এবং উইলকারসনসহ কয়েকজন দক্ষ ডাক্তারকে নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়। অ্যাডিসনের দলটি হাসপাতালে বায়োহ্যাজার্ড টিম আইসোলেশন ইউনিট তেরি করে। করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে সেখানে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসক দলের প্রধান ছিলেন দিয়াজ নামে এক ডাক্তার। তিনি জানান, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের অনুমোদন পাওয়ার পর তিনি যে অ্যান্টিভাইরাল ব্যবহারের অনুমোদন পান তা ওই রোগীর ওপর প্রয়োগের কয়েক দিন পর তার জ্বর কমতে শুরু করে এবং তিনি সুস্থ বোধ করেন। জানুয়ারি ৩১ থেকে ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ওই রোগী বাড়ি ফেরেন। মার্কিন এ চিকিৎসক বলেন, ‘এটাই করোনাভাইরাসের চিকিৎসা হিসেবে প্রথম এবং একমাত্র সফলতা হলেও এ পদ্ধতি যে কাজ করছে তা বেশ ভালোই বোঝা যাচ্ছে।’

এদিকে পার্স টুডে জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সফল চিকিৎসায় চীনে ব্যবহৃত একটি ওষুধ শিগগিরই উৎপাদন করতে যাচ্ছে ইরান। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা আলী রাজ্জাজান এ খবর জানিয়ে গতকাল বলেছেন, ওষুধটির কাঁচামাল এরই মধ্যে ইরানে এসে পৌঁছেছে এবং এগুলো কাস্টমস বিভাগ থেকে ছাড়িয়ে আনার পর দুই দিনেরও কম সময়ের মধ্যে ওষুধটির উৎপাদন শুরু করবে তেহরান। চীনে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ওষুধটির সাফল্য তুলে ধরে রাজ্জাজান বলেন, এটি ভাইরাসবিরোধী একটি স্বতন্ত্র ওষুধ এবং ইরানে করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যান্য ওষুধের পাশাপাশি ব্যবহার করা হবে। তিনি উল্লেখ করেন, ইরানের বিশেষজ্ঞরা করোনা মোকাবিলায় এরই মধ্যে যেসব গবেষণা করেছেন তার ফলাফল বিশ্বের বহু দেশ ব্যবহার করছে। গবেষণা সূত্রে আরও জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর যারা বেঁচে ফিরেছেন, তাদের রক্ত থেকে অ্যান্টিবডি নিয়ে ওষুধ তৈরিরও চেষ্টা চলছে। এমন ওষুধ দিয়ে আক্রান্ত রোগীদের কয়েক সপ্তাহ চিকিৎসা দেওয়া হবে। এরকম ওষুধের কারণেই সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮৬ হাজার করোনা-আক্রান্ত মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে, যা পরবর্তীতে শরীরকে আবারও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে। এ নিয়ে চীন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অ্যান্টিবডি দিয়ে ওষুধ তৈরির আরও গবেষণা চলছে।

সর্বশেষ খবর