শুক্রবার, ৩ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

সর্দি-জ্বর নিয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের লক্ষণ সর্দি, জ্বর ও কাশি নিয়ে সারা দেশে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের দুজন হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর মধ্যে ঢাকায় দুজন এবং নরসিংদীতে একজন মারা যান। এর আগে গত মঙ্গলবার ও বুুধবার সর্দি, জ্বর ও কাশি নিয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়। এদিকে সুনামগঞ্জে ওমান প্রবাসীর মৃত্যুর পর একটি গ্রাম লকডাউন করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

জানা গেছে, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে গত মঙ্গলবার রাতে একজন ও আরেকজনের বুধবার রাতে মৃত্যু হয়। তাদের বয়স ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে। সামাজিক নিরাপত্তার স্বার্থে মৃত দুজনের পরিচয় জানায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে গত মঙ্গলবার মারা যাওয়া একজন করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না বলে নমুনা পরীক্ষার পর জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

গতকাল দুপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া জানান, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে জ্বর ও সর্দি-কাশি নিয়ে ভর্তি দুই রোগী গত দুই দিনে মারা গেছেন। প্রথমজনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। তার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। তিনি আরও বলেন, আরেকজনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে জানা যাবে তিনি করোনায় সংক্রমিত ছিলেন কি না। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পরপর দুজনের মৃত্যুর পর রিপোর্ট না দিয়ে চিকিৎসকরা লাশ নিয়ে যেতে বললে জটিলতা তৈরি হয়। স্বজনরা নিশ্চিত নন যে মৃতরা করোনায় আক্রান্ত কি না। একদিন অপেক্ষার পর তারা হট্টগোল শুরু করেন। পরে একজনের নেগেটিভ বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, সমাজসেবা অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের সহায়তায় স্বজনদের কাছে দুটি মরদেহ হস্তান্তর করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার জালালপুর গ্রামে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় জয়নাল আবেদীন (২৮) নামে এক ওমান প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পুরো গ্রামকে লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার  মৃত্যু হয়। স্বজনরা বলছেন, তার মাঝে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো উপসর্গ ছিল না। লিভারের জটিলতায় ভোগার পর মৃত্যু হয়েছে তার। মৃতের স্বজনরা জানান, গত ১৮ মার্চ জয়নাল আবেদীন ওমান থেকে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশে ফেরেন। দেশে আসার পর তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখে স্বাস্থ্য বিভাগ। গতকাল ভোরে কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন পেটে ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতিকালে মৃত্যু হয় তার। সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন বলেন, মৃত প্রবাসীর শরীরের করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনো উপসর্গ ছিল না। লিভারের রোগে ভুগছিলেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। তারপরও মৃতের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না পরীক্ষার করার জন্য। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় প্রবাসীর মৃত্যুর পর জালালপুর গ্রাম লকডাউন করে রাখা হয়েছে। মৃতের নমুনা পরীক্ষার পর ফলাফল নেগেটিভ এলে লকডাউন খুলে দেওয়া হবে। নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, নরসিংদীর রাঙ্গামাটি এলাকায় ঠা া ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে জাফর (৪৫) নামে এক দিনমজুর মারা গেছেন। গতকাল পৌর শহরের রাঙ্গামাটি এলাকায় নিজ বাড়িতে মারা যান তিান। খবর পেয়ে পুলিশ ও স্বাস্থ্যবিভাগের চিকিৎসকরা নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করেন। পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, নিহত জাফর ডেইলি বেসিকে বিভিন্ন স্থানে কাজ করতেন। গত এক সপ্তাহ ধরে তারা ঠা া ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। তবে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর