শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

জেলায় জেলায় লকডাউন

ছুটি বাড়ল ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত, সন্ধ্যা ৬টার পর বের হলেই ব্যবস্থা, বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গার্মেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

জেলায় জেলায় লকডাউন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে রাজধানীর ডেমরার কাজলা এলাকায় মানুষের যাতায়াত সীমিত করতে লকডাউন করেন স্থানীয়রা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। সন্ধ্যা ৬টার পর কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না। এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে সীমিত করা হয়েছে। তিন দফা ছুটি বাড়ানো হলেও চতুর্থ দফায় এসে এই প্রথম কড়াভাবে সরকারি আদেশ জারি করা হলো। সরকারের আগের আদেশগুলো জনসাধারণ যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় সরকার এবার কঠোর বার্তা দিয়েছে। সরকারি আদেশের পাশাপাশি দেশের প্রায় সব জেলায় লকডাউন কঠোরভাবে কার্যকর করছে স্থানীয় প্রশাসন।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর এ নির্দেশনা গতকাল জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অন্যান্য সাধারণ ছুটির মতো এ ছুটি বিবেচিত হবে না উল্লেখ করে সরকারি আদেশে বলা হয়েছে, ছুটির আদেশে যেসব নির্দেশাবলির কথা বলা হয়েছে সেগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। কেউ সরকারের এ নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত কয়েক দিনে সারা দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জেলায় জেলায় লকডাউনের আওতাও বাড়ানো হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সরকার চতুর্থ দফায় সাধারণ ছুটি বাড়িয়েছে বলে জানা গেছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আগের ছুটির ধারাবাহিকতায় আগামী ১৫ ও ১৬ এপ্রিল এবং ১৯ থেকে ২৩ এপ্রিল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো। সাধারণ ছুটির সময় আগামী ১৭-১৮ এপ্রিল এবং ২৪-২৫ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি সংযুক্ত থাকবে।

এ আদেশে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। অতীব জরুরি ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে সবাইকে অনুরোধ করা হলো। সন্ধ্যা ৬টার পর কেউ ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না। এ নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে সীমিত করা হলো। বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সব কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে।

আদেশে বলা হয়েছে, জরুরি পরিষেবার (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট ইত্যাদি) ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না। কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, জ্বালানি, সংবাদপত্র, খাদ্য, শিল্পপণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন এবং কাঁচা বাজার, খাবার, ওষুধের দোকান ও হাসপাতাল এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবে। জরুরি প্রয়োজনে অফিস খোলা রাখা যাবে জানিয়ে ছুটির এ আদেশে আরও বলা হয়েছে- প্রয়োজনে ওষুধশিল্প, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা চালু রাখতে পারবে।

মানুষের জীবন-জীবিকার স্বার্থে রিকশা-ভ্যানসহ যানবাহন, রেল, বাস সার্ভিস পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং-ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।

প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর প্রায় ১৫ দিনের মাথায় গত ২৩ মার্চ সরকার প্রথম দফায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সব অফিস বন্ধ রেখে সারা দেশে যানবাহন চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দ্বিতীয় দফায় ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটির মেয়াদ বাড়ায় সরকার। এরপর তৃতীয় দফায় আরেক আদেশে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়। এবার চতুর্থ দফায় সেই ছুটির মেয়াদ ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে সরকার।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আইইডিসিআর থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে পারে এ আশঙ্কা থেকে সরকার চতুর্থ দফায় ছুটির মেয়াদ বাড়িয়েছে। সূত্র জানান, চলতি মাসের শেষের দিকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি হতে পারে। এ সংক্রমণ রোধে মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করতেই সরকার ছুটির মেয়াদ বাড়াল।

এদিকে সরকারি ছুটি ঘোষণার পরপরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এর আগে তিন দফায় ১৮ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

জেলায় জেলায় লকডাউন : জামালপুরে দুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পুরো জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও সুরক্ষার জন্য পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে পুরো জেলায় লকডাউন বলবৎ থাকবে।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে গত দুই দিন আগে লকডাউন শুরু করা হয়েছে। লকডাউনকৃত এসব এলাকার রাস্তাগুলো বাঁশ ও গাছ দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ছাড়া টুঙ্গিপাড়ায় দুজন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় আক্রান্তদের বাড়িসহ আশপাশের ৬টি বাড়িতে লাল কাপড় টাঙিয়ে লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে।

চাঁদপুরে করোনাভাইরাস ঝুঁকি মোকাবিলায় এ-সংক্রান্ত কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে চাঁদপুর জেলাকে অবরুদ্ধ (লকডাউন) ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া ৩টায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান এ-সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। আর এ ঘোষণা শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে কার্যকর হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আল মামুন নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়ি আসার কারণে তার বাড়ি লকডাউন করে দিয়ে তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ প্রদান করেছে প্রশাসন।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টার থেকে পালিয়ে দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে আসা মোস্তাক আল মামুন নামে এক যুবককে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখেছে পুলিশ।

তার পরিবারের সবাইকে বাড়িতে বসবাস নিশ্চত করতে গ্রামপুলিশের পাহারা বসানো হয়েছ। গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাইবান্ধা জেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে; যা গতকাল বিকাল ৫টা থেকে কার্যকর হয়েছে। অন্যদিকে গাইবান্ধায় নতুন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন আরও তিনজন। ফলে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৮-এ দাঁড়িয়েছে। নাটোর সদর উপজেলার জালালাবাদ গ্রামকে লকডাউন করে দিয়েছে এলাকাবাসী। নারায়ণগঞ্জ থেকে ২১ ব্যক্তি জালালাবাদ গ্রামের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে আসায় তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার পাশাপাশি এলাকাবাসী লকডাউন করে দেয় গ্রামটি।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলাকে পাশের উপজেলা ও জেলা থেকে লকডাউন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ৩টি প্রবেশপথে ব্যারিকেড দিয়ে এ লকডাউন করা হয়। এর ফলে পাশের মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলা এবং কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সঙ্গে সড়কপথে দৌলতপুরের যোগাযোগ বন্ধ হয়েছে।

করোনা সংক্রমিত জেলার ব্যক্তি বা পরিবহনের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে কুষ্টিয়ায়। বৃহস্পতিবার রাতে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন। এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধের লক্ষ্যে ১০ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সিলেট, মাদারীপুর, গাজীপুর ও করোনা সংক্রমিত যে কোনো জেলা থেকে কোনো ব্যক্তি ও পরিবহন এ জেলায় প্রবেশ করতে পারবে না।

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। ইউনিয়নগুলো হলো- চরগিরীশ, মনসুরনগর, তেকানি, নিশ্চিন্তপুর, নাটুয়ারপাড়া ও সোনামুখী। কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ হাসান সিদ্দীকি জানান, এ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নসংলগ্ন পাশের জামালপুর ও বগুড়ার ধুনট উপজেলায় করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ কারণে জামালপুর ও বগুড়া থেকে কেউ যাতে কাজিপুরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এক নারীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরে ওই রাতেই উপজেলার শিলাসী গ্রামের ২৩ বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুবুর রহমান।

করোনা সংক্রমণ রোধে কুমিল্লা জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর। জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক জানান, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুমিল্লাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়।

নীলফামারীতে চিকিৎসকের পর এবার করোনায় আক্রান্ত হলেন নারায়ণগঞ্জ-ফেরত এক যুবক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন রণজিৎ কুমার বর্মণ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসিম আহমেদ জানান, করোনায় আক্রান্ত ওই যুবকের বাড়িসহ আশপাশের ২০টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। তার সংস্পর্শে যেসব লোকজন এসেছেন তাদেরও শনাক্তের কাজ চলছে।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার দুটি গ্রাম লকডাউন ঘোষণা করেছে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধসংক্রান্ত উপজেলা কমিটি। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ লকডাউন কার্যকর থাকবে বলে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

নোয়াখালী জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি মোকাবিলায় শরিবার ভোর ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত লকডাউন বজায় থাকবে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়ায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার পশ্চিম শিয়ালদি গ্রামের ১০টি বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন।

চুয়াডাঙ্গা জেলাকে একপ্রকার লকডাউন করা হয়েছে। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার এ ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার সঙ্গে অন্য জেলার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দিনাজপুরে স্বেচ্ছায় লকডাউনের এলাকা বাড়ছেই। তবে প্রয়োজনে কেউ প্রবেশ করলে এবং বের হয়ে ফিরলে হাত ধুয়ে ও জীবাণুনাশক প্রয়োগের পর মিলছে অনুমতি।

গাইবান্ধা থেকে বাড়ি ফেরা নাটোরের নলডাঙ্গায় এক শিক্ষিকার বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। শুক্রবার ভোরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নিজ বাড়ি এলে খবর পেয়ে দুপুরে নলডাঙ্গা থানা পুলিশ ওই শিক্ষিকার বাড়িতে লাল পতাকা ঝুলিয়ে ১৪ দিনের লকডাউন করেন।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিজ উদ্যোগে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া গ্রামকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য জালাল মিয়া আখনজী গ্রামের রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে লকডাউন ঘোষণা করেন।

করোনা আক্রান্ত হয়ে আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মারা যাওয়ায় আমতলী উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টায় বরগুনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।

পোশাকশিল্প কারখানা ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। সরকারি ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের সব পোশাক কারখানা আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।

গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছেন বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান এমপি ও বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক। যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হ?য়ে?ছে, মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের ছুটির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএর সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহ আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে বেতন দেওয়ার জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের অফিস খোলা রাখার প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রে নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশন এবং শিল্প পুলিশকে জানাতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত : দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সাধারণ ছুটি বৃদ্ধি করে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত করেছে সরকার। সে হিসেবে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের গতকাল এ তথ্য জানান।

এর আগে ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ১৮ মার্চ থেকে সারা দেশের সব পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। পরে সাধারণ ছুটি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটিও। দ্বিতীয় দফায় ১১ এপ্রিল ও তৃতীয় দফায় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল সরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর