শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

মৃত্যু আক্রান্ত দুটোই বেড়েছে

দেশে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৬ শনাক্ত ৯৪ জন, মোট মৃত্যু ২৭ শনাক্ত ৪২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

মৃত্যু আক্রান্ত দুটোই বেড়েছে

করোনাভাইরাস সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় ছয়জন মারা গেছেন, আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ জন। এ পর্যন্ত দেশে এক দিনে করোনা আক্রান্ত হয়ে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৭ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৪২৪ জন। গত বৃহস্পতিবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১২, মারা গিয়েছিলেন একজন।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান। বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) সানিয়া তাহমিনা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১৮৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭ হাজার ৩৫৯টি।

ডা. মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, মৃত ছয়জনের মধ্যে পুরুষ পাঁচজন এবং নারী একজন। ৩০-৪০ বছরের মধ্যে দুজন, ৫০-৬০ বছরের মধ্যে দুজন, ৭০-৮০ বছরের মধ্যে একজন এবং ৯০ বছর বয়সী একজন। তার মধ্যে তিনজন ঢাকার, দুজন নারায়ণগঞ্জের এবং একজন পটুয়াখালীর।

করোনা আক্রান্ত ৯৪ জনের মধ্যে ৬৯ জন পুরুষ এবং ২৫ জন নারী। ১০ বছরের নিচে চারজন, ১১-২০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ২১-৩০ বছরের ১২ জন, ৩১-৪০ বছরের ২৯ জন, ৪১-৫০ বছর বয়সী ১৬ জন, ৫১-৬০ বছরের ১৪ জন এবং ষাটোর্ধ্ব ১৩ জন। নতুন শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির মধ্যে ৩৭ জনই ঢাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ীর পাঁচজন। নারায়ণগঞ্জের ১৬ জন। নারায়ণগঞ্জকে বলা হচ্ছে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ‘নতুন এপিসেন্টার’। বাকিরা অন্যান্য জেলার। দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত (কভিড-১৯) প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সানিয়া তহমিনা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ২৯৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হলেও পরীক্ষা হয়েছে ১ হাজার ১৮৪টি। আগের দিনের তুলনায় নমুনা সংগ্রহ ৩১ শতাংশ বেড়েছে। ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা বেড়েছে ১৮ শতাংশ। এই সময়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ১ লাখ ২০ হাজার ৬৬০টি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সংগ্রহ করা হয়েছে, ৪১ হাজার ৫০০টি বিতরণ হয়েছে এবং ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭২টি পিপিই মজুদ রয়েছে। মোট ১২ হাজার ৬০১ জন এখন হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন জানিয়ে সানিয়া তাহমিনা বলেন, ‘আমাদের যে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের সক্ষমতা, তা আগের চেয়ে বেড়েছে। সারা দেশে সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৪৭০টি প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা তৎক্ষণাৎ কোয়ারেন্টাইনের সেবা প্রদান করতে পারব ২৪ হাজার ৪৯২ জনকে।’ গত ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হওয়া তিনজন রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ১৪ মার্চ দুজন, ১৬ মার্চ তিনজন, ১৭ মার্চ দুজন, ১৮ মার্চ চারজন আক্রান্ত, মৃত একজন। ১৯ মার্চ তিনজন আক্রান্ত, ২০ মার্চ তিনজন, ২১ মার্চ চারজন আক্রান্ত, মৃত একজন। ২২ মার্চ তিনজন, ২৩ মার্চ ছয়জন আক্রান্ত, মৃত একজন। ২৪ মার্চ ছয়জন আক্রান্ত, মৃত একজন। ২৫ মার্চ মৃত একজন। ২৬ মার্চ পাঁচজন আক্রান্ত, ২৭ মার্চ চারজন আক্রান্ত, ৩০ মার্চ একজন আক্রান্ত, ৩১ মার্চ দুজন আক্রান্ত, ১ এপ্রিল আক্রান্ত তিনজন, মৃত একজন। ২ এপ্রিল দুজন আক্রান্ত, ৩ এপ্রিল পাঁচজন আক্রান্ত, ৪ এপ্রিল নয়জন আক্রান্ত এবং মারা গেছেন দুজন। ৫ এপ্রিল আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ জন, মারা গেছেন একজন। ৬ এপ্রিল আক্রান্ত ৩৫ জন, মারা গেছেন তিনজন। ৭ এপ্রিল আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ জন, মারা গেছেন পাঁচজন। ৮ এপ্রিল আক্রান্ত ৫৪ জন, মারা গেছেন তিনজন। ৯ এপ্রিল আক্রান্ত হয়েছেন ১১২ জন, মারা গেছেন একজন। গতকাল আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ জন, মারা গেছেন ছয়জন। দেশে করোনা সংক্রমণ ঘটার পরে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা।

কেরানীগঞ্জে আক্রান্ত বেড়ে ১৪ :  ঢাকার কেরানীগঞ্জে আরও তিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ায় সেখানে ছয়দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ জনে দাঁড়ালো। গতরাত ৮টায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর মোবারক হোসেন এ তথ্য জানান।

সর্বশেষ খবর