রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

অর্থনৈতিক ক্ষতি উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর প্যাকেজ আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব থেকে উত্তরণের পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন আজ। সকাল ১০টায় গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন খাতের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারের পাশাপাশি বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও প্রেস কনফারেন্সটি সরাসরি সম্প্রচার ও প্রচার করবে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব উত্তরণের লক্ষ্যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে গণভবনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে গার্মেন্ট খাতসহ রপ্তানি শিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পর প্রণোদনা চান সব খাতের ব্যবসায়ীরা। প্রধানমন্ত্রীর আজকের সংবাদ সম্মেলনে দেশবাসীর দৃষ্টি আজ গণভবনে।

গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির জন্য কী করা যায়, ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্ষুদ্র ব্যবসা, শিল্প খাতের জন্য সম্ভাব্য করণীয়, ব্যাংক সুদ সিঙ্গেল ডিজিটের বাস্তবায়ন বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে আজ। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতে যত প্রয়োজন অর্থ দেওয়ার ঘোষণাও আসতে পারে সংবাদ সম্মেলনে। তবে কোথাও যেন কোনো অনিয়ম না হয় সে ব্যাপারে কঠোর সর্তকবার্তা দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনকে ঘিরে প্রত্যাশা বাড়ছে দেশের প্রায় সব খাতের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের মধ্যে। কারণ চলমান পরিস্থিতিতে হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় সব খাতই। ধস নেমেছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। দীর্ঘ ছুটিতে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস-আদালত। ঢাকাসহ পুরো দেশ কার্যত লকডাউনে। মারাত্মক ক্ষতির মুখে নিম্ন আয়ের দিনমজুর, রিকশাচালকরা। করুণ অবস্থা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। হুমকির মুখে গণমাধ্যম ও সংবাদপত্র শিল্প। এ ছাড়া আইন, সংস্কৃতি ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকসহ প্রায় সব সংগঠনই ক্ষতির মুখে। এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে বিশেষ প্রণোদনা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রণোদনা চেয়ে গণমাধ্যমেও আবেদন করেছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। তাদের প্রত্যাশা দেশের চলমান পরিস্থিতি কাটিয়ে তুলতে বা বিভিন্ন খাতকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। নইলে মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়তে হবে তাদের। ৩০ মার্চ গণমাধ্যমের সংকটের বিষয় বিবেচনা করে সরকারের কাছে বিশেষ প্রণোদনা চেয়েছে সম্পাদক পরিষদ। ওই দিন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সরকারি বাসভবনে বৈঠক করেন নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব), সম্পাদক পরিষদ ও অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) এবং এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের নেতারা। এ সময় করোনার কারণে গণমাধ্যমে সৃষ্ট সংকট সমাধানে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। দেশের সংস্কৃতিকর্মী ও লোকশিল্পীদের জন্য সরকারের কাছে ৫০ কোটি টাকা অনুদান চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ১৮ সংস্কৃতজন। আইনজীবীদের জন্য ৩০০ কোটি টাকা প্রণোদনা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠন। এ ছাড়া আরও প্রণোদনা চেয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। আড়াই হাজার কোটি টাকা চেয়েছে তারা। এ ছাড়া প্রণোদনা চেয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠন।  প্রত্যেকের প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকের সংবাদ সম্মেলনে তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে টিকিয়ে রাখতে সুদমুক্ত প্রণোদনা ঘোষণা করবেন।

সর্বশেষ খবর