রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

জরুরি সেবার আওতায় সংবাদপত্র ও মিডিয়া : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশব্যাপী চলমান গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্তের আওতামুক্ত থাকবে মিডিয়া ও সংবাদপত্রবাহী গাড়ি। গতকাল সন্ধ্যায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উদ্ধৃতি দিয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো. আবু নাছের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

দেশব্যাপী চলমান গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্ত ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করার কথা জানিয়ে গতকাল দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তি দেয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এতে বলা হয়, পণ্য পরিবহন, জরুরি সেবা, জ্বালানি, ওষুধ, পচনশীল দ্রব্য ও ত্রাণবাহী পরিবহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। তবে বিজ্ঞপ্তিতে মিডিয়ার গাড়ির বিষয়টি উল্লেখ ছিল না। এরপর সন্ধ্যায় ওবায়দুল কাদেরের উদ্ধৃতি দিয়ে তথ্য অফিসার মো. আবু নাছের ওই বিজ্ঞপ্তিটি পাঠান।

বিএনপি জাতিকে বিভ্রান্ত করছে : এর আগে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সৃষ্ট বৈশি^ক সংকট মোকাবিলায় মানুষ যখন এক প্ল্যাটফরমে দাঁড়িয়েছে, তখন অর্বাচীনের মতো বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য জাতিকে বিভ্রান্ত করে। তাদের এ বালখিল্যের কারণে এক দশকের বেশি সময় ধরে তারা জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। তাদের বক্তব্য ও প্রস্তাব আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়া একজন দিশাহারা রাজনীতিকের অসংলগ্ন প্রলাপ ও ব্যর্থতার বেসামাল বহিঃপ্রকাশ। গতকাল বিকালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিওবার্তায় এসব কথা বলেন তিনি। পরে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত বিবৃতি প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার জন্য পাঠানো হয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার শুরু থেকেই একটি গাইডলাইন প্রস্তুত করে রেখেছে এবং এ ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতন ও দায়িত্বশীল জনগণকে প্রধান নিয়ামক ধরে সম্মিলিত প্রয়াস গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে সুুনির্দিষ্ট কর্মসূচি ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। এর বাইরেও সামাজিক সুরক্ষার পাশাপাশি অপ্রত্যাশিত ব্যয় বরাদ্দসহ দীর্ঘমেয়াদি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গৃহীত এসব কর্মসূচিকে ভিত্তি ধরে কোনো প্রস্তাব দিতেন, আমরা মনে করি তা জাতির জন্য আশাব্যঞ্জক হতো। কিন্তু তারা তা না করে সরকারের বিরুদ্ধাচারের নামে বিপরীত প্রস্তাব জাতির সামনে তুলে ধরে জাতিকে বিভ্রান্ত ও উদ্বিগ্ন করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন, তা আমাদের অর্থনীতির ঊর্ধ্বগামী সম্ভাবনার বিপরীত। এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য জনগণকে শুধু হতাশই করতে পারে।’

ত্রাণ বিতরণে অধিকতর জমায়েত নয় : এদিকে সকালে আরেকটি ভিডিওবার্তায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক দেশবাসী ও নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘করোনায় শঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকুন। আসুন, প্রধানমন্ত্রীর ৩১ নির্দেশনা মেনে আমরা এ অদৃশ্য শক্তির মোকাবিলা করি। আর ত্রাণ বিতরণে অধিকতর জমায়েত করে বিপজ্জনক পথ যেন বেছে না নিই। কোনো অবস্থাতেই অধিকতর জমায়েত নয়। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিন।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে আহ্বান, সুদিনের প্রত্যাশায় সাময়িক কষ্ট ও ত্যাগ মেনে চলতে হবে। দেশবাসী যাতে নিজেদের ভালোর জন্য সুদিনের আশায় সাময়িক ত্যাগ স্বীকার করেন। এ অবস্থা মেনে আমরা যদি এগিয়ে যাই, হয়তো অচিরেই দেশের অবস্থা আরও ভালোর দিকে যাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে, নিয়মকানুন মেনে চললে অবশ্যই আমরা এ মহাসংকট থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারব। নিজেদের জীবন, সম্পদ রক্ষা করতে পারব।

সর্বশেষ খবর