শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

লাশের মিছিল লাখ ছাড়াল

ভয়াবহ বিপর্যয়ে যুক্তরাষ্ট্র, নিউইয়র্কে গণকবর ইতালিতে প্রাণ গেল শতাধিক চিকিৎসকের

প্রতিদিন ডেস্ক

লাশের মিছিল লাখ ছাড়াল

বৈশ্বিক মহামারী করোনায় বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। গতকালের খবর অনুযায়ী, লাশ এবং মৃত্যুর এ সংখ্যা অনবরত বাড়ছিল। ভাইরাসে সবচেয়ে বিপর্যয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির অঙ্গরাজ্য নিউইয়র্ক আক্রান্তের দিক থেকে ছাড়িয়ে যায় বিশ্বের সব দেশকে। এ দিন পর্যন্ত বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৬ লাখ ২৫ হাজার।

এ ছাড়া আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, সৌদি রাজপরিবারে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় রাজপ্রাসাদ থেকে পালিয়েছেন সৌদি বাদশা ও যুবরাজসহ অনেকে। অন্যদিকে চীনের যে উহানে এ ভাইরাসের মহামারী শুরু হয়েছিল সেখানে আর মৃত্যু এবং আক্রান্ত না হওয়ায় লকডাউনসহ সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর শুরু হয়েছে অন্য রকম জীবন। সবশেষ খবর অনুযায়ী, উহানের তরুণ-তরুণীরা মেতে ছিলেন বিয়ের মহোৎসবে। এ ছাড়া গতকাল ব্রিটেনের স্থানীয় সময় গতকাল রাতে সেন্ট থমাস হাসপাতালের আইসিইউ থেকে মুক্তি দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। অনেকটা সুস্থ হওয়ায় তাকে বেডে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বুধবারে করোনায় মৃত্যু : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত বুধবার পর্যন্ত বিশ্বে মোট মারা যান ৯৫ হাজার ৬৯২ জন, আক্রান্ত ছিলেন ১৬ লাখ ৩ হাজার ৬৫২ জন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু ছিল মোট ১৬ হাজার ৬৯১ জন ও আক্রান্ত ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৬ জন; ইতালিতে মৃত্যু ১৮ হাজার ২৭৯ জন ও আক্রান্ত ১ লাখ ৪৩ ৬২৬ জন; স্পেনে মৃত্যু ১৫ হাজার ৪৪৭ জন ও আক্রান্ত ১ লাখ ৫৩ হাজার ২২২জন; ফ্রান্সে মৃত্যু ১২ হাজার ২১০ জন ও আক্রান্ত ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৪৯ জন; যুক্তরাজ্যে মৃত্যু ৭ হাজার ৯৭৮ জন ও আক্রান্ত ৬৫ হাজার ৭৭ জন। এ ছাড়া বুধবারে ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে মারা যান ১ হাজার ৯৩৯ জন, ফ্রান্সে ১ হাজার ৩৪১, যুক্তরাষ্ট্রে ৮৮১, স্পেনে ৬৫৫, ইতালিতে ৬১০ জন। পাশাপাশি এ সময়ে করোনার উৎপত্তির দেশ চীনে মারা যান মাত্র ২ জন এবং আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৩ জন।

আক্রান্তে সব দেশকেও ছাড়াল নিউইয়র্ক : মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক। এক নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পৃথিবীর অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি। শুধু গতকাল দুপুর পর্যন্ত আরও ১০ হাজার কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। ওই সময় পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৩৭। এদিকে ড্রোন ক্যামেরায় তোলা নিউইয়র্কের ১৫০ বছরের পুরনো সমাধিক্ষেত্রের ছবি প্রকাশ করেছে রয়টার্স। তাতে দেখা গেছে, অঙ্গরাজ্যের বেওয়ারিশ ও সমাধি ব্যবস্থা করতে অক্ষম পরিবারে মৃত ব্যক্তিদের শেষ ঠিকানা হয় ব্রোঞ্জের হার্ট ল্যান্ড সমাধিক্ষেত্রে। গতকালই সেখানে ৪০ জনকে কবরস্থ করা হয়।

নিউইয়র্কে ভেন্টিলেশনে থাকা ৮০ শতাংশ রোগীরই মৃত্যু : মহামারী করোনাভাইরাসে শুধু নিউইয়র্কেই মারা গেছেন প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মানুষ। ক্রমাগত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। তবে এবার নিউইয়র্কের চিকিৎসকরা দিয়েছেন আরও ভয়ঙ্কর তথ্য। তারা বলছেন, হাসপাতালের আইসিইউতে ভেন্টিলেশনে থাকা রোগীদের ৮০ শতাংশই মৃত্যুবরণ করেছে। এখন তারা চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ভেন্টিলেটর ছাড়া অন্য উপায় খুঁজছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাধারণত শ্বাসকষ্টজনিত রোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ভেন্টিলেটর ব্যবহৃত হয়। আশঙ্কাজনক রোগীদের মধ্যে ভেন্টিলেশনে থাকা প্রায় ৪০  থেকে ৫০ শতাংশ মারা যায়। কিন্তু ভয়াবহ চিত্র হলো এই যে, নিউইয়র্কে ভেন্টিলেটর লাগানো হয়েছে এমন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৮০ শতাংশই শেষ পর্যন্ত মারা গেছেন।

ইতালিতে শতাধিক চিকিৎসকের প্রাণ কেড়েছে করোনা : গত এক মাসে করোনার কারণে ইতালি যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানকার চিকিৎসকরা। ইতালির একটি হেলথ অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে সেখানে এখন পর্যন্ত শতাধিক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।

সৌদি রাজপরিবারের সবাই আক্রান্ত, প্রাসাদ ছাড়লেন বাদশাহ-যুবরাজ : নভেল করোনাভাইরাসের থাবায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে সৌদি আরবের রাজপরিবার। এরই মধ্যে রাজপরিবারের দেড় শতাধিক সদস্য প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ অবস্থায় ভাইরাসের কবল থেকে বাঁচতে প্রাসাদ ছেড়ে পালিয়েছেন সৌদি বাদশা ও যুবরাজ। নিউইয়র্ক টাইমসের খবর অনুযায়ী, মহামারী করোনাভাইরাসের আতঙ্কে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে জেদ্দায় নতুন ভবনে চলে গেছেন ৮৪ বছর বয়সী সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। বর্তমানে তিনি লোহিত সাগর উপকূলীয় শহরটির কাছে একটি আইল্যান্ড প্যালেসে অবস্থান করছেন। এ ছাড়া ৩৪ বছর বয়সী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও জেদ্দার এক প্রত্যন্ত এলাকায় চলে গেছেন। এদিকে সৌদি রাজপরিবারের যে দেড় শতাধিক সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সম্প্রতি ইউরোপ ভ্রমণ করেছিলেন বলে জানা গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন রাজপরিবারের শীর্ষ সদস্য রিয়াদের গভর্নর প্রিন্স ফয়সাল বিন বান্দর বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ। তিনি এখন নিবিড় পরিচর্যা  কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন।

স্পেনে ১৫ মিনিট পর পর লাশের গাড়ি :  ‘স্পেনের বিখ্যাত মাদ্রিদ শহর। লা আলমুদেনা সিমেট্রি, অর্থাৎ কবরস্থান। ১৫ মিনিটের ব্যবধান। একটা করে শববাহী গাড়ি এসে দাঁড়াচ্ছে। কফিন নামিয়ে আবার চলে যাচ্ছে। আবার আসছে। একজন ক্যাথলিক পাদ্রি, ফাদার এডৌর, বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন। বাইরে পাঁচ কি ছয়জন মানুষ। যাদের কাছের কেউ একজন করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। গাড়ি থেকে বের হলো একটা কফিন। দূরে দূরে দাঁড়িয়ে পড়লেন সবাই। হাতে গ্লাভস। মুখে মাস্ক। পাঁচ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হলো প্রার্থনা পর্ব। নেই কোনো স্মৃতিচারণের দুই?চার কথা, নেই মালা পরানো। ভালো করে গুডবাই বলারও ফুরসত নেই। সবটা শেষ। কফিন অগুনতি। আর পৃথিবীর মাটি সীমিত। মাটির তলায়  পোঁতার জায়গা শেষ হতে চলল। তাই নিয়ম বদলে ফেলল ইউরোপ। ক্যাথলিকদেরও পোড়াতে হবে দেহ। চুল্লির চিমনি থেকে আগুনের কালো ধোঁয়া যেন বিরতিই নিচ্ছে না।’ এভাবেই বর্ণনা করেছেন ফাদার এডৌরে। তিনি গতকাল আরও বলেন, ‘শুনতে অদ্ভুত লাগবে। আমি ভাগ্যবান। এই সময়ে মানুষের জন্য কিছু করতে পারছি। এ যে বড় প্রাপ্তি। তাই ভয় নেই। তবে হ্যাঁ, রোজ এত মৃত্যু দেখে মাঝে মাঝে কান্না পায়। মৃতের পরিবারকে বলি, তারা একা নন, আমি তাদের পাশে আছি।’ আরেকজন ব্যক্তি ফিলিক্স পোভেদা। তিনি বলছিলেন, তার থেকেই তার মায়ের ও ভাইয়ের করোনা সংক্রমণ হয়। ৭৭ বছরের মাকে বাঁচানো গেল না। শেষ যাত্রাতেও দূর থেকে হাত নাড়তে হলো। তিনি বুঝতে পারেন, দূরত্ব কেন প্রয়োজন। কিন্তু তার বুঝতে পারাটা তো আর তার অন্তরটাকে শান্ত করতে পারেনি। তিনি চান, সব যেদিন ঠিক হয়ে যাবে, সেদিন মায়ের জন্য একটা স্মরণসভার আয়োজন করবেন। কিন্তু তিনি জানেন না, সেই দিনটা আদৌ আসবে কিনা। এলে কবে আসবে। 

করোনার থাবা গহিন অ্যামাজনেও : বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কালো থাবা থেকে নিস্তার পায়নি আধুনিক বিশ্বের বড় কোনো দেশই। এবার করোনার প্রকোপ হানা দিয়েছে পৃথিবীর ফুসফুসখ্যাত অ্যামাজন বনাঞ্চলেও। ব্রাজিল গত বুধবার জানিয়েছে, অ্যামাজনের নিভৃতচারী ও জনবিচ্ছিন্ন ইয়ানোমামি আদিবাসী গোষ্ঠীর কারও মধ্যে এই প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ইয়ানোমামি গোষ্ঠী বরারবই বিদেশি রোগের বিরুদ্ধে নাজুক বলেই পরিচিত।

ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী লুইজ হেনরিক ম্যানডেট্টা এক সংবাদ সম্মেলেন বলেন, ‘আমরা আজ ইয়ানোমামি গোষ্ঠীর মধ্যে একজনকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত করেছি, যা খুবই চিন্তার বিষয়।’ এএফপি জানায়, বহির্বিশ্ব থেকে প্রায় একেবারেই বিচ্ছিন্ন ইয়ানোমামি আদিবাসীরা। তবুও রেহাই মিলল না করোনার কাছ থেকে। জানা গেছে, ১৫ বছর বয়সী এক ইয়ানোমামি আদিবাসী কিশোর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী লুইজ হেনরিক ম্যানডেট্টা এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আদিবাসীদের করোনা নিয়ে সচেতন করতে হবে, কারণ অ্যামাজনের আদিবাসীদের মধ্যে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে তার ফল সুদূরপ্রসারী হতে পারে। তাই আদিবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো খুবই প্রয়োজন। তা না হলে, গোষ্ঠী সংক্রমণ এড়ানো যাবে না। অন্যদিকে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ও গ্লোবো জানিয়েছে, অ্যামাজনের আদিবাসীদের মধ্যে মোট সাতজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। কিছুদিন আগে কোকামা আদিবাসী গোষ্ঠীর ২০ বছরের এক তরুণীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। ওই তরুণী একজন স্বাস্থ্যকর্মী। তিনি যে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে কাজ করতেন, তার শরীরে প্রথমে করোনার সংক্রমণ হয়েছিল। ওই চিকিৎসকের শরীর  থেকেই আরও বেশ কয়েকজন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন।

বতসোয়ানার প্রেসিডেন্টসহ সব এমপি কোয়ারেন্টাইনে : করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকায় দুই সপ্তাহ হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান দেশ বতসোয়ানার সব সংসদ সদস্যকে। এমনকি প্রেসিডেন্ট মকগেতসি মাসিসিও সেই নির্দেশনা মেনে চলছেন। তবে কোয়ারেন্টাইনের আদেশ অমান্য করে বাইরে ঘুরে বেড়ানোয় সুপারভাইজড (নজরদারিতে থাকা) কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যকে। গত বুধবার সংসদ সদস্যদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এক স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ায় তাদের হোম-কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বেশ কয়েকজন এমপি নির্দেশনা অমান্য করে মার্কেট-শপিংমলে ঘুরে বেড়িয়েছেন। এ কারণে তাদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। এ সময় তারা নজরদারিতেও থাকবেন। তবে ঠিক কতজন এমপিকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে তা জানানো হয়নি। বতসোয়ানায় এ পর্যন্ত ১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছেন একজন।

আইসিইউ থেকে ফিরলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী : সুস্থ হচ্ছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। করোনা আক্রান্ত জনসনকে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে সেন্ট থমাস হাসপাতালের আইসিইউ থেকে বের করে আনা হয়। আপাতত তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা  গেছে। প্রসঙ্গত, দিন তিনেক আগেই করোনা আক্রান্ত ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন তিনি। এরপর চিকিৎসায় তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন তথা ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের তরফে বিব্রতি জারি করে গতকাল জানানো হয়েছে, ‘সন্ধ্যাবেলা প্রধানমন্ত্রীকে আইসিউ থেকে সরিয়ে সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। এখানেই অসুস্থতার প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।’ খবরে প্রকাশ, সাধারণ বেডে ফেরার পরই তিনি তার প্রেমিকাকে ফোন করেন। ৩২ বছরের ক্যারি সাইমন্ডস অন্তঃসত্ত্বা। তিনি জনসনের সংস্পর্শে আসায়, তাকে বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেই হাতে ফোন পেয়ে প্রেমিকাকে ফোন করে তার কুশল সংবাদ নেন বরিস জনসন। প্রেমিকা সুস্থই আছেন খবর পেয়ে খানিকটা নিশ্চিন্ত হন তিনি।

মুক্ত উহানে বিয়ের ধুম : নভেল করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় থেমে আছে পৃথিবী। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বহু দেশ লকডাউনে। তবে করোনার জন্মভূমি চীনের উহান রাজ্য থেকে লকডাউন উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর এতেই যেন সেখানে উৎসব লেগে গেছে। সেখানে এবার বিয়ের ধুম পড়েছে। টানা দুই মাস লকডাউন থাকার পর উহান কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাহার করেছে। এর পরই শহরটিতে লেগেছে বিয়ের ধুম। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, টানা দুই মাসের অবরুদ্ধ দশা কাটার পর উহানের যেসব জুটি প্রাণে বেঁচে গেছে তারা বিয়ের কাজটা সেরে ফেলতে চাইছে।

 তাই তো বিয়ের পিঁড়িতে বসে তারা তাদের এই ‘নতুন জীবনকে’ উদযাপন করছে। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক গ্লোবাল টাইমসে এসব নব দম্পতিকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যেমন লকডাউন প্রত্যাহারের পর সেদিনই বিয়ে করেছেন জু লিন। তিনি বলেন, ‘আজ বিশেষ একটি দিন। আমার এবং উহানের জন্য আজ থেকে নতুন এক জীবন শুরু হলো।’

গত শুক্রবার উহানের হুবেই প্রদেশের সরকারি কর্তৃপক্ষ বিয়ের নিবন্ধন পুনরায় চালু করে। কিন্তু লকডাউন থাকায় বিয়ের কাজটা সারতে পারছিল না অনেকে। অবশেষে বুধবার লকডাউন প্রত্যাহার হলে অনেকেই বিয়ের কাজটা সম্পন্ন করতে শুরু করেছে।

উহানে সরকারি নানা অ্যাপ পরিচালনা করে টেক জায়ান্ট আলিবাবার সহযোগী প্রতিষ্ঠান আলি পে। তারা জানিয়েছে, উহানে বিবাহ নিবন্ধনের গতি ৩০০ গুণ বেড়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর