মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

বিশ্ব যেন এক মৃত্যুপুরী

নিউইয়র্কে এক দিনে আটজনসহ মারা গেলেন ২১ বাংলাদেশি । ইতালি স্পেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা ভয়াবহ । সারা বিশ্বে মৃত্যু ৩৬ হাজার ৪৩৪, আক্রান্ত ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩০২ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্ব যেন এক মৃত্যুপুরী

নিউইয়র্কের সড়কে গড়ে তোলা একটি অস্থায়ী মর্গ -এএফপি

মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে গোটা বিশ্ব এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। এ ভাইরাস এখন আর ১৯৯ দেশ ও অঞ্চলে সীমাবদ্ধ নেই, গ্রাস করেছে সমগ্র বিশ্বকে। এত দিন যেসব দেশ করোনামুক্ত ছিল, এখন সেসব দেশও আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক প্রদেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে এ ভাইরাস। সেখানে প্রতি ৯ মিনিটে একজন করে মারা যাচ্ছেন। এ অবস্থায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে মোট মৃতের সংখ্যা হাজারের কাছাকাছি এবং আক্রান্ত ছিল প্রায় ৬০ হাজার। এমনকি সেখানে বসবাস করা বাংলাদেশিদের মধ্যে এক দিনেই মারা গেছেন আটজন। আগেও মারা যান ১৩ বাংলাদেশি। গতকাল সন্ধ্যায় পাওয়া ওয়ার্ল্ডোমিটার, আলজাজিরা ও সিএনএনের খবর অনুযায়ী বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সোয়া ৭ লাখে, মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। ১২ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫০০, স্পেনে ৫ সহ¯্রাধিক, জার্মানিতে দেড় হাজার, ইরানে সাড়ে ৩ হাজার এবং বেলজিয়ামে সহ¯্রাধিক। এ ছাড়া এ সময় পর্যন্ত ইরানে মারা যান ১১৭ জন, স্পেনে ৮১২ জন।

এর আগে গতকাল সকাল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৪২ হাজার ৭৪৬। মোট মৃতের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪৮৯। এ ছাড়া নিউইয়র্কে প্রতি ৯ মিনিটে একজন মারা যাচ্ছিলেন। এ প্রদেশে এ সময় পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৬৫-এ। এ ছাড়া ইতালিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় মোট ১০ হাজার ৭৭৯। ২৪ ঘণ্টায় মারা যান ৮৮৯ জন। মৃতের হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্পেনেও ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় ৮২১ জনের। ইরানেও আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৬৪০-এ পৌঁছে যায়। ব্রিটেনেও মোট মৃত্যুতে ১ হাজার ২২৮ জনের রেকর্ড তৈরি করে। জার্মানিতে মারা যান ৫৪১ জন। এ সময় পর্যন্ত বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩০২ এবং মোট মৃত ৩৬ হাজার ৪৩৪।

বাংলাদেশিদের মৃত্যু : নিউইয়র্ক যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হচ্ছে। লাগামহীনভাবে সংক্রমণ ঘটছে করোনাভাইরাসের। নিউইয়র্কে গত ২৪ ঘণ্টায় আট বাংলাদেশি মারা গেছেন।

নিউইয়র্ক প্রবাসী ফটো সাংবাদিক স্বপন হাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের একটি হাসপাতালে গতকাল স্থানীয় সময় দুপুর পৌনে ১টায় মারা গেছেন। ঢাকায় প্রাপ্ত সূত্রে জানা যায়, মানবজমিনের সাবেক ফটো সাংবাদিক স্বপন কিডনি সমস্যার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ভয়াবহতায় হতবিহ্বল বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষ। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনকে। নিউইয়র্ক সিটির মেয়র সতর্ক করেছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম। দেশটির করোনা প্রতিরোধে গঠিত টাস্কফোর্সের একজন শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, করোনায় প্রাণহানি ২ লাখে পৌঁছাতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ব্যাগে করে লাশ হিমায়িত ট্রাকে তোলা হচ্ছে। সংখ্যা এত যে তা মোকাবিলা কঠিন হচ্ছে। নিউইয়র্কের এমন পরিস্থিতি আমি আগে দেখিনি।’ ইতালিতে শত চেষ্টায়ও আটকানো যাচ্ছে না মৃত্যুর মিছিল। বেঁচে থাকার প্রাণপণ চেষ্টায় আক্রান্তরা। একজন বলছেন, ‘টানা নয় দিন অক্সিজেন ব্যবহার করেছি। নিজে চেষ্টা করলেও স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারিনি। দিনগুলো শেষই হতে চাচ্ছে না।’ স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতেও লাশের মিছিল। দিনরাত এক করে দিয়েও পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসাকর্মীরা। চীনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেও দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণের আশঙ্কায় সতর্ক থাকার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৩৫ বাংলাদেশি মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন আরও অনেকে। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে চীনের উহান শহরে ছড়িয়ে পড়া কভিড-১৯ ভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার পর বিদেশে থাকা নাগরিকরাও এতে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ঠিক কত, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে দিতে পারেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর পক্ষ থেকে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত প্রকাশিত রিপোর্ট ও আমাদের প্রতিনিধিদের কাছে থেকে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে জানা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় ৩৫ বাংলাদেশি মারা গেছেন। আমাদের নিউইয়র্ক প্রতিনিধি জানান, নিউইয়র্কে এক দিনে করোনা কেড়েছে আট বাংলাদেশির প্রাণ। এ নিয়ে নিউইয়র্কে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ২২ বাংলাদেশির। আর যুক্তরাষ্ট্রে মোট প্রাণ হারিয়েছেন ২৪ বাংলাদেশি। রবিবার সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশির মৃত্যু হয় নিউইয়র্কে। নিউইয়র্কের বাইরে মিশিগানের ডেট্রয়েট সিটি ও নিউজার্সি রাজ্যের প্যাটারসনে একজন করে বাংলাদেশি নারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। রবিবার মারা যান আইটি প্রফেশনাল মির্জা নুরুল হুদা (৪৪), মোহাম্মদ আনিসুর রহমান (৭৬), জায়েদ আলম (৪৫), মোতাব্বির চৌধুরী (৬৮), বিজিত কুমার সাহা (৩৮), মোহাম্মদ শিপন হোসেন (৫৬) শফিকুর রহমান মজুমদার ও কাজী কায়কোবাদ। এরা সবাই কুইন্সের বাসিন্দা। এদিকে বাংলাদেশিদের কমিউনিটিতে মৃত্যুর মিছিল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার হারও বহুগুণ বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কয়েক শ বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর বেশির ভাগই কুইন্স, ব্রুকলিন, ম্যানহাটন ও লং আইল্যান্ডের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের অনেককেই শেষ রক্ষার প্রচেষ্টা হিসেবে ভেনটিলেশনে রাখা হয়েছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কমিউনিটির বেশ কজন সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে স্থানীয় টাইম টিভি চ্যানেলের কর্মকর্তা ইলিয়াস খসরু ম্যানহাটানের একটি হাসপাতালে দুই সপ্তাহ ধরে ভেনটিলেশনে রয়েছেন। সাংবাদিক ফরিদ আলম ও ফটোসাংবাদিক স্বপন হাইও করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুইন্সের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কমিউনিটির চিকিৎসক আতাউল হক গনি তার চেম্বারে করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করে নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া জ্যাকসন হাইটসের একটি মসজিদের একজন ইমামও করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ইতালি প্রতিনিধি জানান, করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত ইতালিতে মারা গেছেন এক বাংলাদেশি। গত ২০ মার্চ রাতে করোনাভাইরাসে ইতালির মিলান শহরের বিজুত্তেরিয়ায় ৫০ বছর বয়স বয়সী বাংলাদেশি প্রাণ হারান। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চিকিৎসার পর তিনি মারা যান। ওই ব্যক্তি মিলানে বসবাস করছিলেন। আকবর হোসেন সুমন নামে আরও একজন রোমে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রোমের মনতেভেরদে এলাকায় থাকতেন তিনি। গত আট দিন আগে তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। কামাল হোসেনের দেশের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী। পরিবার নিয়ে লন্ডন থাকেন। ব্যবসায়িক কাজে রোম এসেছিলেন। সরকারি জরুরি অবস্থায় রোমে অবস্থান করছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে রোমের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ছাড়া লোম্বারদিয়া, তরিনো, ভারেজে, বেরগামোসহ আরও কিছু শহরে বাংলাদেশি আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। প্রবাসীদের মাঝে এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। রবিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডন হাসপাতালে ৫০ বছর বয়সী এক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। তিনি মৌলভীবাজারের বাসিন্দা ছিলেন। এ নিয়ে সে দেশে মারা গেছেন অন্তত সাত বাংলাদেশি। আরেক বিপর্যস্ত স্পেনের মাদ্রিদে মৃত্যু হয়েছে এক বাংলাদেশির। কাতারে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যু হয়েছে মৌলভীবাজারের বাসিন্দা বাংলাদেশি নাগরিকের। এ ছাড়া আফ্রিকার দেশ লিবিয়া ও গাম্বিয়ায় বাংলাদেশি মারা গেছেন একজন করে।

খ্যাতনামা মার্কিন সাংবাদিকের মৃত্যু : যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিবিএসের খ্যাতনামা সাংবাদিক মারিয়া মেরক্যাডার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন সিবিএসের বরাত দিয়ে গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে। কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে রবিবার মারা যান ৫৪ বছর বয়সী এই সাংবাদিক। তিন দশক সিবিএসে কাজ করেছেন তিনি। ফেব্রুয়ারির শেষ দিক থেকেই অসুস্থতাজনিত ছুটিতে ছিলেন মারিয়া। সিবিএস বলছে, ‘২০ বছর অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে ক্যানসার ও সংশ্লিষ্ট রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন মেরক্যাডার। অসংখ্য চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে গেছেন। সহকর্মী ও পরিবারের কাছে তিনি অনুপ্রেরণা ও আশার প্রতীক।’ উল্লেখ্য, সিবিএস নিউজের পররাষ্ট্র ও জাতীয় বিভাগে সংবাদ প্রযোজক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। এ সময় প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু ও ৯/১১-এর হামলাসহ বড়সড় অনেক ব্রেকিং নিউজ কভার করেছেন তিনি।

মারা গেলেন জাপানিজ কমেডিয়ান কেন শিমুরা : জাপানিজ কমেডিয়ান কেন শিমুরা। বাংলায় ডাবিং করা অনেক ভিডিওতে তার নাম ‘কাইশ্যা’ বলে প্রচার করা হয়। এই কমেডিয়ান আর নেই। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গতকাল জাপানের ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং অর্গানাইজেশন জানায়, টোকিওর একটি হাসপাতালে গত রবিবার তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন কেন শিমুরা। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ১৯৭০ সালের দিকে অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন এই কমেডিয়ান। ’৫০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জাপানের টোকিওতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

মসজিদে নামাজ পড়ানোয় পাকিস্তানে ৩৮ ইমাম আটক : বিধিনিষেধ অমান্য করে গত শুক্রবার মসজিদে নামাজ পড়ানোর কারণে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের করাচিতে অন্তত ৩৮ ইমামকে আটক করেছে পুলিশ। এ ছাড়া এফআইআর করা হয়েছে ৮৮ জনের নামে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া কমাতে গত বৃহস্পতিবার সিন্ধু প্রদেশে মসজিদে নামাজ পড়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে সেখানকার প্রাদেশিক সরকার। এ কারণে মধ্য জেলায় ২১ জনের নামে এফআইআর এবং ২৩ জনকে গ্রেফতার, পূর্ব জেলায় ২০ এফআইআর, করাঙ্গিতে ১২ এফআইআর ও দুজনকে আটক, দক্ষিণ জেলায় তিন এফআইআর ও একজনকে গ্রেফতার এবং করাচিতে আট এফআইআর ও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এফআইআরভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও মসজিদের কেয়ারটেকাররাও রয়েছেন।

ভারতে এক দিনে মারা গেলেন ছয়জন : ভারতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ১০৬ জনের শরীরে নতুন করে কভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়েছে। নতুন আক্রান্ত যোগ হয়ে গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে করোনা রোগীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২৪-এ। এদিনই মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের। তারা দিল্লি, গুজরাট, কর্ণাটক, কেরালা, মহারাষ্ট্র ও তেলেঙ্গানা রাজ্যের বাসিন্দা। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী করোনা সংক্রমিত সন্দেহে গোয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা ৬৮ বছরের এক বৃদ্ধা গতকাল ভোরে মারা যান। এ ছাড়া মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে কেরালার কান্নুরে। সেখানে সদ্য শারজাহ থেকে ফেরা বছর পঁয়ষট্টির এক বৃদ্ধ মারা যান।

কলকাতা প্রতিনিধি জানান, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। ৪৪ বছর বয়সী ওই নারী কালিম্পঙের ওভেন রোডের বাসিন্দা ছিলেন। গত ২৬ মার্চ থেকে এ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। রবিবার দিবাগত রাত ২টা নাগাদ তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দ্বিতীয় মৃত্যুর ঘটনা ঘটল পশ্চিমবঙ্গে। এর আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৩ মার্চ দমদমের বাসিন্দা ৫৭ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছিল। এদিকে রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২১। গোটা ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ২৪, মৃত ২৭।

লকডাউন নয়, সামাজিক দূরত্বে গুরুত্ব দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া : লকডাউন না করে প্রতিনিয়ত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দীর্ঘমেয়াদি লড়াই করার প্রস্তুতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়া ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (এবিসি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিষেধক তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এ রকম ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে রেখে এগিয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়া এবং গভীর পর্যবেক্ষণে রাখবে পরিস্থিতি যেন খারাপ কিছু হলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে পারে। তাই আপাতত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত আকারে অপরিহার্য কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে সরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর